শতকোটি টাকার বীমা দাবি: মিনিস্টার হাইটেক পার্ক আসলে কিসের কারখানা!
নিজস্ব প্রতিবেদক: দু’বছর আগে ২০১৯ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর আগুনে পুড়ে যায় মিনিস্টার হাইটেক পার্কের গাজীপুরের ধীরাশ্রমের কারখানা। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষতিপূরণ আদায়ে ৪টি বীমা কোম্পানিতে প্রায় শত কোটি টাকার দাবি উত্থাপন করে দেশীয় শিল্প প্রতিষ্ঠান হিসেবে খ্যাত মিনিস্টার। এরমধ্যে কারখানাটির ৬ তলায় গোডাউনে উৎপাদিত ও মজুদকৃত ৫৯ কোটি টাকার এলইডি টিভি আগুনে পুড়ে গেছে বলে দাবি করে কারাখানা কর্তৃপক্ষ।
এ দাবির প্রেক্ষিতে ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণে নিয়োগকৃত জরিপকারীরা ২৪ কোটি টাকার এলইডি টিভির ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণ করে। জরিপ প্রতিবেদনে কারখানাটিকে এলইডি টিভি উৎপাদনকারী কারখানা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। যদিও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)’র তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে কারখানাটি এসি, ফ্রিজ ও রেফ্রিজারেটর উৎপাদনকারী কারখানা হিসেবে মূল্য সংযোজন কর-মূসক অব্যহতি সুবিধা নিয়েছে।
কিন্তু মিনিস্টারের গাজীপুরের ধীরাশ্রম ও ময়মনসিংহের ত্রিশালে অবস্থিত দু’টি কারখানার কোনটিতেই এসি, ফ্রিজ ও রেফ্রিজারেটর উৎপাদনের জন্য অপরিহার্য ১৪টি প্রয়োজনীয় মূলধনী যন্ত্রপাতির একটিরও অস্তিত্ব পায়নি খোদ এনবিআরের মূসক গোয়েন্দা দল।
এমনকি এনবিআরের তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ২০১৮ সালের ১৪ মে পর্যন্ত এসি-রেফ্রিজারেটর উৎপাদনকারী কোন যন্ত্রপাতি আমদানি করার তথ্য নেই কাস্টমসের এসাইকুডা সার্ভারে। এমনকি মিনিস্টার হাইটেক পার্কের কোন কারখানা প্রাঙ্গণে বা অন্যত্র উৎপাদনের উপযোগী কোন মেশিন ছিল না বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
এছাড়া এলইডি টিভি উৎপাদন করা হতো এমন কোন তথ্যও নেই এনবিআরএ’র ওই তদন্ত প্রতিবেদনে। যদিও আমদানি ও অন্যান্য উৎপাদন বিষয়েও পুঙ্খানুপুঙ্খ যাচাই বাছাই করেই এনবিআরএ এ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে বলে দাবি করা হয়েছে ওই প্রতিবেদনে। অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় ৭ কোটি টাকা জরিমানা করে মিনিস্টার হাইটেক পার্কের মালিকদের।
