বীমা পেশায় খণ্ডকালীন চাকরি করে সংসার চালানো শিক্ষার্থীদের দুঃসময়
এস এম নুরুজ্জামান: যেই সময়টাতে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা কিংবা গল্প-গানে মেতে ওঠার কথা, সেই সময়টাতে আমাদের দেশের কলেজ, মাদ্রাসা ও বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া অনেক শিক্ষার্থীকে ব্যস্ত থাকতে হয় অর্থ উপার্জনের ভাবনায়। দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে আসা এসব শিক্ষার্থীকে শুধু পড়ালেখায় মনোনিবেশ করলেই চলে না; ভাবতে হয় পড়ালেখা চালিয়ে নেয়ার অর্থের যোগান নিয়েও। এমনকি কখনো কখনো নিতে হয় পরিবারের দায়িত্বও।
জীবন সংগ্রামে টিকে থাকার এই লড়াইয়ে বেশিরভাগ শিক্ষার্থীর অবলম্বন হয় বীমা পেশা। কিন্তু কভিড-১৯ এর প্রাদুর্ভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বর্তমানে সেই অবলম্বনটুকুও হারিয়েছেন তারা। দেশের বিভিন্ন কলেজ, মাদ্রাসা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বীমা পেশায় জড়িত শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে এবং ফেইসবুক মাধ্যমে জানা যায়, এসব শিক্ষার্থীর প্রায় সকলেই বর্তমানে অর্থের অভাবে এক কঠিন দুঃসময় পার করছেন, সেই সাথে ভবিষ্যৎ নিয়েও ভুগছেন অনিশ্চয়তায়।
বীমা পেশায় কমিশন থেকে যে আয় হয় তা দিয়ে নিজের পড়ালেখা চালানোর পাশাপাশি পরিবারকেও কিছু সহযোগিতা করতেন। কিন্তু বর্তমানে অফিস বন্ধ রয়েছে অথচ তাদেরকে প্রতি মাসে বাড়িভাড়া প্রদান করতে হবে। এখন কীভাবে পরিশোধ করবে! বর্তমানের চেয়েও ভবিষ্যৎ নিয়ে বেশি ভয় হচ্ছে। এমন একটা সংকট, কারো কাছ থেকে চাইতেও পারছে না।
বীমা পেশায় থেকে পাওয়া অর্থে ভর করে চলা অনেক শিক্ষার্থী করোনা ভাইরাসের কারণে কলেজ, মাদ্রাসা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ফি ও মেস ভাড়া সঠিক সময়ে পরিশোধ করতে হবে। যদি এই পরিস্থিতি আরো দীর্ঘায়িত হয় তাহলে পরবর্তী সেমিস্টারে হয়তো অনেকে ভর্তিই হতে পারবো না।
রাজধানীর বাইরের চিত্রটাও অনেকটা একই। এমনকি অর্থের অভাবে তাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় চাহিদাগুলো পূরণেও হিমশিম খাচ্ছে। এই মুহুর্তে তাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা বাড়ি ভাড়া। মেস মালিকরা যদি এই সময়টায় অন্তত মেসভাড়া মওকুফ করতো তাদের খুবই উপকৃত হতো।
জীবন সংগ্রামে হিমশিম খাওয়া এসব শিক্ষার্থীর সহায়তা এগিয়ে আসতে হবে সরকার ও সংশ্লিষ্ট কোম্পানিকে। । পাশাপাশি বীমা মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স এসোসিয়েশন (বিআইএ) এবং বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)’র কার্যকর ভূমিকা হতে পারে দৃষ্টান্ত ।
লেখক: এস এম নুরুজ্জামান, মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা, জেনিথ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড।