মানুষের আস্থা ফেরাতে নিজেদের সংশোধন করতে হবে: বিআইএ প্রেসিডেন্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক: আইডিআরএ একটি কোম্পানিকে তলব করেছে- এমন একটি নিউজ পড়লাম আজ ইন্স্যুরেন্সনিউজবিডি'তে। আইডিআরএ যখন কোন ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিকে তলব করে সেটা সত্য হোক বা মিথ্যা হোক- তখন মানুষের মধ্যে ওই কোম্পানি সম্পর্কে একটা খারাপ ধারণা তৈরি হয়। এটা কিন্তু আমাদের জন্য ক্ষতিকর। এতে মানুষের আস্থা চলে যায়। মানুষের আস্থা ফেরাতে নিজেদের সংশোধন করতে হবে, নির্বাহীদের উদ্দেশ্যে এমন তাগিদ দিলেন বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স এসোসিয়েশন (বিআইএ)'র প্রেসিডেন্ট শেখ কবির।

দেশের বীমা কোম্পানিতে চাকরিরত এবং অবসরপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ উচ্চ পদস্থ বীমা নির্বাহীদের সমন্বয়ে  গঠিত সংগঠন ইন্সটিটিউট অব ইন্স্যুরেন্স এক্সিকিউটিভস বাংলাদেশ (আইআইইবি)'র অভিষেক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ঢাকা ক্লাবের সিনহা হলে এ অভিষেক অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে সাধারণ বীমা করপোরেশন (এসবিসি)'র ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ শাহরিয়ার আহসানসহ সংগঠনটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

যে দেশের ইন্স্যুরেন্স খাত শক্তিশালী সে দেশের অর্থনীতিও শক্তিশালী উল্লেখ করে বিআইএ'র প্রেসিডেন্ট বলেন,  জিডিপিতে বীমাখাতের অবদান ১ শতাংশের নীচে। এটা দুঃখজনক। একটি দেশের সব কিছুতেই বীমা জড়িত। ব্যাংকের চেয়ে ইন্স্যুরেন্স বেশি জরুরি বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ(আইডিআরএ)'র বর্তমান নেতৃত্বকে কাজের ভালো সহায়ক উল্লেখ করে মূখ্য নির্বাহীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, তাদের সঙ্গে আইডিয়া শেয়ার করেন। তাদেরকে ভালো কাজের জন্য বলুন বা কি করতে হবে তাদেরকে বলুন। বীমাখাতকে এগিয়ে নেয়ার এটাই উপযুক্ত সময়। বীমা পরিবারের সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

আইআইইবি'র সদস্যদের উদ্দেশ্যে কর্ণফুলী ইন্স্যুরেন্স ও মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন আহমদ বলেন, আপনাদের প্রচেষ্টাতেই বীমা শিল্প এগিয়ে যাবে। বর্তমানে বীমা নিয়ে যে নেতিবাচক ধারণা রয়েছে তা আপনাদের মাধ্যমেই দূর হবে। আপনাদের হাত ধরেই উন্নতির দিকে এগিয়ে যাবে বীমাখাত।

তিনি বলেন, বীমা শিল্পে বঙ্গবন্ধু কাজ করেছেন। এ কথা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও বলে থাকেন। তাহলে বীমা শিল্প পিছিয়ে কেন থাকবে। বীমা শিল্পে অনেক বড় বড় লোক কাজ করেছেন, নেতৃত্ব দিয়েছেন। এখন আপনারা এগিয়ে এসেছেন, আপনাদের হাত ধরেই এগিয়ে যাবে বীমা শিল্প।

মূখ্য নির্বাহীদের উদ্দেশ্যে নিজাম উদ্দিন বলেন, বীমা শিল্পকে ঠিক করবেন আপনারা, কোম্পানির কর্মকর্তারা। আপনারা কেন বোর্ডকে বলতে পারবেন না ৭০ শতাংশ কমিশন দিবেন না। সাধারণ মানুষের টাকা এভাবে নষ্ট করবেন না। আপনারা কেন শক্ত হয়ে দাঁড়াতে পারবেন না। কোম্পানিতো আপনাদের ওপরই নির্ভর করে।

ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্সের পরিচালক মোজাফফর হোসেন পল্টু বলেন, আজ আমাদের মধ্যে মানসিকতার দুর্ভিক্ষ চলছে। অন্ন-বস্ত্রের দুর্ভিক্ষ শুরু হলে আমরা আন্তর্জাতিকভাবে সহযোগিতা নিয়ে তা মোকাবেলা করতে পারি। কিন্তু আমার আপনার মাঝে যে মানসিকতার দুর্ভিক্ষ চলছে এটা কিন্তু আমরা আন্তর্জাতিক সাহায্য নিয়ে মোকাবেলা করতে পারব না।

তিনি বলেন, বীমাখাত নিয়ে ছোট ছোট বদনাম আছে, ক্লেইম দেয় না। কিন্তু কেন ক্লেইম দেয় না সেটা দেখে না- সার্ভে রিপোর্টের বিষয়সহ আরো অনেক বিষয় থাকে। আবার যেসব ক্লেইম দেয়া হয় সেগুলো কথাও মানুষ বলে না। বীমাখাতে অশুভ প্রতিযোগিতা আছে উল্লেখ করে সেটা দূর করতে উন্নয়ন কর্মকর্তা থেকে শুরু করে কোম্পানির সর্বোচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের প্রতি আহবান জানান পল্টু।