তদন্ত প্রতিবেদন অনুসারে, “২০১৮ সালের ১৬ মে, দুপুর আড়াইটা, মেসার্স মিনিস্টার হাইটেক পার্কের অফিস ও কারখানায় আকস্মিকভাবে অভিযানে যায় মূসক ও শুল্ক গোয়েন্দা ঢাকা (উত্তর) এস.আর.ও এর শর্ত অনুযায়ী নিজস্ব মোল্ড ও ডাইস তৈরীর প্লান্টসহ যে সকল মেশিনারিজ আবশ্যিকভাবে উৎপাদনস্থলে থাকা বাধ্যতামূলক ছিল, সে সকল মেশিনারিজ প্রতিষ্ঠান প্রাঙ্গনে স্থাপিত নেই মর্মে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঢাকা ( উত্তর) মূসক ও শুল্ক গোয়েন্দাদের ৩৩ সদস্যের তিনটি দল একযোগে গাজীপুরের ধীরাশ্রম বিশ্বরোডের মিনিস্টার হাইটেক পার্ক, ময়মনসিংহের ত্রিশালের নারায়ণপুরের মিনিস্টার হাইটেক পার্ক ইলেকট্রনিক্স এবং ঢাকার বনানীর মিনিস্টার হাইটেক পার্কের প্রধান কার্যালয়ে অভিযান পরিচালনা করে। প্রতিষ্ঠানটিতে আকস্মিক পরিদর্শন পরিচালনা করা হলে সংশ্লিষ্ট মেশিনারীসমূহ ফ্যাক্টরী বা উৎপাদনস্থলে নেই মর্মে গোপন সংবাদের সত্যতা সরেজমিনে পরিদর্শনকালে পাওয়া যায়।”
সরেজমিনে পরিদর্শনের তদন্ত প্রতিবেদনে দেখা যায়, “রেফ্রিজারেটর ও এসি উৎপাদনকারী হিসেবে সংশ্লিষ্ট এস.আর.ও সমূহে বর্ণিত যে সকল মেশিনারীজ থাকা স্বাপেক্ষে মিনিস্টার হাইটেক পার্ক-কে আমদানি ও স্থানীয় উতপাদন পর্যায়ে অব্যাহতি সুবিধা প্রদান করা হয়েছে, সে সকল মেশিনারীজের মধ্যে ১৪(চৌদ্দ) টি হেভী ক্যাপিটাল মেশিনারীজ প্রতিষ্ঠানের কারখানা প্রাঙ্গন বা অন্যত্র স্থাপিত নেই।”
এখানেই শেষ নয়, এই অভিযান পরিচালনার আগে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের প্রতিনিধিরা কারখানা পরিদর্শনের খবর পেলে ভাড়া করা ডামি (অক্ষম) মেশিন এনে দেখানোর প্রমাণ পেয়ে বিস্মিত মূসক ও শুল্ক গোয়েন্দারা। তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, “...স্থানীয় বাজারে প্রস্তুতকৃত মেশিনসদৃশ কিন্তু উৎপাদনে অক্ষম (ডামি) মেশিন ফ্যাক্টরীতে স্থাপিত অবস্থায় প্রদর্শন করে অব্যাহতি সুবিধা গ্রহণ করেছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড হতে পরিদর্শন টিম যাওয়ার পূর্বে, মোল্ড ও ডাইস উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান হতে ভাড়া করে মেশিন নিয়ে এসে ফ্যাক্টরীতে প্রতিস্থাপিত করে পরিদর্মন টিমকে দেখানো হয়েছে ।”
ভয়াবহ জালিয়াতির মাধ্যমে সরকারের কর অব্যাহতি সুবিধা নিয়ে রাষ্ট্রের কোটি কোটি টাকা ফাঁকি দিয়েছে মিনিস্টার হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ। ইলেকট্রনিক্স পণ্যের দেশীয় উৎপাদকদের অসম প্রতিযোগীতায় ফেলার অভিযোগ রয়েছে মিনিস্টারের বিরুদ্ধে। বছরের পর বছর শুল্কমুক্ত সুবিধায় কাঁচামাল আমদানি করে পণ্য উৎপাদন না করে স্থানীয় বাজারে বিক্রয়ের করে মিনিস্টার হাইটেক কর্তৃপক্ষ আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছে বলেও তদন্ত প্রতিবেদন উল্লেখ করার পাশাপাশি শাস্তিমূলকভাবে জরিমানা করা হয়।
