বাংলাদেশের বীমা সেক্টর ও ব্যাংকাস্যুরেন্স

আহমাদ আব্দুল্লাহ: দেখতে দেখতে ২০২৩ সাল চলে গেলো। নতুন বছর শুরু হয়ে গেলো। সেই সাথে অনেক কিছুই নতুন ভাবে শুরু হলো। আমাদের বীমা জগতের মাঝেও অনেক অনেক পরিবর্তন এবং নিত্য নতুন বীমা সেবার আগমন ঘটেছে এই দেশে। এর মধ্যে আলোচিত একটি বিষয় ‘ব্যাংকাস্যুরেন্স’।

অল্প কথায় ‘ব্যাংকাস্যুরেন্স’ মানে হলো, বীমা কোম্পানি, ব্যাংক এবং গ্রাহক তিনটি পক্ষই বীমার সেবা সুন্দর ভাবে প্রাপ্তির একটি সুশৃঙ্খল ব্যবস্থাপনা। এখানে বীমা কোম্পানির এজেন্ট হয়ে ব্যাংক তাঁর গ্রাহকের নিকট বীমা পণ্য বিক্রয় করবেন। কোন ব্যাক্তি ব্যাংকে গিয়ে পছন্দের বীমা পণ্য বা সেবা গ্রহণ করতে পারবেন। প্রিমিয়াম জমা, বীমার লভ্যাংশের টাকা, বীমা দাবির টাকা এ সকল লেনদেন হবে ব্যাংকের মাধ্যমে। বীমা কোম্পানির কাছ থেকে বীমা গ্রাহকের নিকট সেবা নিশ্চিত করতে ব্যাংক প্রত্যক্ষ ভূমিকা পালন করবে। এই ধরনের বীমা সেবা ব্যবস্থা বিশ্বের বহু দেশেই চলমান রয়েছে।

দেশীয় বীমা পেশাজীবীদের জন্য এটি একটি সম্পূর্ণ নতুন একটি বিষয়। এ নিয়ে অনেকেই ভিন্ন ভিন্ন চিন্তা বা মনোভাব পোষণ করছেন। কারও মতে এর ফলে মাঠ কর্মীদের বীমা পণ্য বিক্রয় কঠিন বা কারও কারও চাকরী চলে যাবে বলে মনে করছেন। কারও কারও মতে যুগের সাথে তাল মিলিয়ে নিজেকে তথ্য, প্রযুক্তি ও যোগাযোগে দক্ষ করে গড়ে তোলা মানুষ গুলোর জন্য অবারিত সম্ভাবনা বা সুযোগ এনে দিয়েছে সফল বীমা ক্যারিয়ার গড়ার।

বর্তমানে বীমা পেশায় ভালো করতে হলে নিজেকে আরও দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে। আধুনিক যুগের নতুন সব প্রযুক্তি নির্ভর সেবা সম্পর্কে জানতে হবে। বিভিন্ন রকম বীমা পণ্য সম্পর্কে জানতে হবে। ক্ষুদ্র বীমা, স্বাস্থ্য বীমা, কৃষি বীমা, গবাদি পশুর বীমা এবং "ব্যাংকাস্যুরেন্স" আগামী দিন গুলোতে আরও জনপ্রিয় হবে।

বীমা প্রতিষ্ঠান সমূহ এখন অনেক উন্নত হয়েছে। তাদের কাছে এখন প্রশিক্ষিত কর্মীর মুল্যায়ন আগের তুলনায় অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। যে সকল কর্মীগণ দক্ষতা উন্নয়নে আগ্রহী, তাদের দেশ এবং দেশের বাইরে থাকা সেরা বীমা প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণ প্রদানের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। কিছু দক্ষ তরুণদের নেতৃত্ব, পরিচালনা এবং পদচারনায় বীমা জগত মুখরিত হচ্ছে। বীমা প্রতিষ্ঠান সমুহের এই ভূমিকা আরও বৃদ্ধি পাবে সেই আশা দিন দিন আলোর মুখ দেখতে পাচ্ছে। তাই নবীন চাকরী প্রার্থীরা বীমা পেশায় আসতে আগ্রহি হচ্ছেন অনেকেই।

পরিশেষে এইটুকুই আমাদেরকে উপলব্ধি করতে হবে যে, যত বেশী বেশী দক্ষতা উন্নয়ন ও প্রশিক্ষণ বৃদ্ধি করবো, ততই আমাদের সামনে এগিয়ে যাওয়ার পথ সহজ হবে। সাফল্যময় হবে বীমা জগতের পথ চলা।