হিসাব সমাপনী ২০২২

অতিরিক্ত ব্যয় নেই ১৫ লাইফ বীমা কোম্পানির, খরচ কমেছে ৩৫৪ কোটি টাকা

আবদুর রহমান আবির: সর্বশেষ হিসাব সমাপনী বছর ২০২২ সালে দেশের বেসরকারি ১৫টি লাইফ বীমা কোম্পানি ব্যবস্থাপনা খাতে অনুমোদিত ব্যয়সীমার চেয়ে কম খরচ করেছে। কোম্পানিগুলোর এই কম খরচের পরিমাণ ৩৫৩ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। কম খরচ করা কোম্পানিগুলোর মধ্যে ১০টি পুরনো এবং ৫টি নতুন অনুমোদন পাওয়া লাইফ বীমা প্রতিষ্ঠান।

এর আগে ২০২১ সালে ১৫টি লাইফ বীমা কোম্পানি ৩৪৭ কোটি ৪ লাখ টাকা কম খরচ করেছিল।

খাত সংশ্লিষ্টদের মতে, আইন মেনে ব্যবসা করায় কিছু কোম্পানির ব্যবস্থাপনা খরচ আগে থেকেই কম ছিল। এ ছাড়াও ২০১৮ সালে অতিরিক্ত ব্যয় পুনর্ভরণের অঙ্গীকার করার পর বেশ কিছু কোম্পানি তাদের ব্যবস্থাপনা খরচ অনুমোদিত সীমার নিচে নামিয়ে এনেছে।

সবশেষ ২০২১ সালের ২৭ মে দেশের লাইফ বীমা খাতে ব্যবস্থাপনা ব্যয় নিয়ন্ত্রণে কোম্পানিগুলোর মাঠ পর্যায়ের সাংগঠনিক কাঠামো পুনর্বিন্যাসের সিদ্ধান্ত নেয় বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) ।

এতে কোম্পানিগুলোর সুপারভাইজরি লেভেলে ৫টি গ্রেডের পরিবর্তে ৩টি গ্রেড রাখার নির্দেশ দেয়া হয়। একইসঙ্গে এই তিন গ্রেডের জন্য বেতন-ভাতা, কমিশন, বোনাস ও যাতায়াতসহ সর্বোচ্চ ১৮ শতাংশ খরচের বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়।

তথ্য অনুসারে, ২০২২ সালে ১৪টি লাইফ বীমা কোম্পানির ব্যবস্থাপনা খাতে ব্যয়ের অনুমোদন ছিল ৩ হাজার ১৩০ কোটি ২৪ লাখ টাকা। তবে কোম্পানিগুলোর প্রকৃত ব্যয় হয়েছে ২ হাজার ৭৭৭ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। অর্থাৎ ৩৫২ কোটি ২৯ লাখ টাকা কম খরচ করেছে।

২০২২ সালে সবচেয়ে কম খরচ করেছে নতুন প্রজন্মের বীমা প্রতিষ্ঠান সোনালী লাইফ। কোম্পানিটি অনুমোদিত ব্যয় সীমার চেয়ে ১২৪ কোটি ৪১ লাখ টাকা কম খরচ করেছে। কম খরচের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ন্যাশনাল লাইফ। কোম্পানিটি ব্যয় সীমার থেকে ১০৩ কোটি ৮৬ লাখ টাকা কম খরচ করেছে।

পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্স ২০২২ সালে ব্যয় সীমার চেয়ে ২৭ কোটি ৮০ লাখ টাকা কম খরচ করেছে। কম খরচের দিক থেকে কোম্পানিটির অবস্থান তৃতীয়। চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে মেটলাইফ, কোম্পানিটি ব্যয় সীমার চেয়ে ২১ কোটি ১০ লাখ টাকা কম খরচ করেছে।

এ ছাড়াও ২০২২ সালে ব্যবস্থাপনা ব্যয় খাতে ২০ কোটি ১৯ লাখ টাকা কম খরচ করেছে ডেল্টা লাইফ। গার্ডিয়ান লাইফ ব্যয় সীমার চেয়ে কম খরচ করেছে ১৯ কোটি ৫৭ লাখ টাকা।

এর পরে রয়েছে আলফা ইসলামী লাইফ, কোম্পানিটি ব্যয় সীমার চেয়ে ১৪ কোটি ১৯ লাখ টাকা কম খরচ করেছে। প্রগতি লাইফ ব্যয় সীমার চেয়ে কম খরচ করেছে ৯ কোটি ৬৭ লাখ টাকা।

প্রাইম ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স ২০২২ সালে ব্যবস্থাপনা খাতে ব্যয় সীমার চেয়ে ৫ কোটি ৯২ লাখ টাকা কম খরচ করেছে। সন্ধানী লাইফ ইন্স্যুরেন্স ২ কোটি ৬০ লাখ টাকা কম খরচ করেছে।

রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স ব্যবস্থাপনা খাতে কম খরচ করেছে ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা। ট্রাস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স এ খাতে কম খরচ করেছে ১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। আর মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কম খরচ করেছে ১ কোটি ৩২ লাখ টাকা।

কম খরচের তালিকায় থাকা চার্টার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স ব্যবস্থাপনা খাতে ব্যয় কম করেছে ১৫ লাখ টাকা এবং হোমল্যান্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স ব্যয় কম করেছে ৩ লাখ টাকা।