এনবিআরের ৩০ পাতার ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, “ মিনিস্টার হাইটেক কারখানায় আকস্মিক পরিদর্শনকাল, প্রতিষ্ঠানটির উৎপাদনস্থল, উৎপাদন প্রক্রিয়া এবং উৎপাদনের সার্বিক ইনপুট ও আউটপুট বিশেষভাবে পরীক্ষা করে। জব্দ করা হয় কোম্পানিটির বাণিজ্যিক রেজিস্ট্রার খাতা ৫০টি, মূসক-১৬ রেজিস্টার ১০টি খাতা, মূসক-১৭ রেজিস্ট্রার ৯টি, সার্ভিস বিল বুক নোট বই ১০টি, মূসক-১১ চালান বই ১১১টি, মূসক-১৮ রেজিস্টার বই একটি, ২০১৪ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত ৪টি সিএ রিপোর্ট, ফ্যাক্টারি থেকে প্রাপ্ত ৯টি রেজিস্ট্রার খাতা।
এসব নথি পত্রের সাথে আমদানি করা কাঁচামালের তথ্যে ব্যাপক গরমিল খুঁজে পায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। জব্দকৃত নথির সাথে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের এসাইকুডা ওয়ার্ল্ডের তথ্য খতিয়ে দেখে এনবিআর। মিনিস্টার হাইটেক পার্কের প্রথম আমদানির জন্য বিল অব এন্ট্রি দাখিল করে ২২/০৩/২০১৫। উক্ত তারিখ হতে ১৪/০৫/২০১৮ তারিখ পর্যন্ত সকল আমদানীর বিল অব এন্ট্রি যাচাই করে দেখা যায় এস.আর.ও শর্তাধীন কোন মেশিনারীজ আমদানির তথ্য নেই এনবিআরের ডাটাবেজে। ফলে প্রোডাকশন বেল্টসহ ১৪টি ক্যাপিটাল মেশিনারিজের একটি আমদানি করেনি মিনিস্টার।
জালিয়াতির গল্পটা এখানেই শেষ নয়, “ফ্যাক্টারীতে স্থাপিত নেই এমন মেশিনসমূহের নকল স্থানীয় ক্রয় রশিদ দাখিল করেছে মিনিস্টার কর্তৃপক্ষ। তদন্তের পরিপ্রেক্ষিতে ২/১০/২০১৮ তারিখে মিনিস্টার কর্তৃপক্ষ ৬টি মেশিন ক্রয়ের ৪টি স্থানীয় রশিদ দাখিল করে। অধিকতর তদন্তের মাধ্যমে জালিয়াতির প্রমাণ পায় অভিযানকারী দল।
এ বিষয়ে প্রতিবেদন বলা হয়, “মিনিস্টার হাইটেক কর্তৃক ভার্টিকাল মেশিনিং সেন্টার (ভিএমসি) ক্রয় সংক্রান্ত ME1L/01/159, তারিখ ১৫.০১.২০১৫ যে ক্রয় রশিদটি দাখিল করা হয় সেটি দেখে উক্ত প্রতিষ্ঠানের প্রোপ্রাইটার, জনাব আবদুল কাইয়ুম লিখিতভাবে জানান, উল্লেখিত মেশিনারি তাঁর প্রতিষ্ঠান থেকে ক্রয়কৃত নয়। জার্মান-বাংলাদেশ মেশিন এন্ড স্টিল নামে অপর একটি প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।”
একটিও ক্যাপিটাল মেশিনারীজ আমদানী না করে স্থানীয় বাজার থেকে ভারী মেশিনারীজ কেনার জাল ক্রয় রসিদ প্রদান অধিকতর তদন্তের পর অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় ২০১৯ সালের ৬ মার্চ মিনিস্টার হাইটেক পার্কের বিরুদ্ধে মামলা করে মূসক ও শুল্ক গোয়েন্দা ঢাকা (উত্তর) । মামলা নং ৩৩/২০১৯।
এলইডি টিভি উৎপাদনের কোন প্লান্টের দেখা নেই ৬ তলা বিশিষ্ট কারাখানার কোন তলাতে:
