বিয়ের আগে বীমা করুন, খরচ বাঁচান
জীবন বীমা এমন একটি চুক্তি যেখানে এককালীন অর্থ বা নির্দিষ্ট সময়ান্তে কিস্তি পরিশোধের প্রতিদানে বীমাগ্রহীতার মৃত্যুতে অথবা নির্ধারিত বছরসমূহ শেষে বীমাকারী বৃত্তি অথবা নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ পরিশোধের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। জীবন বীমা আসলে নিজের আর্থিক সুবিধার জন্য নয়। বরং বীমা গ্রহীতার অবর্তমানে তার ওপর নির্ভরশীলদের জন্য আর্থিক সমর্থন যোগানোই জীবন বীমার মূল লক্ষ্য।
জীবন বীমা পলিসির ধরণে যেমন রয়েছে ভিন্নতা তেমনি তার খরচেও রয়েছে ভিন্নতা। তবে বীমা পলিসি কেনার ক্ষেত্রে কিছু বিষয়ে কৌশল অবলম্বন করে এবং উপযুক্ত সময়ে পলিসি কেনার মাধ্যমে প্রিমিয়াম খরচ আরও কমিয়ে আনা যায়। ইন্সুরেন্সনিউজবিডি’র পাঠকদের জন্য বিশেষ করে যারা বীমা করতে ইচ্ছুক তাদের জন্য এমনই কিছু টিপস তুলে ধরা হলো-
মূলত জীবন বীমা পলিসি কেনার খরচ বা প্রিমিয়ামের পরিমাণ নির্ভর করে বেশ কিছু বিষয়ের ওপর। যেমন- আপনার বয়স, শারীরিক অবস্থা, কাজের প্রকৃতি, নির্বাচিত পলিসির প্রকার, বীমাকৃত রাশি বা অংক, পলিসি মেয়াদ, প্রিমিয়াম প্রদানের মেয়াদ, রাইডার্স বা অতিরিক্ত সুবিধা ইত্যাদি বিষয়ের ওপর।
এক্ষেত্রে বীমা বিশ্লেষকদের মত হচ্ছে, একটি পলিসির খরচ কম হতে পারে যদি আপনি তরুণ বা প্রারম্ভিক বয়সে বীমা ক্রয় করেন, যখন ঝুঁকি কম থাকে। অর্থাৎ আপনি আপনার আয়ের উপর নির্ভরশীল হলে নিজেকে বীমা করা উচিত। ছোট বয়স, আপনার প্রিমিয়াম কম হবে। বিয়ের পরে নয়, বিয়ের আগেই বীমা করুন। এতে করে বীমার প্রিমিয়াম খরচ কম হবে।
মনে রাখা দরকার, একটি বীমা পলিসি ক্রয় করতে যেন খুব একটা দেরী না হয়। কারণ, বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে প্রিমিয়াম হারও বাড়তে থাকে। যদি আপনি ৪৫ বছর বয়সী হন আর বীমা না করে থাকেন, তাহলে আপনি বীমা পণ্যগুলি পচ্ছন্দ করতে পারেন যেটা আপনার পরিবারকে সুবিধা প্রদান করবে এবং আপনার অবসরের সময়কালে আয় প্রদান করবে।
মাসিক নয়, বরং বার্ষিক ভিত্তিতে প্রিমিয়াম প্রদানের প্রস্তাব করুন। তাহলে আপনি ভালো ছাড় পেতে পারেন। অবশ্য আমাদের অধিকাংশের জন্য এর অর্থ হলো পুরো বছরজুড়ে জমা করা। আপনি বীমা কোম্পানির কাছ থেকে জেনে নিতে পারেন যে, আপনি এভাবে প্রিমিয়াম প্রদান করলে বছরে কত টাকা সঞ্চয় করতে পারবেন।
দীর্ঘ সময়ের জন্য নিজেকে বীমা করুন।কারণ, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শারীরিক দুর্বলতা বা ঝুঁকির পরিমাণও বাড়তে শুরু করে। এতে করে বীমার খরচও বেড়ে যায়। অর্থাৎ তরুণ বয়সে যত অল্প খরচে বীমা করা যাবে বয়সকালে তা সম্ভব হবে না। তাই অল্প সময়ের জন্য বারবার বীমা করার চেয়ে দীর্ঘ মেয়াদী একটি বীমা করা ভালো। এতে খরচ কম হয়।
সস্তায় জীবন বীমা পাওয়ার সবচেয়ে ভালো উপায় হলো ধুমপান বন্ধ করার চেষ্টা করা। ধুমপানকারিরা প্রায়ই অধুমপায়িদের চেয়ে দ্বিগুণ প্রিমিয়াম দিয়ে থাকে। আর এটা দিতে হয় প্রধানত সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য ঝুঁকির কারণে । তাই বীমার প্রিমিয়াম খরচ কমাতে চাইলে আজই ধুমপান বন্ধ করুন। স্বাস্থ্যবান জীবন যাপন করুন।
একটি বৃহৎ বীমাকৃত রাশির জন্য নিজেকে বীমা করুন। সর্বনিম্ন দামে সহজলভ্য বীমা পলিসি নির্বাচিত করুন। যেটি পূর্ণতার ওপর ভালো আয়ের প্রস্তাব দেয়। এজন্য ভালোভাবে বাজার যাচাই করে পলিসি কিনুন। রাইডার্স বা অতিরিক্ত সুবিধা ক্রয় করবেন না। এতে করে আপনার প্রিমিয়ামের পরিমাণ বেড়ে যাবে। তবে প্রয়োজনীয় ঝুঁকি কাভার করা থেকে বিরত থাকবেন না।
প্রকাশের তারিখ-২৪ মার্চ ২০১৬