সেবা চালুর পর প্রশিক্ষণ পাবেন কর্মকর্তারা!

বীমা খাতে ৪ ধাপে ই-কেওয়াইসি বাস্তবায়ন করবে আইডিআরএ

নিজস্ব প্রতিবেদক: ডিজিটালাইজেশনে আরেক ধাপ এগিয়ে যাচ্ছে দেশের বীমা খাত। ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ইলেকট্রনিক নো ইয়োর কাস্টমার বা ই-কেওয়াইসি চালুর ১ম ধাপ বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) । এর ফলে বীমা কোম্পানিগুলো খুব সহজেই তাদের গ্রাহকদের পরিচিতি সনাক্ত করতে পারবে।

এই প্রেক্ষিতে ই-কেওয়াইসি বাস্তবায়নের জন্য বীমা কোম্পানিগুলোর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইডিআরএ। ২০২৩ সালের ২ জানুয়ারি বেলা ১২টায় এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচি আয়োজন করা হয়েছে। অর্থাৎ ই-কেওয়াইসি সেবা চালুর একদিন পরে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ পাবেন।

ই-কেওয়াইসি বাস্তবায়নের প্রথম ধাপে সরকারি ও বেসরকারি খাতের ৫টি লাইফ বীমা কোম্পানিকে প্রাথমিকভাবে এই সেবার আওতায় আনা হচ্ছে। কোম্পানিগুলো হলো- সন্ধানী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড, জেনিথ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড, সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড, সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড এবং জীবন বীমা করপোরেশন।

বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) ইস্যু করা বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের এক চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়। চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন কর্তৃপক্ষের পরিচালক (উপসচিব) মো. শাহ আলম। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, বিআইএ, বিআইএফসহ সংশ্লিষ্ট বীমা কোম্পানিগুলোকে এ চিঠি পাঠানো হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়েছে, ই-কেওয়াইসি সার্ভিসটি বাস্তবায়নে এরইমধ্যে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের সাথে সংযোগ স্থাপন ও পরীক্ষামূলকভাবে পরিচয়পত্র যাচাইসহ প্রয়োজনীয় সকল কার্যাদি সম্পন্ন করা হয়েছে। তবে বীমা খাতের সার্বিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নিয়ে ৪টি ধাপে পূর্ণাঙ্গরূপে ই-কেওয়াইসি বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে আইডিআরএ।

আইডিআরএ বলছে, ১ম ধাপে বীমা প্রতিষ্ঠানগুলোকে ই-কেওয়াইসি সিস্টেমে লগ-ইন করে বীমা গ্রাহকের জাতীয় পরিচয় পত্রের নম্বর ও জন্ম তারিখ প্রদানের মাধ্যমে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের ডাটাবেস থেকে বীমা গ্রাহকের নাম- বাংলা ও ইংরেজি, পিতার নাম, মাতার নাম, স্বামী/স্ত্রীর নাম, জন্ম তারিখ, বর্তমান ঠিকানা, স্থায়ী ঠিকানা, লিঙ্গ, পেশা এবং ছবি এই ১০টি তথ্য সংগ্রহ অর্থাৎ জাতীয় পরিচয়পত্র যাচাই সুবিধা প্রদান করা হবে।

২য় ধাপে ই-কেওয়াইসি সার্ভিসের মাধ্যমে বিএফআইইউ সার্কুলার লেটার নং-০৪/২০১৭; তারিখ- ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৭ মূলে জারীকৃত ইউনিফরম কেওয়াইসি প্রোফাইল ফরম এ স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের ভাটাবেস থেকে বীমা গ্রাহকের লভ্য তথ্যাদি ইলেকট্রনিকভাবে বীমা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সরবরাহের সুবিধা প্রদানের লক্ষ্যে বীমা প্রতিষ্ঠানসমূহের সাথে এপিআই সংযোগ স্থাপন এবং তথ্যাদি সরবরাহ করা হবে।

৩য় ধাপে বীমা এজেন্ট কর্তৃক সরাসরি পলিসি গ্রহণে ইচ্ছুক বীমা গ্রাহকের তথ্যাদি স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের ডাটাবেস থেকে সংগ্রহ ও যাচাইপূর্বক ইউনিফরম কেওয়াইসি প্রোফাইল ফরম এ সন্নিবেশ করে বীমা প্রতিষ্ঠানসমূহের সিস্টেমে প্রেরণের নিমিত্ত বীমা গ্রাহকের জাতীয় পরিচয় পত্রের ফ্রন্ট ও ব্যাক স্ক্যান করে জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর ও জন্ম তারিখ সংগ্রহের জন্য ওসিআর, বায়োমেট্রিক, লাইভলিনেস ইত্যাদি প্রযুক্তি ই-কেওয়াইসি সার্ভিসে সন্নিবেশ করে এসংক্রান্ত একটি মোবাইল অ্যাপ চালু করার মাধ্যমে বীমা খাতে পূর্ণাঙ্গ ই-কেওয়াইসি সার্ভিস চালু করা হবে।

৪র্থ ধাপে সকল বীমা প্রতিষ্ঠানকে বিএফআইইউ থেকে জারীকৃত ই-কেওয়াইসি সংক্রান্ত নির্দেশনা অনুযায়ী ডিজিটালি কাস্টমার অন বোর্ড করা এবং অনলাইনে পলিসি খোলার সুবিধা প্রদানের লক্ষ্যে ই-কেওয়াইসি সার্ভিসটিতে বীমা এজেন্ট কর্তৃক পূরণীয় বীমা গ্রাহকের সকল প্রয়োজনীয় তথ্যাদী অর্থাৎ বীমা প্রস্তাব ফর্ম ইলেকট্রনিক করে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বীমা প্রতিষ্ঠানের ডাটাবেসে প্রেরণের জন্য ই-প্রোপোজাল সার্ভিস বাস্তবায়ন করা এবং বীমা প্রতিষ্ঠানের চাহিদার ভিত্তিতে ই-কেওয়াইসি সার্ভিসের সাথে ই-প্রোপোজাল সার্ভিস চালু করা হবে।