অবশেষে ঘুম ভাঙলো অর্থ মন্ত্রণালয়ের!
এ কে এম এহসানুল হক, এফসিআইআই: গত ৩১ জুলাই এই পত্রিকায় ‘১৩ লাইফ বীমা কোম্পানিতে তদন্ত করতে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)’কে উক্ত ১৩ কোম্পানির বিরুদ্ধে নানা প্রকার অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রসঙ্গ টেনে তদন্ত করা নির্দেশ প্রদান করেছে।
জানা মতে, এসব বীমা কোম্পানি অধিকাংশই এক কথায় আর্থিকভাবে স্বাস্থ্যহীনতা এবং অপুষ্টিতে ভুগছে। অনেক কোম্পানির লাইফ ফান্ড নিয়ে রয়েছে বিশাল সমস্যা। কারো কারো সলভেন্সি মার্জিন বীমা আইনে অনুমোদিত সীমার অনেক নিচে অবস্থান করছে।
এই ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় হতে হস্তক্ষেপ প্রশংসনীয়। তবে বীমা বিশেষজ্ঞদের মতে মন্ত্রণালয় বড্ড দেরি করে ফেলেছে। ইতোমধ্যেই অনেক লাইফ বীমা কোম্পানি মুমূর্ষু অবস্থায় কৃত্তিম অক্সিজেনের সহায়তায় কোন রকম শ্বাস-প্রশ্বাস নিচ্ছে।
এটি বিশ্বাস করার কোন কারণ নাই যে, বীমা কর্তৃপক্ষ এই সব বীমা কোম্পানির অনিয়ম ও দুর্নীতি বিষয়ে অবগত বা ওয়াকিফহাল নয়। কিন্তু আশ্চার্যজনকভাবে কোন অজ্ঞাত বা রহস্যজনক কারণে এদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের পরির্বতে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে। দেখে মনে হয় বীমা কোম্পানি এবং বীমা কর্তৃপক্ষ যেন একই গোয়ালের গরু।
এই ১৩ লাইফ কোম্পানির পাশাপাশি বীমা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধেও দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করা প্রয়োজন। বীমা কোম্পানি হোক বা বীমা কর্তৃপক্ষ-ই হোক দুর্নীতির সাথে জড়িত কাউকে-ই ছাড় দেয়া যাবে না। সবাইকে আইনের আওতায় আনতে হবে।
বীমা খাতের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলের দাবি, বীমা খাতের স্বার্থের কথা চিন্তা করে বীমা কর্তৃপক্ষের জবাবদিহীতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে।
দুঃখজনকভাবে বেশ কিছু বীমা কোম্পানি দিনের পর দিন বীমা আইন ভঙ্গ করে চলেছে এবং বিভিন্ন প্রকার অনিয়ম ও দুর্নীতি করে পার পেয়ে যাচ্ছে। যার ফলশ্রুতিতে সাধারণ বীমা গ্রাহক ভোগান্তির স্বীকার হচ্ছে। তারা সময়মতো তাদের মৃত্যুদাবি হতে বঞ্চিত হচ্ছে এবং আর্থিক সংকটের মধ্যে দিনযাপন করছে।
বীমা খাতের এই নৈরাজ্য জনক অবস্থার অবসান ঘটাতে হবে, এভাবে কোন দেশের বীমা খাত চলতে পারে না।
বীমা কোম্পানি যদি তাদের খেয়াল খুশিমতো-ই ব্যবসা পরিচালন করবে, তাহলে স্বভাবতই প্রশ্ন জাগে- বীমা কর্তৃপক্ষে প্রয়োজীনতা কোথায়।