স্বাস্থ্য বীমার প্রয়োজনীয়তা প্রসঙ্গে

এ কে এম এহসানুল হক, এফসিআইআই: বাংলাদেশে স্বাস্থ্য বীমার সম্ভাবনা অপরিসীম এবং এর প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। দিন দিন চিকিৎসা খরচ ব্যয়বহুল হয়ে উঠছে, যা বহন করা সাধারণ মানুষের জন্য এক প্রকার অসম্ভব ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। চিকিৎসা খরচ বহন করতে গিয়ে অনেক পরিবার বিশেষ করে দরিদ্র পরিবার আর্থিকভাবে সর্বশান্ত বা নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে।

সরকারী হাসপাতাল এবং ক্লিনিকে স্বল্প মূল্যে চিকিৎসার ব্যবস্থা থাকলেও নানা প্রকার অনিয়ম ও সীমাবদ্ধতার কারণে দরিদ্র জনগোষ্ঠী প্রয়োজনীয় চিকিৎসার সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

লোভ ও আর্থিক লাভের বশবর্তী হয়ে বেসরকারী চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানসমূহ স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণকারী রুগীর গলায় ছুরি চালাতে কুন্ঠাবোধ করে না।

স্বাস্থ্য সেবার দোহাই দিয়ে এই সমস্ত প্রতিষ্ঠান প্রতিনিয়ত জনগণকে শোষণ করে চলছে। এই অবাঞ্চিত এবং হতাশাব্যঞ্জক পরিস্থিতির জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দায়িত্বে অবহেলা, গাফিলতি, অদক্ষতা ইত্যাদিকে মূলত দায়ী করা যেতে পারে।

সরকারীভাবে স্বাস্থ্য সেবার মান উন্নত করতে হলে বাজেটের একটি বড় এবং সম্মানজনক অংশ স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ করতে হবে। এই খাতে বর্তমানে বরাদ্দকৃত টাকার পরিমাণ প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।

বর্তমান পরিস্থিতির উন্নতি সাধন করতে হলে সরকারকে এ ব্যাপারে উদ্যোগী ও কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সরকারী উদ্যোগে স্বাস্থ্য বীমা চালু করা হয়েছে, যার সুফল সাধারণ জনগণ ভোগ করছে।

বাংলাদেশেও স্বাস্থ্য বীমা অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। 'সবার জন্য স্বাস্থ্য’ এই মন্ত্রে দিক্ষিত হয়ে সরকারকে সবার জন্য কাজ করতে হবে। এ কথা মনে রাখতে হবে যে সুস্থ জনবল ছাড়া সুস্থ জাতি সম্ভব নয়।

প্রয়োজনে স্বাস্থ্য বীমা চালু করার ব্যাপারে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া বিশেষ করে সার্কভুক্ত দেশসমূহের পদাঙ্ক অনুসরণ করা যেতে পারে। এ ব্যাপারে বাংলাদেশের পিছিয়ে থাকার কোন যুক্তি সঙ্গত কারণ নেই।

বেসরকারী বীমা প্রতিষ্ঠানের সাহায্য ও সহযোগীতার মাধ্যমে এই মহৎ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন সম্ভব হতে পারে।