বীমার মূল উদ্দেশ্য এবং আইডিআরএ’র করণীয়
এ কে এম এহসানুল হক, এফসিআইআই: বীমা ব্যবসা সাধারণত আর দশটি ব্যবসার মতো নয়। এটি অন্য সকল ধরণের ব্যবসার চেয়ে একটু ভিন্ন, একটু স্বতন্ত্র।
বীমার প্রধান এবং মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে বীমা গ্রাহকের স্বার্থ রক্ষা করা। সু-সময়ে প্রিমিয়াম প্রদানের মাধ্যমে বীমা গ্রাহক বীমা কোম্পানিকে ঝুঁকি হস্তান্তর করে থাকে।
দৃষ্টান্ত স্বরূপ- জীবন বীমার বেলায় মৃত্যু ঝুঁকি এবং সাধারণ বীমার বেলায় অগ্নি ঝুঁকির বিষয়টি উল্লেখ করা যায়। এসব পলিসি গ্রহণের সময় গ্রাহকের আর্থিক অবস্থা ভালো থাকে। অথচ মৃত্যু বা অগ্নিকাণ্ড তাদের জীবনে বয়ে আনে দুঃসময়।
বীমা কোম্পানির অন্যতম দায়িত্ব হচ্ছে এই দুঃসময়ে বীমা গ্রাহকের পাশে দাঁড়ানো এবং বীমা চুক্তি অনুযায়ী সময়মতো আর্থিক সহায়তা বা ক্ষতিপূরণ প্রদান করা।
বীমা খাতের বর্তমান অবস্থা দেখে মনে হয় বীমা কোম্পানি বীমা গ্রাহকের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে স্বার্থপরের মতো কেবলমাত্র নিজেদের স্বার্থ রক্ষা করে চলেছে। এতে করে বীমার মূল উদ্দেশ্য সম্পূর্ণভাবে ব্যাহত এবং পরাজিত হচ্ছে।
ভুয়া বা জাল দাবি উত্থাপন, সময়মতো মৃত্যুদাবি পরিশোধ না করা, ছল-চাতুরি করে বীমা দাবি পরিহারের চেষ্টা ইত্যাদি আইনের চোখে এক প্রকার গুরুতর এবং দণ্ডনীয় অপরাধ।
অপরাধী বীমা কোম্পানিকে কেবলমাত্র জরিমানা করাই যথেষ্ট নয়। এতে করে বীমা কোম্পানিকে দুর্নীতি করতে উৎসাহিত করা হবে এবং বীমা গ্রাহকের প্রতি অন্যায় করা হবে।
যারা বীমা গ্রাহকের টাকা নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে এবং দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত তাদের অবশ্যই আইনের আওতায় এনে উপযুক্ত শাস্তি প্রদান করতে হবে এবং প্রয়োজনে বীমা কোম্পানির নিবন্ধন বাতিল করতে হবে।
তবেই বীমা খাতের বর্তমান নৈরাজ্যজনক অবস্থার উত্তরণ সম্ভব হতে পারে। অন্যথায় নয়।
বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষকে সকল প্রকার ভয়-ভীতির উর্ধ্বে উঠে সততা এবং দৃঢ়তার সাথে কঠোর হস্তে বীমা খাতে বিরাজমান দুর্নীতি দমন করতে হবে। তা না হলে বীমা গ্রাহকের স্বার্থ রক্ষা করা সম্ভব নয়।
আশা করি বীমা খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইডিআরএ তাদের ওপর ন্যস্ত গুরু দায়িত্ব পালনে পিছপা হবে না বা কুন্ঠাবোধ করবে না।