মিনিস্টার হাইটেক পার্কে আগুনে ক্ষয়ক্ষতির পর একটি ভিডিও চিত্র ধারণ করা হয়। ধারণ করা ওই ভিডিও ফুটেজে ৬ তলা বিশিষ্ট ওই কারাখানার কোন তলাতে এলইডি টিভি উৎপাদনের কোন প্লান্ট দেখা যায় নাই। অথচ সার্ভেয়ার তার প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন, বীমা গ্রাহক মাইওয়ান, মিনিস্টার এবং মাই লাইফ নামের প্রতিষ্ঠানগুলো নামে মূলত এলইডি টিভি ও গ্যাস স্টোভ উৎপাদন করে। এবং ৬ষ্ঠ তলার ওই গোডাউনটি কারখানায় প্রস্তুতকৃত বা উৎপাদিত মালামাল মজুদ করার জন্য ব্যবহৃত হতো। ফলে ৬ষ্ঠ তলার গোডাউনে মজুদ করে রাখা ৫৯ কোটি টাকার এলইডি টিভি মিনিস্টার হাইটেক পার্কের কারখানা ভবনে অবস্থিত মাইওয়ান, মিনিস্টার বা মাই লাইফ নামক প্রতিষ্ঠানে উৎপাদিত কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
অপর দিকে ভিডিও ফুটেজটিতে ১ ঘ্ণ্টা ১৯ মিনিট ২৭ সেকেন্ডে দেখা যায়, ৭/৮টি এলইডি টিভি অক্ষত অবস্থায় পড়ে আছে পুড়ে যাওয়া অন্যান্য সামগ্রীর ওপর। আগুনে গ্যাসের চুলা-ফ্যানসহ অন্যান্য সব কিছু পুড়ে গেলেও কার্টনসহ এলইডি টিভি একেবারে অক্ষত থাকতে দেখা যায় রহস্যজনকভাবে। এ ছাড়াও কিছু এলইডি টিভির কার্টন দেখা যায়, যা পানিতে নষ্ট হয়ে যাওয়ার ছাপ রয়েছে। ষষ্ঠ তলার ওই গোডাউনে আগুনে পুড়ে যাওয়া মালামালের মধ্যে সিংহভাগই গ্যাস স্টোভ, রাইস কুকার, টেবিল ফ্যান জাতীয় হোম অ্যাপারেলস জাতীয় সামগ্রি। যেখানে এলইডি টেভিগুলো পরে এনে রাখার অভিযোগ রয়েছে মিনিস্টার হাইটেক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।
৬ তলার ওপর অবৈধ গোডাউন: আগুন দ্রুত ছড়িয়েছে দহ্য পদার্থের কারণে:
আগুন লাগার পর বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়েছে- আগুন লেগেছে, ৬ষ্ঠ তলার গোডাউন থেকে এবং দাহ্য পদার্থ থাকার কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়েছে। অপর দিকে সার্ভেয়ার তাদের জরিপ প্রতিবেদন উল্লেখ করেন- আগুন লাগার কারণ ৬ষ্ঠ তলার একটি কম্পিউটারের মালটিপ্ল্যাগের মাধ্যমে। ফায়ার বিগ্রেট রিপোর্টে বলা হয়েছে- বৈদ্যুতিক গোলেযোগে আগুন লাগে। এছাড়া ৬ষ্ঠ তলার গোডাউনের বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে গণমাধ্যমে।
এদিকে বীমা বিশেষজ্ঞদের মতে, গোডাউনে দাহ্য পদার্থ রাখার কোন সুযোগ নেই।
মিনিষ্টার হাইটেক পার্কে আগুন লাগে ১৩ সেপ্টম্বর ২০১৯ সালে। পরের দিন দেশে শীর্ষ স্থানীয় জাতীয় দৈনিক ‘দৈনিক প্রথম আলো’র প্রিন্টেড ভার্সনে “মিনিস্টার-মাইওয়ানের কারখানায় আগুন” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদে তৃতীয় অনুচ্ছেদে উল্লেখ করা হয়, “কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতর গাজীপুরের সহকারি মহা পরিদর্শক মোতালেব মিয়া বলেন, ৬ষ্ঠ তলায় গুদাম করার কোন নিয়ম নেই। সেখানে অগ্নি সংকেত ব্যাবস্থা ও অগ্নি নির্বাপনের পর্যাপ্ত সরঞ্জাম ছিল না। এসব অভিযোগে কারখানা কর্তৃপক্ষকে প্রায় ২০ দিন আগে নোটিশ দেয়া হয়েছিল। কিন্তু কর্তৃপক্ষ বিষয়টি গুরুত্ব দেয়নি। এ জন্য তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে”
