প্রি-ইন্সপেকশনে পিএমএল ও ইএমএল নির্ণয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়: এ কে এম এহসানুল হক

নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রি-ইন্সপেকশনের বেলায় এস্টিমেটেড ম্যাক্সিমাম লস (ইএমএল) এবং প্রব্যাবল ম্যাক্সিমাম লস (পিএমএল) নির্ণয় একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। প্রস্তাবপত্রে অনেক সময়ই ভুল তথ্য পরিবেশন করা হয়ে থাকে, যা অবলিখকদের জন্য সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায় বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স প্রফেশনালস সোসাইটি (বিআইপিএস) সাধারণ সম্পাদক ও সাধারণ বীমা করপোরেশনের পরিচালক এ কে এম এহসানুল হক, এফসিআইআই।

শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় অনলাইন মাধ্যমে বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট ফর প্রফেশনাল ডেভেলপমেন্ট (বিআইপিডি) এবং বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স প্রফেশনালস সোসাইটি (বিআইপিএস)’র যৌথ উদ্যোগে বীমা খাত উন্নয়নে জরিপকারীদের ভূমিকা বিষয়ে কর্মশালার প্রাক-পরিদর্শন জরিপ বিষয়ে আলোচনায় তিনি এ মন্তব্য করেন। 

এ কে এম এহসানুল হক বলেন, আইডিআরএ’র নিয়ম অনুযায়ী বীমার জন্য পাঁচ কোটি টাকার অধিক সকল সম্পত্তির প্রি-ইন্সপেকশন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। প্রি-ইন্সপেকশনের বেলায় সার্ভেয়ারদের যে সমস্ত দিক বিশেষ যত্ন ও গুরুত্বসহকারে দেখা প্রয়োজন তার মধ্যে হচ্ছে হাউসকিপিং, ইলেকট্রিক্যাল ইনস্টলেশন, অগ্নি নির্ণয় এবং অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা, সম্ভাব্য সর্বোচ্চ ক্ষতির পরিমাণ, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি।

সম্ভাব্য সর্বোচ্চ ক্ষতির পরিমাণ (পিএমএল) এটি একটি রক্ষনশীল পদ্ধতি, যার প্রবর্তক হচ্ছে এসোসিয়েশন অব ব্রিটিশ ইন্স্যুরার (এবিআই)। এই পদ্ধতিতে বিদ্যমান সকল প্রকার অগ্নি নির্ণয় এবং অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা বিবেচনায় নেয়া হয় না। অর্থাৎ এই সমস্ত ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও ধরে নেয়া হয় এদের অস্তিত্ব নেই। এই পদ্ধতিতে একটি সম্পত্তি থেকে অন্য একটি সম্পত্তির ন্যূনতম ব্যবধান ২৫ মিটার হতে হবে।

তিনি বলেন, সার্ভেয়ারকে প্রয়োজনে ঝুঁকি উন্নয়ন সংক্রান্ত সুপারিশ করতে হবে। ফ্যাক্টরিতে স্মোক ডিটেক্টর এবং ফায়ার এলার্ম সিস্টেম স্থাপন, ডিজেলচালিত ফর্ক লিফট এর পরিবর্তে ব্যাটারিচালিত ফরকলিফট এর ব্যবহার ইত্যাদি। এ ব্যাপারে সার্ভেয়ারকে মালিক বা কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলতে হবে এবং ঝুঁকি উন্নয়ন সংক্রান্ত সুপারিশ করতে হবে। শুধু সুপারিশ করাই যথেষ্ট নয়, এর জন্য নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দিতে হবে (যেমন ১৫ থেকে ৩০ দিন)।

সার্ভেয়ারকে নির্ধারিত এবং সুনির্দিষ্ট সময়ের পর দ্বিতীয় সার্ভে করতে হবে এবং রিস্ক ইমপ্রুভমেন্ট রিকমেন্ডেশন পালন করা হয়েছে কিনা তা অরিজিনাল প্রি-ইন্সপেকশন রিপোর্টের সাথে সংযোজন হিসেবে দেখাতে হবে। এ কথা মনে রাখতে হবে যে, প্রি-ইন্সপেকশন রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে বীমা কোম্পানি সাধারণত ঝুঁকি অবলিখন করে থাকে। এই কারণে প্রি-ইন্সপেকশন রিপোর্টে কোন প্রকার ভুল, বিভ্রান্তিমূলক বা মিথ্যা তথ্য পরিবেশন গ্রহণযোগ্য নয়।

তিনি আরো বলেন, এই সব কিছু করতে গেলে শুধু বই পড়লেই চলবে না। আমাদেরকে বাস্তবে মাঠে কাজ করতে হবে। আমরা আমাদের যার যার জায়গা থেকে সঠিকভাবে আমাদের দায়িত্ব পালন করতে পারলে বীমা কোম্পানি, গ্রাহক কেউই কোন প্রকার ক্ষতির মুখে পড়বে না।

এছাড়াও কর্মশালায় মিসেলেনিয়াস ইন্স্যুরেন্স বিষয়ে আলোচনা করবেন খন্দকার কায়েস, প্রোপার্টি ইন্স্যুরেন্স বিষয়ে মো. নাজিম উদ্দিন ও ক্লেইম সার্ভে এন্ড রিপোর্টিং বিষয়ে ইয়াসিন আলী খান, এসিআইআই।