নিয়ম ভেঙে গৃহঋণ সুবিধা নেয়ার বিষয়ে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়েছেন আবদুল বারেক

নিজস্ব প্রতিবেদক: ইন্স্যুরেন্স নিউজ বিডি’তে গত ২৯ ডিসেম্বর প্রকাশিত ‘নিয়ম ভেঙে গৃহঋণ সুবিধা নিয়েছেন এসবিসি’র বারেক দম্পতি’ শীর্ষক সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়েছেন আবদুল বারেক। সাধারণ বীমা করপোরেশনের প্যাডে আবদুল বারেক স্বাক্ষরিত প্রতিবাদলিপিটি আজ সোমবার পাঠানো হয়েছে।

প্রতিবাদে আবদুল বারেক যা বলেছেন তা পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো:

ক) আইডিআরএ এর তদন্ত কমিটি প্রসঙ্গে: বেনামি চিঠির ভিত্তিতে আমার ও এজিএম জনাব মো. নাজিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের বিষয়ে আইডিআরএ কোন সুপারিশ করেনি। তদন্ত কমিটির তদন্ত চলমান। এ বিষয়ে কোন শুনানীও হয়নি। অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে কোন তদন্ত প্রতিবেদন তৈরী করা বা কারো বিচার করা যায় না। বিষয়টি নিশ্চয়ই আপনার জানা রয়েছে। সুতরাং এক্ষেত্রে সুপারিশ করার অভিযোগও সম্পূর্ণ ভিন্তিহীন ও কাল্পনিক।

খ) গৃহনির্মাণ ঋণ প্রসঙ্গে: কোন কর্মকর্তা-কর্মচারী ইচ্ছা করলেই সংস্থা থেকে গৃহ নির্মাণ ঋণ নিতে পারে না। কেউ উক্ত ঋণের জন্য আবেদন করলে গৃহ নির্মাণ অগ্রিম সেল কর্তৃক উহা যাচাই-বাছাই করা হয়। যাচাই-বাছাই শেষে ঋণ প্রাপ্য হলে তার আবেদনটি ৬ সদস্য বিশিষ্ট বরাদ্দ কমিটির সভায় উত্থাপন করা হয়। বরাদ্দ কমিটি বরাদ্দ নীতিমালা ও দলিল-পত্রাদি পর্যালোচনা করে ঋণ প্রদানের সুপারিশ করে থাকে। সুপারিশ কর্তৃপক্ষের নিকট বিবেচ্য হলে কর্তৃপক্ষ তা অনুমোদন করে থাকে। তাই সুনির্দিষ্ট নীতিমালা অনুসরণ করেই আমার ও জনাব সাহানা গনি’র ঋণ অনুমোদিত হয়েছে। দ্বিতীয়বার ঋণ আবেদনকারীদের পূর্বের ঋণ সমন্বয় করেই প্রাপ্য অবশিষ্ট ঋণ প্রদান করা হয়ে থাকে। বিগত বছরগুলোতে দ্বিতীয়বার আবেদনকারী করপোরেশনের বহু কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সমন্বয় করে ঋণ প্রদান করা হয়েছে। যার বহৃ প্রমাণক করপোরেশনে রয়েছে। আমাকেও একইভাবে ঋণ দেয়া হয়েছে। জনাব সাহানা গণি প্রথমবার আবেদন করায় তার ঋণ সমন্বয় করার প্রশ্ন ওঠে না। সুতরাং ঋণ গ্রহণ বিধি সম্মত হয়নি বা আগের ঋণ পরিশোধ না করে ঋণ সমন্বয় করেছেন -মর্মে রিপোর্ট মনগড়া বক্তব্য বৈ কিছু না। যা বাস্তবতা বহির্ভূত এবং নীতিমালার পরিপন্থী বক্তব্য।

গ) পুলিশ ভেরিফিকেশন ছাড়া নিয়োগ প্রসঙ্গে: ২০১৭ সনের নিয়োগ পুলিশ ভেরিফিকেশন সম্পন্ন করেই করপোরেশনে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে সংস্থার মানবসম্পদ বিভাগে সকল প্রমাণক রয়েছে। ২০২০ সনে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর দেশে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হওয়ায় এবং দীর্ঘদিন অতিবাহিত হয়ে যাওয়ার পরও নির্বাচিতদের পুলিশ ভেরিফিকেশন না আসায় করপোরেশনের পরিচালনা পর্ষদ অসন্তুষ্ট হয় এবং পরবর্তীতে পরিচালনা পর্ষদের ৬১৪তম সভায় ২৫০ টাকার স্ট্যাম্পে প্রার্থীদের অঙ্গীকারনামা নিয়ে নিয়োগ প্রদানের নির্দেশ প্রদান করা হয়। পরবর্তীতে সকল প্রার্থীদের পুলিশ ভেরিফিকেশন যথাসময়ে সম্পন্ন হয়েছে।

উল্লেখ্য যে, সকল নিয়োগ কার্যক্রমে অর্থ মন্ত্রণালয় এবং বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তারা সংশ্লিষ্ট থাকেন। এ ছাড়া সকল নিয়োগ কার্যক্রম, পদোন্নতি ইত্যাদি সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা পর্ষদ কর্তৃক চূড়ান্ত হয়। এখানে এককভাবে কেহ কিছুই করার ক্ষমতা রাখে না। সুতরাং উক্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন, মনগড়া ও কাল্পনিক। যার কোন ভিত্তি নেই।

