দক্ষিণাঞ্চলের বীমা বাজার সম্প্রসারণে ভূমিকা রাখবে পদ্মা সেতু

আবদুর রহমান আবির: আগামী শনিবার (২৫ জুন) চালু হচ্ছে পদ্মা সেতু। এতে করে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১৯টি জেলা স্থলপথে সরাসরি সংযুক্ত হচ্ছে ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য এলাকার সাথে। পদ্মা নদীর উপর নির্মিত এই বহুমুখী সড়ক ও রেল সেতু এই অঞ্চলের প্রায় ৬ কোটি মানুষের জীবন ও জীবিকার ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে- এমনটাই প্রত্যাশা।

এই পরিবর্তনে পিছিয়ে থাকবে না দেশের অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ খাত বীমা। পদ্মা সেতু দেশের জিডিপিতে যেমন অবদান রাখবে তেমনি বীমা খাত সম্প্রসারণেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোতে নতুন নতুন শিল্প-প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠার সাথে সাথে বৃদ্ধি পাবে বীমা ব্যবসা।

পদ্মা সেতু দক্ষিণাঞ্চলের বীমা বাজার সম্প্রসারণে কী ধরণের ভূমিকা রাখবে এ নিয়ে ইন্স্যুরেন্স নিউজ বিডি’র সাথে আলাপ হয় ওই অঞ্চলের বীমা পেশাজীবীদের সাথে। পদ্মা সেতু বীমা ব্যবসা বাড়াবে বলে আশা করছেন তারা। জীবনযাত্রার মানের সাথে বীমার চাহিদা বাড়বে বলে মনে করেন তারা।

বীমা ব্যবসায় পদ্মা সেতুর ভূমিকা নিয়ে যা ভাবছেন ওই অঞ্চলের বীমা কর্মীরা:

ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের গোপালগঞ্জ জোনের এক্সিকিউটিভ অফিসার (আইটি) জামাল মিয়া ইন্স্যুরেন্স নিউজ বিডি’কে বলেন, পদ্মা সেতু চালু হলে ঢাকার সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটবে। এতে করে এই অঞ্চলের মানুষের ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়বে, বাড়বে তাদের টাকা-পয়সাও। এসব অর্থ তারা অন্যান্য খাতের পাশাপাশি বীমা খাতেও বিনিয়োগ করতে এগিয়ে আসবে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই এই অঞ্চলে বীমা ব্যবসার প্রসার ঘটবে।

জামাল মিয়া আরো বলেন, পদ্মা সেতু চালু হলে একদিকে যেমন প্রধান কার্যালয়ে আমাদের যাতায়াতের সময় ও ভোগান্তি কমবে অন্যদিকে বীমা গ্রাহকদের দাবি পরিশোধের কার্যক্রমও দ্রুততর হবে। তিনি বলেন, বর্তমানে কোন গ্রাহকের বীমা দাবি উত্থাপন হলে সেটি আমরা স্ব-শরীরে গিয়ে প্রধান কার্যালয়ে জমা করি অথবা কুরিয়ারের মাধ্যমে পাঠাই। এক্ষেত্রে ফেরি পারাপারে অনেক সময় নষ্ট হয়। পদ্মা সেতু চালু হলে দ্রুততার সাথে দাবি পরিশোধ করা সম্ভব হবে।

গ্রীন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির পিরোজপুর ব্রাঞ্চ ইনচার্জ আইয়ুব আলী খান বলেন, পদ্মা সেতু চালু হলে আমাদের এসব অঞ্চলে বিভিন্ন রকম মিল-কারখানা, শিল্প-প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠবে। এসব প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বীমার প্রয়োজন হবে। ফলে আমাদের বীমা ব্যবসার পরিমাণ বাড়বে। তাছাড়া, প্রধান কার্যালয়ের সাথে আমাদের সরাসরি যোগাযোগের সময় ও খরচ কমে আসবে। বীমা দাবি নিষ্পত্তির জন্য ইন্সপেকশনসহ অন্যান্য কার্যক্রম দ্রুত হবে। আর এসবই হবে পদ্মা সেতুর বদৌলতে।

হোমল্যান্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্সের সিনিয়র এসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার ও রাজবাড়ী সার্ভিস সেন্টার ইনচার্জ এস এম হাবিবুল্লাহ সিদ্দিকী বলেন, পদ্মা সেতু চালু হলে প্রধান কার্যালয়ের সাথে আমাদের যোগাযোগের সময় ও খরচ কমে আসবে এবং দ্রুত গ্রাহক সেবা দিতে পারব। বর্তমানে একটি এসবি বা মৃত্যুদাবির চেক আনার জন্য প্রায় দু’দিন সময় লাগে, ঢাকায় গিয়ে রাতে হোটেলে রাত্রিযাপন করতে হয়।

