যেমন চলছে হোমল্যান্ড লাইফ

হোমল্যান্ডের নতুন মুখ্য নির্বাহী এ কে দাস, পদত্যাগ করলেন কোম্পানি সেক্রেটারি

নিজস্ব প্রতিবেদক: মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা পদে এ কে দাসকে নিয়োগ দিয়েছে হোমল্যান্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি। গত সোমবার (৪ ডিসেম্বর) তাকে নিয়োগ দেয় কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ। অপরদিকে পদত্যাগ করেছেন বীমা কোম্পানিটির সেক্রেটারি শেখ মোহাম্মদ আলী। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র মতে, গত ৪ ডিসেম্বর হোমল্যান্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় কোম্পানিটির সাবেক মুখ্য নির্বাহী ড. বিশ্বজিৎ কুমার মণ্ডলের দেনা-পাওনা পরিশোধের চেক হস্তান্তর করার জন্য কোম্পানি সেক্রেটারি শেখ মোহাম্মদ আলীকে দায়ী করা হয়।

এ ঘটনায় শেখ মোহাম্মদ আলীকে অপসারণের সিদ্ধান্ত নেয় হোমল্যান্ড লাইফ। পরে এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে বীমা কোম্পানিটি। এর পরের দিন ৫ ডিসেম্বর কোম্পানিটির চেয়ারম্যানের কাছে পদত্যাগ পত্র জমা দেন শেখ মোহাম্মদ আলী।

তবে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি হোমল্যান্ড লাইফের কোম্পানি সেক্রেটারি শেখ মোহাম্মদ আলী। পদত্যাগ পত্রে তিনি ব্যক্তিগত কারণে পদত্যাগ করছেন বলে উল্লেখ করেন।

সূত্র মতে, গত ৪ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হোমল্যান্ড লাইফের বোর্ড সভা শেষে ড. বিশ্বজিৎ কুমার মন্ডলকে মামলা তুলে নিতে অনুরোধ করেন কোম্পানি সেক্রেটারি শেখ মোহাম্মদ আলী। এ সময় ড. বিশ্বজিৎ কুমার মন্ডল তার মামলা তুলে নিতে শর্ত জুড়ে দেন। এ ঘটনার পরের দিনই শেখ মোহাম্মদ আলী পদত্যাগ করেন।

এ বিষয়ে ড. বিশ্বজিৎ কুমার মন্ডল ইন্স্যুরেন্স নিউজ বিডি’কে বলেন, হোমল্যান্ড লাইফের কোম্পানি সেক্রেটারি শেখ মোহাম্মদ আলী ও কোম্পানির অপর একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা গত ৪ ডিসেম্বর আমার সাথে দেখা করেন। এসময় তারা আমাকে অপসারণ সংক্রান্ত আইডিআরএ’র নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিট মামলা তুলে নেয়ার অনুরোধ করেন। তারা আরো বলেন, মামলা তুলে না নিলে নতুন মুখ্য নির্বাহীকে আইডিআরএ অনুমোদন দিবে না।  

তবে আমি তাদেরকে জানিয়েছি, যদি আইডিআরএ আমার অপসারণ সংক্রান্ত আদেশ প্রত্যাহার করে নেয় তাহলে আমি ওই রিট মামলা তুলে নেব; বলেন ড. বিশ্বজিৎ কুমার মন্ডল।

এর আগে কোম্পানিটির সাবেক এই মুখ্য নির্বাহীর দায়ের করা অপসারণ সংক্রান্ত রিট মামলা তুলে না নিলে তার দেনা-পাওনা পরিশোধ না করা জন্য চাপ সৃষ্টি করেন আইডিআরএ’র এক কর্মকর্তা। যদিও আইডিআরএ’র মুখপাত্র জাহাঙ্গীর আলম গণমাধ্যমের কাছে মামলা তুলে নিতে চাপ সৃষ্টির বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।

সূত্র মতে, গত ২১ সেপ্টেম্বর হোমল্যান্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্সের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা ড. বিশ্বজিৎ কুমার মন্ডলকে অপসারণ করে বীমা খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইডিআরএ। পরে এই আদেশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে তিনি উচ্চ আদালতে রিট মামলা দায়ের করেন। এতে আদালত আইডিআরএ’র দেয়া আদেশ ৩ মাস স্থগিত ঘোষণা করেন।

পরে নিয়োগ চুক্তির শর্ত অনুসারে ৩ মাসের দেনা পাওনা পরিশোধ করে তাকে মুখ্য নির্বাহী পদ থেকে অব্যহতি দেয়া হয়। গত ১৬ অক্টোবর কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের জরুরি সভায় তাকে অব্যাহতির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

তবে এরপরই ড. বিশ্বজিৎ কুমার মন্ডলের দেনা-পাওনা পরিশোধ না করার জন্য আইডিআরএ থেকে হোমল্যান্ড লাইফকে চাপ সৃষ্টি করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।

এদিকে ড. বিশ্বজিৎ কুমার মন্ডলকে মুখ্য নির্বাহীর পদ থেকে অব্যাহতি দেয়ার পর নতুন মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে হোমল্যান্ড লাইফ। এরই ধারাবাহিকতায় গত ৪ ডিসেম্বর এ কে দাসকে মুখ্য নির্বাহী নিয়োগ দেয় হোমল্যান্ড লাইফের পরিচালনা পর্ষদ। 

এ কে দাস হোমল্যান্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স আগে বায়রা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে চাকরি করেছেন। ২০১৬ সালে তিনি বায়রা লাইফ ইন্স্যুরেন্স থেকে বিদায় নেন। এর মাঝে আর কোন বীমা কোম্পানিতে তিনি চাকরি করেননি বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।