ঘ) ঢাকা ও সিলেট জোনে বরাদ্দের অতিরিক্ত খরচ প্রসঙ্গে: করপোরেশন মন্ত্রনালয় থেকে বাজেট বরাদ্দ পাওয়ার পর সংস্থার বাজেট বিভাগ কর্তৃক গাড়ী মেরামতসহ অন্যান্য খাতের বাজেট বিভিন্ন বিভাগ ও জোনে বরাদ্দ দেয়া হয়। জোনের ব্যবহারকারী কর্মকর্তাগণ সেই বাজেট অনুসারে গাড়ী মেরামত করে থাকেন। আমি কর্ম জীবনে কখনও বাজেট বিভাগের দায়িতে ছিলাম না। বর্ণিত সময়ে আমি ঢাকা ও সিলেট এর কোন গাড়ীর দায়িত্বেও ছিলাম না। আমি উল্লেখিত জোনের গাড়ী মেরামত বা ব্যবহারও করিনি। সুতরাং এই অভিযোগও কাল্পনিক ও মনগড়া।

ঙ) এজিএম সানোয়ার আলমকে অপেক্ষমান তালিকা থেকে নিয়োগ ও সাতবার পদোন্নতি প্রসঙ্গে: ১৯৯৪ সনে আমি ও জনাব শাহ মো. সানোয়ার আলম করপোরেশনের সহকারী ম্যানেজার পদে আবেদন করি। আমি ১৯৯৪ সনে সরাসরি ওই পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হই। জনাব সানোয়ার ১৯৯৬ সনে অপেক্ষমান তালিকা থেকে যোগদান করেন। ১৯৯৬ সনে অডিট বিভাগে কর্মরত থাকা একজন নতুন সহকারী ম্যানেজার (নিম্নস্বাক্ষরকারী) কিভাবে ওই সময়ে অপরিচিত জনাব সানোয়ারকে অপেক্ষমান তালিকা থেকে সহকারী ম্যানেজার পদে নিয়োগ দেয় বা তার নম্বরে ঘসামাজা করে? করপোরেশনের সার্ভিস রুলস অনুযায়ী করপোরেশনের সহকারী ম্যানাজার থেকে জেনারেল ম্যানেজার পর্যন্ত পদোন্নতি পেতে প্রথম দুই ধাপে (ডেপুটি ম্যানেজার ও ম্যানেজার) ৫ বছর ও সর্বশেষ ২ ধাপে (এজিএম, ডিজিএম) ৩ বছর করে একই পদে থাকতে হয়। জনাব সানোয়ার যথাক্রমে গত ০৩-১২-২০০১ তারিখে ডেপুটি ম্যানেজার, ২৯-০৪-২০০৯ তারিখে ম্যানেজার ও সর্বশেষ ০৭-০৭-২০১৩ তারিখে সহকারী জেনারেল ম্যানেজার পদে পদোনতিপ্রাপ্ত হয়েছেন বলে মানব সম্পদ বিভাগের সূত্রে জানা গিয়েছে। বর্তমানে তিনি এ পদেই বহাল রয়েছেন। অর্থাৎ জনাব সানোয়ার কর্ম জীবনে সর্বমোট ৩ বার পদোন্নতি পেয়েছেন। আমি ২০১৫ সনে এজিএম পদে কর্মরত ছিলাম। তাহলে আমি ওই সময়ে করপোরেশনের নিম্নমধ্যম পর্যায়ের একজন কর্মকর্তা হয়ে কিভাবে নিয়োগ ও পদোন্নতির দায়িত্তপ্রাপ্ত মানবসম্পদ বিভাগ, পদোন্নতি কমিটি, মানবসম্পদ কমিটি ও পরিচালনা পর্যদকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে জনাব সানোয়ারকে ২০১৫, ২০১৬ (এ বছরে চারবার), ২০১৭ ও ২০১৮ সনে সাতবার পদোন্নতি দিলাম? একটি রাষ্ট্রায়ত্ব প্রতিষ্ঠানে ইহা কিভাবে সম্ভব? এ ধরনের মনগড়া ও কল্পনাপ্রসূত তথ্য সম্বলিত রিপোর্ট ইহাই প্রমাণ করে যে, সাধারণ বীমা করপোরেশনে এবং আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করতে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে এ ধরনের রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে।

প্রতিবেদকের বক্তব্য: আইডিআরএ’র তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সংবাদটি প্রকাশ করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনের কোন বিষয়ে আপত্তি থাকলে তা দেখার বিষয় তদন্ত কমিটির। এক্ষেত্রে ইন্স্যুরেন্স নিউজ বিডি’তে প্রকাশিত সংবাদটিকে মিথ্যা আখ্যা দেয়া ভিত্তিহীন।

এ ছাড়াও সংবাদটিতে অভিযুক্ত ব্যক্তির বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে। তাই আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেয়া হয়নি বলে যে অভিযোগ করা হয়েছে তা সঠিক নয়।