প্রথম আলোয় ১ অক্টোবর প্রকাশিত 'মিনিস্টার-মাইওয়ান কারখানা পুড়ে ক্ষতি শত কোটি টাকার' শীর্ষক শিরোনামে বলা হয়, ‘গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক মামুন-অর-রশীদ গতকাল শুক্রবার জানান, প্রতিবছর কারখানার ফায়ার লাইসেন্স নবায়নের নিয়ম রয়েছে। মিনিস্টার-মাইওয়ান কারখানাটির অগ্নি লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হয় ৩০ জুন। সম্প্রতি ওই কারখানার কর্তৃপক্ষ নবায়নের জন্য আবেদন করলেও নবায়নের শর্ত পূরণ না হওয়ায় তাদের লাইসেন্স নবায়ন করা হয়নি। তবে এ বিষয়ে রাজ্জাক খানকে কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।”
শুধু তাই নয়, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯ মিনিস্টার কারখানায় অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা ছিল না ' শিরোনামে একুশে টেলিভিশনের অনলাইনে সংবাদে বলা হয়, টঙ্গী কলকারাখানা অধিদফতরের সহকারী মহা-পরিদর্শক মোতালিব মিয়া জানান, ‘এই কারখানায় নিয়মিত অগ্নি নির্বাপন মহড়ার আয়োজন করা হতো না। ছয় তলার ওপরে গুদাম রাখারও নিয়ম নেই। কারখানায় ফায়ার অ্যালার্ম ও অগ্নি নির্বাপনের পর্যাপ্ত সরঞ্জাম ছিল না। এ ব্যাপারে প্রায় তিন সপ্তাহ (আনুমানিক ২০/২২দিন) আগেও আমরা নোটিশ দিয়েছিলাম। নোটিশের বিপরীতে কারখানা কর্তৃপক্ষ কোনও জবাব দেয়নি। এ কারণে কলকারখানা অধিদফতর তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।"
ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক লে: কর্ণেল জিল্লুর রহমান পিএসসি স্বাক্ষরিত চূড়ান্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, “প্রতিষ্ঠানের Fire Safety plan অনতিবিলম্বে প্রস্তুতকরত কার্যকরীভাবে বাস্তবায়নের পরামর্শ দেয়া হল।” ফলে অবৈধভাবে ৬ষ্ঠ তলার ওপর নির্মিত গোডাউনে অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা ছিল না সংক্রান্ত গণমাধ্যমের সংবাদ যে বস্তুনিষ্ঠ তাও প্রমাণিত হয়। ফলে অবৈধভাবে স্থাপিত কোন গোডাউনের কোন মালামাল বীমাযোগ্য কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে বীমা বিশ্লেষকদের একইসাথে একই ফ্লোরের মালামাল ৪টি বীমা কোম্পানিতে বীমা করার মোটিভ নিয়েও প্রশ্ন আছে খোদ বীমা কোম্পানিগুলোর নির্বাহীদের মাঝে।
এ বিষয়ে জানতে ইন্স্যুরেন্সনিউজবিডি’র পক্ষ থেকে মিনিস্টার হাই-টেক পার্ক লিমিটেডের চেয়ারম্যান এম এ রাজ্জাক খানের সাথে তার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তবে তিনি কল রিসিভ করেননি। এমনকি কথা বলার বিষয় উল্লেখ করে তার মোবাইলে বার্তা পাঠানো হলেও তিনি সাড়া দেননি।