বীমাখাতে নৈরাজ্যের কারণ প্রসঙ্গে

এ কে এম এহসানুল হক, এফসিআইআই: বীমাখাতে অনিয়ম এবং দুর্নীতি যেন অক্টোপাসের মতো আষ্টেপৃষ্ঠে আঁকড়ে ধরে আছে। খাতটিতে নৈরাজ্য সৃষ্টি হ্ওয়ার কারণ অজস্র। এসব কারণের মধ্যে অন্যতম হলো;

১। বাংলাদেশের অর্থনীতির আকৃতির তুলনায় অত্যাধিক বীমা কোম্পানির অস্তিত্ব।

২। বীমা কোম্পানির অসাধু এবং অনৈতিক উপায়ে ব্যবসা পরিচালনা।

৩। বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের প্রশাসনিক দুর্বলতা এবং অক্ষমতা ইত্যাদি।

বীমাখাতে বিরাজমান অনিয়ম এবং দুর্নীতির পরিধি ব্যাপকভাবে বিস্তৃত। পর্যালোচনার আলোকে বীমা কোম্পানির নিম্নলিখিত অপকর্মকে এ ব্যাপারে দোষারোপ করা যেতে পারে;

১। প্রকৃত প্রিমিয়ামের তুলনায় কম প্রিমিয়াম প্রদর্শন।

২। রাজস্ব ফাঁকি।

৩। নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পের অপব্যবহার।

৪। হিসাব নিরীক্ষা কোম্পানির সাথে যোগসাজসে মনগড়া বাৎসরিক প্রতিবেদন তৈরি।

৫। অপ্রকৃত খাতে কমিশন প্রদান।

৬। বীমা আইন ভঙ্গ করে বিদেশে পুনর্বীমা ব্যবস্থার মাধ্যমে অর্থ পাচার।

৭। দাবির বেলায় সার্ভে কোম্পানির সাথে যোগসাজসে বীমা কোম্পানির স্বার্থের অনুকূলে ক্ষতির প্রতিবেদন তৈরি।

৮। ভূয়া বা অসম্পূর্ণ কাগজপত্র জমার মাধ্যমে দেশি এবং বিদেশি পুনর্বীমা কোম্পানির নিকট থেকে দাবির টাকার অংশ উদ্ধার।

৯। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার দুর্নীতির সাথে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সংশ্লিষ্টতা।

১০। দুর্নীতি দমনে বীমা কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতা ইত্যাদি।

উপরে বর্ণিত কারণসমূহকে বীমাখাতে অনিয়ম এবং দুর্নীতির প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা যেতে পারে।

বীমা কর্তৃপক্ষের অন্যতম দায়িত্ব হচ্ছে স্বাতন্ত্রভাবে বিশেষ হিসাব নিরীক্ষার মাধ্যমে এই সমস্ত দুর্নীতি এবং অনিয়ম খুঁজে বের করা এবং বীমা আইন লঙ্ঘনকারী কোম্পানির বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের ব্যবস্থা করা।