কিন্তু সেতু চালু হলে সকালে গিয়ে রাতেই ফেরা সম্ভব হবে। অর্থাৎ চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে দাবি পরিশোধ করা সম্ভব হবে। দ্রুততার সাথে ভালো গ্রাহক সেবা দিতে পারলে বীমার প্রতি মানুষের আস্থা বাড়বে। এর ফলে তারা নতুন করে বীমায় বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হবে এবং এই অঞ্চলের বীমা বাজার উত্তোরত্তর বৃদ্ধি পাবে বলে আমি মনে করি, বলেন এস এম হাবিবুল্লাহ।

পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্সের বরিশাল অফিসের কর্মকর্তা (তাকাফুল বীমা প্রকল্পের বিভাগীয় ইনচার্জ) আল মামুন মৃধা ইন্স্যুরেন্স নিউজ বিডি’কে বলেন, যোগাযোগের ক্ষেত্রে দেশের দক্ষিণাঞ্চল বরাবরই অবহেলিত ছিল। কিন্তু পদ্মা সেতু এই পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটাবে। আর্থ-সামাজিকভাবে অগ্রগতি হবে এই অঞ্চলের মানুষের। ফলে স্বাভাবিকভাবেই বীমা খাতের উন্নয়ন ঘটবে। প্রসারিত হবে এই অঞ্চলের বীমা বাজার।

আল মামুন মৃধা বলেন, সব ব্যাংক-বীমার প্রধান কার্যালয় ঢাকায়। অফিসের নানান কাজে আমাদের ঢাকায় যেতে হয়। সেখানে যাতায়াত অনেক সময়সাপেক্ষ। যার কারণে অনেক সময় গ্রাহকদের বীমা দাবি পরিশোধ করতে বিলম্ব হয়। তবে পদ্মা সেতু চালু হলে আমাদের এই দুর্ভোগ থাকবে না। দ্রুত প্রধান কার্যালয়ের সাথে আমরা যোগাযোগ করে গ্রাহক সেবা নিশ্চিত করতে পারব। এতে বীমার প্রতি মানুষের আস্থা বাড়বে।

বীমা ব্যবসা সম্প্রসারণে পদ্মা সেতুর ভূমিকা যেভাবে দেখছেন মুখ্য নির্বাহীরা:

সেনাকল্যাণ ইন্স্যুরেন্সের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. শফিক শামিম বলেন, সবচেয়ে বড় বিষয় হলো- পদ্মা সেতু চালু হওয়ার সাথে সাথে ওই পাড়ের তথা দক্ষিণাঞ্চলে ছোট ও মাঝারি ধরণের অনেক রকমের শিল্প-প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠবে। আর যেকোন ধরণের শিল্প গড়ে উঠলেই বীমা ব্যবসা বাড়বে। কারণ, শিল্প মালিকরা এখন অনেক সচেতন, তাই তারা তাদের ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তার জন্য অনেক ধরণের বীমা পলিসি গ্রহণ করে থাকে।

শফিক শামিম বলেন, বর্তমানে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না থাকায় অনেক বীমা দাবি উত্থাপন হয়, যেগুলোকে আমরা অপচয় বলতে পারি। কারণ, ওই পাড়ের অনেক জিনিসের বীমা করা হয় কিন্তু যোগাযোগ ব্যবস্থা খারাপ হওয়ায় গাড়ি ৫/৬ দিন আসতে না পারায় সেগুলো নষ্ট হয়ে যায় বা গাড়ি দুর্ঘটনার শিকার হয়ে বীমা দাবি উত্থাপন বেড়ে যায়। কিন্তু পদ্মা সেতু চালু হলে এসব বীমা দাবি কমে আসবে। সবচেয়ে বড় কথা এসব অঞ্চলের নতুন নতুন শিল্প গড়ে ওঠার সাথে সাথে বীমা ব্যবসাও বাড়বে।

শফিক শামিম আরো বলেন, গুরুত্বপূর্ণ আরেকটি বিষয় হলো পদ্মা সেতু চালু হলে পায়রা ও মংলা বন্দর দু’টির কার্যক্রম আরো বেড়ে যাবে। তিনি বলেন, পদ্মা সেতু হলো লাইফ-লাইন (যোগাযোগের একমাত্র উপায়) । আর পায়রা বন্দর যেহেতু গভীর সমুদ্র বন্দর, তাই বড় জাহাজগুলো সরাসরি এই বন্দরে চলে আসবে। আগের মতো দীর্ঘ সময় আর জাহাজগুলোকে বন্দরে নোঙর করে থাকতে হবে না। বন্দরের কার্যক্রম বেশি হলে স্বাভাবিকভাবেই বীমা গ্রহণ বাড়বে এবং মেরিন ইন্স্যুরেন্সের মতো বীমাগুলোর ব্যবসা বৃদ্ধি পাবে।

বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স ফোরাম (বিআইএফ)’র সিনিয়র সহসভাপতি ও এশিয়া ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা ইমাম শাহীন বলেন, পদ্মা সেতু চালু হলে বীমা ব্যবসা বাড়বে এটা সরাসরি বলা যাবে না। তবে অনেকে বলছেন, পদ্মা সেতু চালু হলে জিডিপিতে এর অবদান ২ শতাংশ দাঁড়াবে। এক্ষেত্রে অর্থনীতি বড় হলে শিল্পায়ন বাড়বে; আমদানি-রপ্তানি বাড়বে। এসব কার্যক্রম পরিচালনায় বীমা গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা তৈরি হবে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই বীমা ব্যবসারও প্রসার ঘটবে।

প্রাইম ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা আপেল মাহমুদ ইন্স্যুরেন্স নিউজ বিডি’কে বলেন, পদ্মা সেতু চালু হলে লাইফ বীমার চেয়ে নন-লাইফ বীমার সম্ভাবনা আমার মতে বেশি তৈরি হবে। কারণ, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হওয়ার পাশাপাশি এসব অঞ্চলে ব্যাপকভাবে শিল্পায়ন হবে। তখন এসব শিল্পের কাঁচামাল, মেশিনারিজ, স্থাপনার নিরাপত্তার স্বার্থে বিভিন্ন ধরণের বীমার প্রয়োজন হবে।

একইসঙ্গে এসব শিল্পে নিয়োজিত শ্রমিক-কর্মকর্তাদের জীবন ও স্বাস্থের বীমার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেবে। ফলে এসব অঞ্চলে লাইফ বীমার বাজারও বৃদ্ধি পাবে। এ ছাড়াও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের সাথে সাথে কোম্পানিগুলোর গ্রাহকসেবার মান বৃদ্ধি পাবে বলেই আমাদের প্রত্যাশা। যা বীমার প্রতি মানুষের আস্থা বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে, বলেন প্রাইম ইসলামী লাইফের মুখ্য নির্বাহী আপেল মাহমুদ ।  

বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স ফোরাম (বিআইএফ)’র যুগ্ম সম্পাদক ও জেনিথ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম নুরুজ্জামান বলেন, চলাচলের জন্য পদ্মা সেতু খুলে দেয়া হলে দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের জীবন-মান বৃদ্ধি করবে এবং এতে বীমা ব্যবসার ব্যাপক উন্নয়ন হবে বলেই আমাদের প্রত্যাশা।

তিনি বলেন, পদ্মা সেতু ১৯টি জেলাকে স্থলপথে ঢাকার সঙ্গে সরাসরি সংযোগ স্থাপন করবে। ফলে এসব এলাকার মাঠকর্মীদের সাথে কোম্পানিগুলোর প্রধান কার্যালয়ের যোগাযোগ সহজ হবে। গ্রাহক সেবার মানও বাড়বে। কোম্পানিগুলো ওই সব অঞ্চলে আরো বেশি কর্মী ও গ্রাহক সমাবেশ করে তাদেরকে বীমা বিক্রি ও বীমা গ্রহণে উজ্জীবিত করতে পারবেন।

বিশ্লেষকদের দৃষ্টিতে বীমা খাতের উন্নয়নে যেভাবে অবদান রাখবে পদ্মা সেতু:

বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স প্রফেশনালস সোসাইটি (বিআইপিএস)’র জেনারেল সেক্রেটারি এ কে এম এহসানুল হক, এফসিআইআই বলেন- পদ্মা সেতু নির্মাণ হওয়ায় নন-লাইফ বীমা কোম্পানিগুলোর ‘ইনল্যান্ড ট্রানজিট ইন্স্যুরেন্স’ ব্যবসা বৃদ্ধির যথেষ্ট সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন হয়েছে। কারণ, সেতুটি চালু হলে মালামাল পরিবহনের পরিমাণ বেড়ে যাবে।

তিনি বলেন, পদ্মা সেতু নির্মাণের কারণে এর সুবিধাভোগী অঞ্চলের মানুষের আয়ের উৎস বৃদ্ধি পাবে। বলা হচ্ছে, জিডিপিতে পদ্মা সেতুর অবদান দাঁড়াবে প্রায় ২ শতাংশ। এর অর্থ হলো মানুষের আয় বাড়বে। স্বাভাবিকভাবেই এসব অর্থ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করা হবে। আমরা আশা করছি, জীবন বীমা গ্রহণে মানুষ আগ্রহী হবে এবং এই খাতেও তাদের বিনিয়োগ বাড়বে।

