বীমা খাতের সাথে সংশ্লিষ্ট স্টেক হোল্ডারদের দায়িত্ব এবং কর্তব্য প্রসঙ্গে
এ কে এম এহসানুল হক, এফসিআইআই :বিশ্ব বিখ্যাত বিজ্ঞানী আলফ্রেড বের্নহার্ড নোবেল মানুষের কল্যাণের জন্য ১৮৬৬ খ্রিস্টাব্দে ডিনামাইট আবিষ্কার করেছিলেন। কিন্তু তার সারা জীবনের শ্রমলব্ধ ফল যখন ধ্বংস এবং মানুষের মৃত্যুর জন্য ব্যবহৃত হতে লাগল তখন তিনি পাগলের মত হয়ে গেলেন। জীবনের এক পর্যায়ে এসে তিনি আক্ষেপ করে বলেছিলেন ডিনামাইট আবিষ্কার করে কি মারাত্মক ভুলই না করেছি আমি।
অনুরূপভাবে বীমার উদ্ভাবন হয়েছিল জনকল্যানে। জনগণকে বীমার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সচেতন করা এবং সময়মতো বীমাদাবি নিষ্পত্তির মাধ্যমে গ্রাহক সেবা নিশ্চিত করা এর লক্ষ্য।
কিন্তু বীমা খাতে বর্তমান হতাশাজনক অবস্থার প্রেক্ষিতে বীমার জনক বা প্রবর্তকরা হয়তো তাদের কবরে যন্ত্রনায় ছটফট করছে এই ভেবে যে, প্রতিনিয়ত তাদের উদ্দেশ্য ব্যহত বা পরাজিত হচ্ছে। আপাতত দৃষ্টিতে মনে হবে যে বীমা গ্রাহক ছাড়া আর বাকি সবাই বীমার ফায়দা লুটছে।
বীমা খাতে বর্তমানে যে অস্বাস্থ্যকর অবস্থা বিরাজ করছে তার উত্তরণ ছাড়া বীমা খাতের উন্নয়ন সম্ভব নয়।
বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষে (আইডিআরএ)’র অধিকাংশ সময় কাটে বীমা খাতে অনিয়ম এবং দুর্নীতি সামলাতে। বীমা খাতের উন্নয়নে তাদের মনোযোগ দেয়ার সময় কোথায়?
বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স ফোরাম এবং বীমা খাতের সাথে সংশ্লিষ্ট সকল মহলের দায়িত্ব হচ্ছে সম্মিলিতভাবে সমন্বয়ের মাধ্যমে বীমা খাতের সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসা।
বীমা খাতের বর্তমান নৈরাজ্যজনক অবস্থা বহির্বিশ্বে বিশেষ করে পুনর্বীমা জগতে বাংলাদেশের সম্মান ক্ষুন্ন করার পাশাপাশি বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করতে পারে, যা বীমা খাতের জন্য মোটেই সুখকর হবে না।