এস আলম গ্রুপের মদদপুষ্ট পর্ষদের পদত্যাগ ও চাকরিচ্যুত কর্মকর্তাদের পুনর্বহালের দাবি
নিজস্ব প্রতিবেদক: এস আলম গ্রুপের মদদপুষ্ট পরিচালনা পর্ষদের পদত্যাগ ও চাকরিচ্যুত কর্মকর্তাদের পুনর্বহালের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন প্রাইম ইসলামী লাইফের চাকরিচ্যুত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। রোববার (১৮ আগস্ট) সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে বীমা কোম্পানিটির চাকরিচ্যুত কয়েকশ’ কর্মকর্তা ও কর্মচারী অংশ নেন।
মানববন্ধন কর্মসূচিতে ৬ দফা দাবি উত্থাপন করেন প্রাইম ইসলামী লাইফের আন্দোলনকারী সাবেক এসব কর্মকর্তা ও কর্মচারী। একইসঙ্গে তারা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজধানীর টয়েনবী সার্কুলার রোডে অবস্থিত বীমা কোম্পানিটির প্রধান কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেয়ার কর্মসূচি ঘোষণা করেন। পরে একটি র্যালি নিয়ে তারা প্রাইম ইসলামী লাইফের প্রধান কার্যালয়ের সামনে যান।
প্রাইম ইসলামী লাইফের চাকরিচ্যুত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ৬ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- অনৈতিক, অন্যায় ও অবৈধভাবে জোরপূর্বক চাকরিচ্যুত সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে চাকরিতে পুনর্বহাল করাসহ পূর্বের সকল সুযোগ-সুবিধা ফিরিয়ে দেয়া।
স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার মদদপুষ্ট জবর দখলদার এস আলম গ্রুপের গঠনকৃত বিদ্যমান অবৈধ পরিচালনা পর্ষদের পদত্যাগসহ বহিষ্কার করা এবং তাদের দ্বারা আত্মসাতকৃত কোম্পানির শত শত কোটি টাকা উদ্ধার ও অনিয়ম প্রতিরোধের লক্ষ্যে উদ্যোক্তা পরিচালকদের হাতে কোম্পানি পরিচালনার ক্ষমতা হস্তান্তরে অনতিবিলম্বে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
গ্রাহকের আস্থা পূর্বের ন্যায় ফিরিয়ে আনার জন্য মেয়াদপূর্তির টাকা ও মরনোন্তর বীমা দাবি দ্রুত পরিশোধ করা। দখলদার অবৈধ পরিচালনা পর্ষদ কর্তৃক নিয়োগকৃত সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীকে চাকরিচ্যুত করা।
দুর্নীতিবাজ, অনৈতিক কাজে সহযোগী, অদক্ষ ও অযোগ্য চীফ কনসালটেন্ট অব বোর্ড রহিম-উদ-দৌলা চৌধুরীসহ মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শামসুল আলমকে কোম্পানি থেকে বহিষ্কার করা এবং কোম্পানির শত শত কোটি টাকা অর্থ আত্মসাতকারীদের আইনের আওতায় এনে অর্থ উদ্ধারসহ শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
মানববন্ধন চলাকালে প্রাইম ইসলামী লাইফের চাকরিচ্যুত কর্মকর্তারা বলেন, ২০০০ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে অত্যন্ত সুনামের সাথে ব্যবসা করে দেশের স্বনামধন্য লাইফ বীমা কোম্পানিতে উন্নীত হয়েছিল প্রাইম ইসলামী লাইফ। কিন্তু ২০১৮ সালে স্বৈরাচার হাসিনার দোসর এস আলম গ্রুপ ও তার অনুগত ব্যক্তিদের নিয়ে প্রাইম ইসলামী লাইফ জোরপূর্বক উদ্যোক্তাদের নিকট হতে জবর দখল করে।
বক্তারা বলেন, এই দখলের নেতৃত্ব দেন ইউনিয়ন ব্যাংকের এমডি এ বি এম মোকাম্মেল হক চৌধুরী। তিনি এবং তার নিজস্ব লোক দিয়ে পূর্বের বৈধ পরিচালনা পর্ষদ ভেঙ্গে দিয়ে জোরপূর্বক ও অবৈধভাবে বিদ্যমান পরিচালনা পর্ষদ গঠন করেন। এই দখলদার পর্ষদ কোম্পানির পরিচালনা দায়িত্বভার গ্রহণ করেই কোম্পানির পুরাতন ও অভিজ্ঞ প্রায় ৬শ’ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে অনৈতিক ও অবৈধভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে, এমনকি জীবননাশের হুমকি দিয়ে চাকরিচ্যুত করে এবং অব্যাহতির আবেদনপত্রে ইচ্ছার বিরুদ্ধে স্বাক্ষর প্রদান করতে বাধ্য করে।
আন্দোলনকারী কর্মকর্তারা আরো বলেন, আমরা চাকরি হারিয়ে আজ পরিবার পরিজন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে মানবেতর জীবন যাপন করছি। এই প্রেক্ষাপটে আমরা প্রাইম ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের হারানো গৌরব ও সুনাম পুনরুদ্ধারের জন্য এই অবৈধ দখলদার ও দুনীতির বিরুদ্ধে দ্বিতীয় স্বাধীন বাংলাদেশে বৈষম্য বিরোধী ন্যায় প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আমরা ৬ দফা দাবি উত্থাপন করেছি। আমরা আশা করছি, এসব দাবির বাস্তবায়ন আমরা দেখতে পাবো।