আইন লঙ্ঘন করে ইসলামী ইন্স্যুরেন্সের মুখ্য নির্বাহী আব্দুল খালেক মিয়াকে চাকরির অবসান পত্র

নিজস্ব প্রতিবেদক: আইন অনুসারে আইডিআরএ’র অনুমোদনপ্রাপ্ত কোন মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তাকে কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি ছাড়া চাকরিচ্যুত করা যায় না। এই আইনের কোন তোয়াক্কা না করেই ইসলামী ইন্স্যুরেন্স বাংলাদেশ লিমিটেডের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল খালেক মিয়াকে চাকরি থেকে অবসান করে পত্র দিয়েছে বীমা কোম্পানিটি।

ইসলামী ইন্স্যুরেন্স বাংলাদেশের ভাইস চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত পত্রটি গত ২০ আগস্ট কোম্পানির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল খালেক মিয়াকে পাঠানো হয়। বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)’র কাছে লিখিতভাবে এমন অভিযোগ করেছেন আব্দুল খালেক মিয়া। গত ২১ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) তিনি এই অভিযোগ পত্র দাখিল করেন কর্তৃপক্ষে।

এর আগে ২০ আগস্ট ই-মেইলে পত্র দিয়েও নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইডিআরএ’কে বিষয়টি অবহিত করেন আব্দুল খালেক মিয়া।

বীমা আইন ২০১০ এর ৮০ ধারার ২ উপধারায় বলা হয়েছে- “(২) বীমাকারী কর্তৃক উপ-ধারা (১) এর অধীনে অনুমোদিত কোন মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি ব্যতীত অপসারণ, চাকুরীচ্যুত বা বরখাস্ত করা যাইবে না এবং কর্তৃপক্ষ উক্তরূপ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা এবং বীমাকারী বা এই বিষয়ে তৎকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তির শুনানী গ্রহণ ব্যতীত কোন সিদ্ধান্ত প্রদান করিবে না৷”

অভিযোগ পত্র অনুসারে, ২০২৩ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর আব্দুল খালেক মিয়াকে ইসলামী ইন্স্যুরেন্স বাংলাদেশ লিমিটেডের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা পদে ৩ বছরের জন্য অনুমোদন করে আইডিআরএ। এই অনুমোদন দেয়া হয় ২০২৩ সালের ৭ সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।

তবে মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই আব্দুল খালেক মিয়াকে চাকরি থেকে ইস্তফা দেয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করেন কোম্পানিটির ভাইস চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ।

আব্দুল খালেক মিয়ার অভিযোগ, গত ১৭ আগস্ট কোম্পানির ভাইস-চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ এবং কোম্পানি সেক্রেটারি ও হেড অব এইচআর এডমিন চৌধুরী এহসানুল হক তাকে চাকরি থেকে ইস্তফা দিতে চাপ প্রয়োগ করেন। অপরদিকে শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকায় ওই দিন (১৭ আগস্ট) তিনি ১৫ দিনের ছুটির আবেদন করেন।

আব্দুল খালেক মিয়ার বাসায় গিয়েও কোম্পানিটির ভাইস চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ ও কোম্পানি সেক্রেটারি ও হেড অব এইচআর এডমিন চৌধুরী এহসানুল হকের লোকজন তাকে ইস্তফা দিতে চাপ প্রয়োগ করেন বলে আইডিআরএ’র চিঠিতে উল্লেখ করেন আব্দুল খালেক মিয়া।

আব্দুল খালেক মিয়া ইস্তফা না দেয়ায় গত ২০ আগস্ট তাকে চাকরি থেকে অবসান করে চিঠি ইস্যু করেন ইসলামী ইন্স্যুরেন্স বাংলাদেশ লিমিটেডের ভাইস চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ।

এ বিষয়ে আব্দুল খালেক মিয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের কাছে এমন অভিযোগ দাখিলের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আব্দুল খালেক মিয়া এর আগে সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। দেশের নন-লাইফ বীমা খাতে তার দীর্ঘ প্রায় ৩৫ বছরের চাকরির অভিজ্ঞতা রয়েছে। এ খাতের মুখ্য নির্বাহীদের সংগঠন বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স ফোরামের সেক্রেটারি জেনারেল হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন আব্দুল খালেক মিয়া।