বীমা শিল্পের জন্য একটি গৌরবময় অধ্যায়, ১ মার্চ জাতীয় বীমা দিবস

নাদিরা ইসলাম, এমএএস: যেকোন জাতীয় দিবসের সাথে দেশের গৌরব, মর্যাদা এবং সম্মান জড়িত থাকে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, জননেত্রী শেখ হাসিনা ১ মার্চ জাতীয় বীমা দিবস ঘোষণার মাধ্যমে বীমা শিল্পকে করেছেন গৌরবময় এবং মর্যদাপূর্ণ। তাই অবহেলিত এই বীমা শিল্প আজ সম্মানজনক স্থানে পৌছে যাচ্ছে।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৬০ সালের ১ মার্চ আলফা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে যোগদান করেন। তার এ যোগদানের দিনটিকে জাতীয় পর্যায়ে স্মরণীয় রাখতে এবং বীমা শিল্পের উন্নয়ন ও বীমা সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যে ২০২০ সালের ১৫ জানুয়ারি বাংলাদেশ সরকার জাতীয় বীমা দিবস প্রবর্তন করেন। তাই প্রতিবছর ১ মার্চকে জাতীয় বীমা দিবস হিসেবে পালন করা হয়।

বাংলাদেশের বীমার ইতিহাস প্রায় অর্ধ শতাব্দীরও পুরনো। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার বর্নাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের পাশাপাশি জীবন বীমা খাতে প্রত্যক্ষভাবে কাজ করে গেছেন। তিনি ১ মার্চ ১৯৬০ইং তারিখে আলফা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে কন্ট্রোল অব এজেন্সি হিসেবে যোগদান করেন এবং সেখান থেকে তিনি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতেন।

বঙ্গবন্ধুর সরকার দেশের বীমা শিল্পের উন্নয়নের লক্ষ্যে স্বাধীনতা অর্জনের ৫ মাস পর ৮ আগস্ট ১৯৭২ইং তারিখে (The Bangladesh Insurance Nationalization Order, 1972) জারী করে বীমা শিল্পকে জাতীয়করণের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বদা গর্বের সাথে নিজেকে বীমা পরিবারের সদস্য হিসেবে দাবি করেন, যা বীমা শিল্পের জন্য অনেক সম্মানজনক।

বর্তমানে বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ জীবন বীমার আওতার বাইরে। এর ফলে মোট জনগোষ্ঠীর একটি বিরাট অংশ জীবনের ঝুঁকি, স্বাস্থ্যজনিত সেবা ও নিরাপত্তা থেকে বঞ্চিত। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে, ২০২২ সালে বীমা খাতে GDP (Gross Domestic Product) তে বীমার কন্ট্রিবিউশন হার শতকরা ০.৪০ শতাংশ এবং আশাজনক হচ্ছে জীবন বীমার আওতায় এই সমস্যাগুলো দূরীকরণে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে অবিরাম কাজ করে চলেছেন।

বর্তমানে বাংলাদেশে মোট বীমা কোম্পানি ৮১টি। এর মধ্যে ৩৫টি জীবন বীমা কোম্পানি এবং ৪৬টি নন-লাইফ বা সাধারণ বীমা কোম্পানি। প্রতিবছর এই বীমা দিবস উপলক্ষ্যে কিছু প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয় এবং এই প্রতিপাদ্য কার্যকর করার মাধ্যমে দেশের জীবন বীমা খাতকে আরও শক্তিশালী, আধুনিক ও যুগোপযোগী করে গড়ে তোলা সম্ভব।

আমাদের সকলের চেষ্টা এবং সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে বাংলাদেশও উন্নতির শিখরে পৌঁছবে এবং একদিন পৃথিবীর মানচিত্রে লাল সবুজের এই দেশ বাংলাদেশকে সবাই চিনবে।

লেখক: ডেপুটি ভাইস প্রেসিডেন্ট ও হেড অব একচ্যুয়ারিয়াল ডিপার্টমেন্ট, রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড।