বীমা শিক্ষার জন্য কোম্পানিগুলোকেই অর্থায়ন করতে হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক:  বীমা শিক্ষার জন্য এ খাতের কোম্পানিগুলোকেই অর্থায়ন করতে হবে। অন্যথায় বীমা খাতকে ধরে রাখা সম্ভব হবে না। এমনটাই মন্তব্য করেছেন আলোচনা সভার বক্তারা।  তারা বলেন, বীমা খাতের উন্নয়নে দক্ষ জনবলের বিকল্প নেই। ‘বীমা শিল্পে স্বচ্ছতা’ শীর্ষক রচনা প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ উপলক্ষ্যে বিআইপিডি এ সভার আয়োজন করে।

আজ সোমবার (২০ ডিসেম্বর) রাজধানীর মতিঝিলে বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট ফর প্রফেশনাল ডেভেলপমেন্ট (বিআইপিডি) কার্যালয়ে এ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।  প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক কাজী মো. মোরতুজা আলীর সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি হিসেবে অনলাইনে অংশ নেন ড. মোহাম্মদ সোহরাব উদ্দিন একচ্যুয়ারি।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সাধারণ বীমা করপোরেশনের পরিচালক ও বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স প্রফেশনালস সোসাইটি (বিআইপিএস)’র সেক্রেটারি জেনারেল এ কে এম এহসানুল হক, এফসিআইআই; ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির ইন্ডিপেন্ডেন্ট ডাইরেক্টর ও বিআইপিডি’র একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্য দাস দেব প্রসাদ;

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং এন্ড ইন্স্যুরেন্স বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান ও বিআইপিডি’র একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্য অধ্যাপক এম মুজাহিদুল ইসলাম; ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্সের সিইও কাজীম উদ্দিন; কে এম দাস্তুর এন্ড কোম্পানির সিইও মো. আনোয়ার হোসেন, ইন্স্যুরেন্স নিউজ বিডি’র সম্পাদক ও প্রকাশক মোস্তাফিজুর রহমান টুংকু এবং নিটল ইন্স্যুরেন্সের ডিএমডি মনিরুল ইসলাম।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দাস দেব প্রসাদ বলেন, স্বচ্ছতা শুরু হয় শুরু থেকেই। আমাদেরকে দেখতে হবে রিক্রুটমেন্ট কতটা স্বচ্ছ। এখানে অস্বচ্ছতা একটি ট্রেন্ড হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখন ৮১টি কোম্পানিতে আমরা স্বচ্ছ লোক কোথায় পাবো।  তাই আমাদেরকে এখন শুরু থেকেই সবকিছু শুরু করতে হবে এবং নতুন নতুন আইডিয়া নিয়ে আসতে হবে।

তিনি আরো বলেন, বীমা খাতে ম্যানেজমেন্ট এক্সিকিউটিভ তৈরির কোন উদ্যোগ নেই। যা ব্যাংকিং খাতে রয়েছে। বীমা খাতে প্রশিক্ষণের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু এতো ট্রেনিং দিয়েও কাজ হচ্ছে না। ব্যাংকে পড়াশোনা করা হয়, কিন্তু বীমাতে তা হয় না। বীমা পেশায় যারা আছেন তাদের সাধারণ শিক্ষা থাকতে হবে, তবে বীমা শিক্ষা বাধ্যতামূলক।

বীমা খাতকে অপার সম্ভাবনাময় খাত হিসেবে উল্লেখ করে অধ্যাপক এম মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, বীমা খাতে গ্রাহকবান্ধব প্রোডাক্ট আনতে হবে।  একইসঙ্গে প্রয়োজন বীমা বিষয়ে প্রচারণা।  তিনি বলেন, এ খাতের কর্মকর্তাদের দক্ষতা বাড়াতে হবে।  একইসঙ্গে বাড়াতে হবে কর্মকর্তাদের বেতন-ভাতা। যদি সব পর্যায়ে বেতন-ভাতা বাড়ানো যায় তাহলে বীমা খাতেরই উন্নয়ন হবে।

অধ্যাপক এম মুজাহিদ বলেন, বীমা শিক্ষার প্রসারে সরকারকে আরো এগিয়ে আসতে হবে। স্কুলের পাঠ্যসূচিতে বীমাকে অন্তুর্ভুক্ত করতে হবে। তা না হলে এটি আত্মঘাতী হবে। উন্নত দেশের সাথে তাল মেলাতে পারব না আমরা। তিনি বলেন, বীমা শিক্ষার ক্ষেত্রে বীমা কোম্পানিগুলোকেই অর্থায়ন করতে হবে। মেধাবী, শিক্ষিত ও যারা টেকনিক্যালি সাউন্ড তাদেরকে এ খাতে এগিয়ে আসতে হবে।

বীমা বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে কোম্পানিগুলোর মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তাসহ যারা এ বিষয়ে ভালো জানেন তাদেরকে লেখালেখি করার আহবান জানান অধ্যাপক এম মুজাহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, বীমা বিষয়ে অনেক কিছু জানার ও জানানোর আছে। এ বিষয়ে কেস স্টাডি প্রকাশ করতে হবে। যাতে সাধারণ মানুষও জানতে পারে। প্রয়োজনে টিভিতে টকশো’র আয়োজন করতে হবে। ব্যাংকের চেয়ে বীমাতে ইস্যু বেশি রয়েছে।

মোস্তাফিজুর রহমান টুংকু বলেন, বীমা বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে রচনা প্রতিযোগিতার এই আয়োজন সুদূর প্রসারী ভূমিকা রাখবে।  এ ধরনের উদ্যোগকে উৎসাহিত করতে বীমা কোম্পানিগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে।  পাশাপাশি বীমা শিক্ষার প্রসারে বীমা কোম্পানিগুলোর অর্থায়ন অত্যন্ত জরুরি।  তাই শুধুমাত্র সরকারের ওপর নির্ভরশীলতা নয়, ব্যবসার প্রসার ও বীমা সেবা নিশ্চিতকরণে দক্ষ জনবল সৃষ্টিতে বীমা কোম্পানিগুলোর অংশগ্রহণই এ খাতকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।