দেশে বীমা সুরক্ষার ঘাটতি ২১২৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার: আইডিআরএ চেয়ারম্যান

নিজস্ব প্রতিবেদক: বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)’র চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জয়নুল বারী জানিয়েছেন, বাংলাদেশে বীমা সুরক্ষার ঘাটতি ২১২৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার; যা দেশের জিডিপি’র ৭ গুণেরও বেশি। এর মধ্যে লাইফ বীমার সুরক্ষা ঘাটতি ২১১৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং নন-লাইফ বীমার সুরক্ষা ঘাটতি ১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

সোমবার (৮ মে) রাজধানীর শেরাটন হোটেলে আয়োজিত একটি আন্তর্জাতিক সেমিনারে তিনি এ তথ্য দেন। বাংলাদেশের বীমা খাতের উন্নয়নে বিআইএ ও বিমটেক যৌথভাবে এ সেমিনার আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ।

উল্লেখ্য, বীমা সুরক্ষার ঘাটতি বলতে বুঝায়- যে পরিমাণ উল্লেখযোগ্য ক্ষয়ক্ষতি বীমা দ্বারা কভার করা হয় না। অর্থাৎ বীমার আওতার বাইরে থাকা উল্লেখযোগ্য ক্ষয়ক্ষতি পরিমাণই বীমা সুরক্ষা ঘাটতি। এটি মূলত বাংলাদেশের বীমা কোম্পানিগুলোর বাজারের সম্ভাবনাকেও চিত্রিত করে।

আইডিআরএ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জয়নুল বারী বলেন, দেশের বীমা খাতের নিম্ন পেনিট্রেশন স্পষ্টভাবে এটাই নির্দেশ করে যে এখানে সুরক্ষা ঘাটতি রয়েছে; তবে এই ঘাটতির পরিমাণ কত তা জানা ছিল না। সম্প্রতি বাংলাদেশ বীমা খাত উন্নয়ন প্রকল্প (বিআইএসডিপি)’র অধীনে একটি গবেষণা পরিচালনা করে এ সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করেছে আন্তর্জাতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ডেলয়েট।

তিনি বলেন, আমরা যদি বাস্তবতার শেকড়ের দিকে তাকাই তাহলে বীমা কোম্পানিগুলোর জন্য মৌলিক চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখতে পাই- প্রয়োজন-ভিত্তিক বীমা পরিকল্পের অভাব এবং বীমা পরিকল্পে বৈচিত্র্যের অনুপস্থিতি। এ ছাড়াও অবিকশিত তাকাফুল এবং ক্ষুদ্রবীমা পরিকল্প, সীমিত অ্যাকচুয়ারিয়াল পরিষেবা, কাস্টমাইজড মূল্যের অনুপস্থিতি, সীমিত বিতরণ চ্যানেল এবং দাবি পরিশোধে বিলম্বকে সাধারণভাবে দেশের বীমা খাতের পেনিট্রেশন বৃদ্ধিতে বাধা হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

মোহাম্মদ জয়নুল বারী বলেন, আমরা যদি আবার চাহিদার দিক থেকে দেখি তাহলে- ঝুঁকি এবং বীমা পরিকল্প সম্পর্কে ভোক্তাদের সচেতনতার অভাব, প্রত্যাশার ঘাটতি, ক্রয়ক্ষমতা এবং দাবি নিষ্পত্তি ও দাবির টাকা পরিশোধ সম্পর্কিত অবিশ্বাস দেশের বীমা খাতের পেনিট্রেশন অনুপাত বৃদ্ধির জন্য উল্লেখযোগ্য বাধা হিসেবে দেখা যায়।

তিনি বলেন, আইডিআরএ বিশ্বাস করে যে এই সুরক্ষা ঘাটতি বা ব্যবধান কমানোর মূল পদক্ষেপ হল বীমা ইকোসিস্টেমের সমস্ত স্টেকহোল্ডার একসাথে কাজ করা। সরকারী হস্তক্ষেপ, গ্রাহককেন্দ্রিক বীমা পরিকল্পের ডিজাইন, ডিজিটাল ইন্টারভেনশন গ্রহণ, কার্যকর বিতরণ চ্যানেল স্থাপন, জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি, দক্ষতা উন্নয়ন এবং বীমা কোম্পানি ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার সক্ষমতা বৃদ্ধি সুরক্ষা ব্যবধান কমাতে সহায়ক কৌশল হতে পারে।