এ কে এম এহসানুল হক আরো বলেন, পদ্মা সেতু চালু হলে যাতায়াতের সময় কমে যাবে। বীমা কোম্পানিগুলোর সাথে মাঠকর্মী ও গ্রাহকদের যোগাযোগ সহজ হবে। এর ফলে বীমা কোম্পানিগুলোর গ্রাহক সেবার মান বৃদ্ধি পাবে। যেটা বীমার প্রতি মানুষের আস্থা তৈরিতে সহায়তা করবে এবং বীমা বিক্রিও বৃদ্ধি করবে বলেই আমাদের প্রত্যাশা।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট ফর প্রফেশনাল ডেভেলপমেন্ট (বিআইপিডি)’র মহাপরিচালক কাজী মোরতুজা আলী বলেন, পদ্মা সেতু যোগাযোগ বাড়াবে। মানুষ বেশি যাবে-আসবে। পন্য সরবরাহ বাড়বে। তবে লাইফ বীমা ব্যবসায় পদ্মা সেতু নির্মাণের সরাসরি কোন প্রভাব চোখে পড়বে না। যদিও পরোক্ষভাবে এর প্রভাব থাকবে।

কাজী মোরতুজা আলী বলেন, পদ্মা সেতুর কারণে যোগাযোগের সময় কমে আসবে, কমবে খরচও। এতে কোম্পানিগুলো ওইসব এলাকায় বেশি বেশি কর্মী সমাবেশ ও গ্রাহক সমাবেশ করতে পারবে। গ্রাহক সেবার মান বাড়বে। এর ফলে কোম্পানিগুলোর বীমা ব্যবসা বৃদ্ধি পাবে।

এ ছাড়াও পদ্মা সেতুর কারণে ওইসব অঞ্চলের মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ঘটবে। এতে তাদের সঞ্চয় ক্ষমতা বাড়বে এবং বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করতে পারবে। আমরা মনে করি তাদের এই বিনিয়োগের একটি অংশ বীমা খাতে আসবে। এভাবেই বীমা খাতের ব্যবসা সম্প্রসারণে প্রভাব ফেলবে পদ্মা সেতু।

বীমা বাজার সম্প্রসারণে পদ্মা সেতুর ভূমিকা নিয়ে যা বললেন বিআইএ’র প্রেসিডেন্ট:

বীমা মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স এসোসিয়েশন (বিআইএ)’র প্রেসিডেন্ট শেখ কবির হোসেন ইন্স্যুরেন্স নিউজ বিডি’কে বলেন, পদ্মা সেতু চালু হলে শুধু বীমা খাত নয়, সব খাতেরই উন্নয়ন হবে। সারা বাংলাদেশের অর্থনীতির উন্নয়ন হবে। বাংলাদেশের অর্থনীতির উন্নয়ন হলে স্বাভাবিকভাবেই বীমা খাতেরও উন্নয়ন হবে। ১৯ হবে, ১৯ না হলে ২০ হবে, ২০ না হলে ১৮ হবে, এই রকম হবে। উন্নয়ন হবে- এতে কোন সন্দেহ নাই।

শেখ কবির হোসেন বলেন, পদ্মা সেতু একটা বিরাট অর্জন, এই অর্জনের তো কোন শেষ নেই। অতএব এটার কারণে সব খাতের উন্নয়ন হবে। এমন কোন খাত নেই যার উন্নয়ন হবে না। এই উন্নয়ন শুধু দক্ষিণবঙ্গের হবে না, সারা বাংলাদেশেরই হবে। তিনি বলেন, এই উন্নয়নের কোন মাত্রা নেই, এটা মাত্রা ছেড়েই হবে। কারণ এটা একটা বড় অর্জন। এ জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ দিলে ছোট করা হবে। এই অবদান চিরজীবন মানুষ মনে রাখবে।

বিআইএ’র প্রেসিডেন্ট শেখ কবির হোসেন বলেন, আমরা তো গর্বিত, যেহেতু বঙ্গবন্ধু বীমা সেক্টরে ছিলেন। বীমা অফিসে বসে বঙ্গবন্ধু ছয় দফা প্রণয়ন করেছিলেন। আবার বীমা খাতে বসে স্বাধীনতার মূলমন্ত্র নেতা কর্মীদের মাঝে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন।

তিনি বলেন, বীমা খাত-ই প্রথম যখন ওয়ার্ল্ড ব্যাংক পদ্মা সেতুর অর্থায়ন করল না- তখন বীমা খাত বলল আমাদের যে টাকা আছে, ১৪ হাজার কোটি টাকা, আমার এই টাকা পদ্মা সেতুতে বিনিয়োগের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দিবো। তখন যে কথা বীমা খাত বলেছিল, সে জন্য আজ বীমা খাত গর্বিত। বীমা খাতের টাকা তো নেত্রী নেন নাই, তিনি সরকারের টাকায় সেটা করলেন। যেহেতু এখন পদ্মা সেতু উদ্বোধন হতে যাচ্ছে, আমরা খুবই আনন্দিত।