বীমা কোম্পানিগুলোর কেন্দ্রীয় ডাটাবেস সংক্রান্ত তথ্য চেয়েছে আইডিআরএ


আবদুর রহমান আবির: বীমা খাত ডিজিটাইজেশনের অংশ হিসেবে দেশের সকল লাইফ ও নন-লাইফ বীমা কোম্পানির কেন্দ্রীয় ডাটাবেস সংক্রান্ত তথ্য চেয়েছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) । কর্তৃপক্ষের নির্ধারিত ছকে আগামী ৭ কার্যদিবসের মধ্যে এ তথ্য পাঠাতে হবে। সোমবার (২৯ আগস্ট) এ সংক্রান্ত একটি চিঠি সরকারি বেসরকারি সকল বীমা কোম্পানিকে পাঠানো হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়েছে, কর্তৃপক্ষের সার্কুলার নং- ৮/২০২১ এর সিদ্ধান্ত (২) মোতাবেক প্রতিটি বীমা প্রতিষ্ঠানে বাধ্যতামূলকভাবে একটি কেন্দ্রীয় ডাটাবেস সহ ইন্টিগ্রেটেড একাউন্টিং সফটওয়্যার, পলিসি ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার ইত্যাদির সমন্বয়ে স্বয়ংসম্পূর্ণ কম্পিউটারাইজড সিস্টেমে কার্যক্রম পরিচালনা ৩০ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখের মধ্যে নিশ্চিত করতে নির্দেশনা প্রদান করা হয়।

কর্তৃপক্ষের উক্ত সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে বীমা প্রতিষ্ঠানসমূহ কি ধরণের সফটওয়্যার ব্যবহার করছে এর তালিকা ও তথ্যাদি নির্ধারিত ছক মোতাবেক কর্তৃপক্ষ বরাবর প্রেরণ করতে হবে। এক্ষেত্রে ছকের সকল কলাম পূরণ করা বাধ্যতামূলক। আগামী ৭ কার্যদিবসের মধ্যে এসব তথ্য পাঠাতে হবে। চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন কর্তৃপক্ষের পরিচালক (গবেষণা ও উন্নয়ন) মো. শাহ আলম।

এর আগে ২০২১ সালের ২৬ এপ্রিল জিএডি সার্কুলার নং ৭/২০২১ জারি করে দেশের লাইফ ও নন-লাইফ বীমা খাতে প্রিমিয়াম সংগ্রহের ক্ষেত্রে গ্রাহককে ই-রিসিপ্ট দেয়া বাধ্যতামূলক করে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) । যা পরবর্তী ১ জুন থেকে কার্যকর হওয়ার কথা ছিল।

তবে বীমা মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স এসোসিয়েশনের দাবির প্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে আইডিআরএ। পরবর্তীতে ধাপে ধাপে বীমা কোম্পানিগুলোর ডিজিটাইজেশন কার্যক্রম এগিয়ে নিয়ে ২০২২ সালের ১ জানুয়ারি থেকে সিদ্ধান্তটি বাস্তবায়নে সার্কুলার নং- ৮/২০২১ জারি করে কর্তৃপক্ষ।

ওই সার্কুলারে বলা হয়, প্রতিটি বীমা প্রতিষ্ঠানে বাধ্যতামূলকভাবে একটি কেন্দ্রীয় ডাটাবেসসহ ইন্টিগ্রেটেড একাউন্টিং সফটওয়্যার, পলিসি ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার ইত্যাদির সমন্বয়ে স্বয়ংসম্পূর্ণ কম্পিউটারাইজড সিস্টেমে কার্যক্রম পরিচালনা ৩০ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখের মধ্যে নিশ্চিত করতে হবে।

রিয়াল টাইম ভিত্তিতে ই-রিসিপ্ট প্রদানের জন্য প্রিমিয়াম রশিদ সংক্রান্ত তথ্য আদান-প্রদানের নিমিত্ত বীমা প্রতিষ্ঠানসমূহের কেন্দ্রীয় কম্পিউটার সিন্টেম এবং কর্তৃপক্ষের ইউনিফাইড মেসেজিং প্ল্যাটফর্ম (ইউএমপি)’র মধ্যে এপ্লিকেশন প্রোগ্রামিং ইন্টারফেস (এপিআই)’র মাধ্যমে সংযোগ স্থাপন এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম আগামী ৩০ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে।

১ জানুয়ারি ২০২২ তারিখ থেকে প্রিমিয়াম রশিদ হিসেবে কাগজে ছাপা রশিদের পাশাপাশি পরীক্ষামূলকভাবে ইউএমপি’র মাধ্যমে প্রস্তুতকৃত ই-রিসিপ্ট (অরিজিনাল রিসিপ্টি বা ওআর, রিনিউয়াল রিসিপ্ট বা আরআর, মানি রিসিপ্ট বা এমআর) প্রদান করতে হবে। লাইফ বীমার ক্ষেত্রে সকল ধরণের প্রদেয় প্রিমিয়াম (প্রথম বর্ষ/ডেফার্ড/নবায়ন) এবং অন্যান্য ফি প্রয়োজনে একাধিক পিআর (প্রোভিশনাল রিসিপ্ট)’র মাধ্যমে সংগ্রহের পর যথাযথ প্রক্রিয়া সম্পাদনপূর্বক ই-রিসিপ্ট এর মাধ্যমে ওআর বা পিআর ইস্যু নিশ্চিত করতে হবে।

১ মার্চ ২০২২ তারিখ থেকে বীমা পলিসি গ্রাহকগণের নিকট হতে গৃহীত প্রিমিয়ামের বিপরীতে কাগজে ছাপা রশিদের পরিবর্তে ইউএমপি সিস্টেম হতে প্রস্তুতকৃত ই-রিসিপ্ট প্রদান নিশ্চিত করতে হবে। তবে, বিশেষ প্রয়োজনে বীমাকারীর প্রচলিত প্রিমিয়াম রশিদ (ওআর/আরআর/এমআর) প্রদান করা যাবে, এক্ষেত্রে বীমাকারীর প্রচলিত প্রিমিয়াম রশিদে ইউএমপি হতে জেনারেটেড প্রিমিয়াম রশিদের লিংকটি অবশ্যই উল্লেখ থাকতে হবে।

এক্ষেত্রে ই-রিসিপ্ট এর জন্য গৃহীতব্য পদক্ষেপসমূহ সম্পর্কে সম্যক ধারণা লাভ এবং বীমাকারীর চাহিদার ভিত্তিতে প্রশিক্ষণ গ্রহণের নিমিত্ত বীমাকারীর আইটি ডিপার্টমেন্ট কর্তৃপক্ষের দপ্তরে উন্নয়ন ও গবেষণা শাখায় যোগাযোগ করতে পারবে।

১ মার্চ ২০২২ তারিখ থেকে নন-লাইফ বীমায় বিশেষ ক্ষেত্রে কাগজে ছাপা মানি রিসিপ্ট (এমআর) প্রদান অত্যাবশ্যকীয় হলে ইস্যুকৃত কাগজে ছাপা মানি রিসিপ্টসমূহের মাসিক বিবরণী নির্ধারিত ছক মোতাবেক পরবর্তী মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে কর্তৃপক্ষ বরাবর প্রেরণ করতে হবে। একইসাথে উক্ত কাগজে ছাপা মানি রিসিপ্টসমূহ ইস্যু করার পরবর্তী কার্যদিবসের মধ্যে মানি রিসিপ্টসমূহের তথ্য ইউএমপি আপলোড করতে হবে।

১ জানুয়ারি ২০২২ হতে বীমা প্রতিষ্ঠানসমূহের বিবিধ আয় যেমন: পুরাতন দলিল-দস্তাবেজ বিক্রয়, পুরাতন/অকেজো গাড়ি বা অন্যান্য সম্পদ এবং ফরমসহ বিবিধ কাগজ-পত্রাদি বিক্রয়ের ক্ষেত্রে এমআর প্রদান না করে এআর (একনলেজমেন্ট রিসিপ্ট) প্রদান করা যেতে পারে।