হাশেম ফুডস’র মালিকপক্ষের দায়িত্ব-জ্ঞানহীন কর্মকাণ্ডের নজির প্রসঙ্গে

এ কে এম এহসানুল হক, এফসিআইআই: গত ১০ জুলাই এই পত্রিকায় প্রকাশিত ‘গ্রুপ বীমা ও কল্যাণ তহবিল কোনটিই নেই শ্রমিকদের জন্য’ শীর্ষক সংবাদের সূত্র ধরে কিছু প্রাসঙ্গিক প্রশ্ন এখানে তুলে ধরা হলো।

৮ জুলাই সংঘটিত মর্মান্তিক অগ্নি দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা এবং গণমাধ্যমে প্রকাশিত ভীতিকর তথ্য থেকে মালিকপক্ষের আইনের প্রতি চরম অবজ্ঞা ও অশ্রদ্ধার চিত্র ফুটে উঠেছে।

হাসেম ফুডস অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের সেজান জুস কারখানায় অগ্নি নিরাপদ এবং নিরাপত্তাজনিত সকল আইন ও বিধি-নিষেধ লঙ্ঘনের সুস্পষ্ট প্রমাণের পাশাপাশি দেশে প্রতিষ্ঠিত শ্রম আইন লঙ্ঘনেরও খবর উঠে এসেছে।

দেশের শ্রম আইন অনুযায়ী ওয়ার্কার্স কম্পেনসেশন বীমা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। অথচ এই প্রতিষ্ঠানের মালিকপক্ষ প্রচলিত আইনের প্রতি ধৃষ্টতা এবং বৃদ্ধাঙ্গুল প্রদর্শন করে লোভের বশবর্তী হয়ে গরীব শ্রমিকদের প্রতি তাদের নৈতিক দায়িত্ব পালন তো দূরের কথা শ্রম আইনের নির্ধারিত দায়িত্ব পালন করতে বেমালুম ভুলে গেছে।

হাসেম ফুডস অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের মালিকপক্ষের দায়িত্ব জ্ঞান এবং নৈতিকতা বিবর্জিত আচরণে দেশবাসী রীতিমতো ক্ষুব্ধ এবং ক্রোধান্বিত। জনগণ এই নির্মম গণহত্যার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার চায়।

এই দুর্ঘটনার জন্য কল-কারখানা বা ফ্যাক্টরিতে অগ্নি নিরাপদ ব্যবস্থা এবং শ্রমিকের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে নিয়োজিত বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানকেও এ ব্যাপারে সমানভাবে দায়ী করা যেতে পারে।

জনগণের ট্যাক্সের টাকায় পরিচালিত এই সমস্ত প্রতিষ্ঠান দুর্ঘটনাকালে নানা রকম অজুহাত দেখিয়ে তাদের দায়িত্ব এড়ানো বা পাশ কাটিয়ে যাওয়ার প্রবণতা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।

সকল তোপ বা চাপের মুখে মালিকপক্ষের অগ্নিকাণ্ডে নিহত এবং আহতদের ক্ষতিপূরণ দেয়ার চেষ্টা একপ্রকার অনুগ্রহ বা অনুকম্পার শামিল মাত্র।

মালিকপক্ষ দেশে প্রতিষ্ঠিত সকল আইন এবং বিধিনিষেধ লঙ্ঘনের দুঃসাহস এবং স্পর্ধা কিভাবে পায় তা জানার অধিকার জনগণের রয়েছে।

হাশেম ফুডস এর মত আরো কত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান প্রতিনিয়ত দেশের প্রচলিত আইন ভঙ্গ করে চলেছে কে তার খবর বা হদিস রাখে।