দু'দশকে হংকং বীমাখাতের পরিধি বেড়েছে ৯ গুণ

ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক: ১৯৯৭ সালের পর থেকে গত দু'দশকে হংকং বীমাখাতের পরিধি বেড়েছে ৯ গুণ। বীমার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং চীনের মূল ভূখণ্ডে ব্যাপকভাবে এর চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় এই বিশেষ অঞ্চলের বীমা শিল্পে এমন অগ্রগতি দেখা দিয়েছে। যুক্তরাজ্যের কর্তৃত্ব থেকে হংকংকে চীনের কাছে হস্তান্তরের ২০ বছর পূর্তিতে সরকার প্রকাশিত তথ্যে এ চিত্র উঠে এসেছে।

পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০১৬ সালে হংকং বীমাখাতে প্রিমিয়াম সংগ্রহের পরিমাণ দাঁড়ায় ৪৪৮.৫৫ বিলিয়ন হংকং ডলার (৫৭.৫৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার) । এর আগে ১৯৯৭ সালে প্রিমিয়াম সংগ্রহের পরিমাণ ছিল ৫২ বিলিয়ন হংকং ডলার। অর্থাৎ এই সময়ে ব্যবধানে ৭৬৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

অঞ্চলটিতে ২০ বছর আগে বীমা পলিসির সংখ্যা ছিল ৩.৪৪ মিলিয়ন। গত বছর এই সংখ্যা দাঁড়ায় ১২.৬৬ মিলিয়ন। অর্থাৎ এই সময়ের ব্যবধানে বীমা পলিসির সংখ্যা বেড়েছে ৩ গুণ। একই সময়ে সেলস এজেন্টের সংখ্যা বেড়েছে ১৪১ শতাংশ। ১৯৯৭ সালে এজেন্টের সংখ্যা ছিল ৩৮ হাজার ৩৮৩ জন, যা ২০১৬ সালে এসে দাঁড়ায় ৯২ হাজার ৪৬৫ জন।

হংকং ফেডারেশন অব ইন্স্যুরার্স'র প্রধান নির্বাহী পিটার টাম বলেছেন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং নিজের ও পরিবারের সদস্যদের জন্য বীমা সুরক্ষার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে জনগণের সচেতনতা বেড়ে যাওয়া বিগত ২০ বছরে বীমাশিল্পে এই অগ্রগতি হয়েছে।

এছাড়া চীনের মূল ভূখণ্ডবাসীর জন্যও হংকংয়ের বীমাখাতে অগ্রগতি হয়েছে। কারণ, হংকংয়ের বীমা পণ্যগুলো মূল ভূখণ্ডবাসীর বেশি পছন্দ এবং কোম্পানিগুলোও তাদেরকে আকর্ষণীয় মুনাফা তথা বেশি সুযোগ-সুবিধা প্রদানের প্রস্তাব দেয়, বলেন পিটার।

১৯৯৭ সালের দিকে মূল ভূখণ্ডের বাসিন্দাদের বীমা পলিসি ও পণ্য ক্রয়ের কোন তথ্য নেই। কারণ, তাদের বীমা ক্রয়ের প্রবণতা পরবর্তী ১০ বছর পর্যন্ত শুরু হয়নি। তবে গত বছরের প্রথম ৯ মাসে মূল ভূখণ্ডের বাসিন্দারা হংকংয়ের বীমা পলিসি ক্রয়ে ৪৮.৯ বিলিয়ন হংকং ডলার ব্যয় করেছে। সরকারের সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, যা অঞ্চলটির সর্বমোট লাইফ বীমা প্রিমিয়ামের ৩৭ শতাংশ।

প্রথমবার প্রকাশিত সরকারের তথ্য অনুসারে, ২০১৫ সালের এপ্রিল থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৯ মাসে মূল ভূখণ্ডের বাসিন্দাদের পলিসি ক্রয়ের পরিমাণ ছিল ১.৮ বিরিয়ন হংকং ডলার। অর্থাৎ ২০১৫ সালের শেষ ৯ মাসের চেয়ে ২০১৬ সালের প্রথম ৯ মাসে ২৬ গুণ বেশি বীমা পলিসি ক্রয় করেছে দেশটির মূল ভূখণ্ডের বাসিন্দারা।

হংকংয়ের আইন প্রণেতা চ্যান কিন-পোর, যিনি বীমাখাতের প্রতিনিধিত্ব করেন। তিনি বলেছেন, বিগত দু'বছর ইউয়ানের মূল্য কমে যাওয়ায় হংকংয়ের বীমা পলিসি মূল ভূখণ্ডের বাসিন্দাদের মূখ্য কামনায় পরিণত হয়। অনেক বিনিয়োগকারী মূদ্রা ঝুঁকি এড়াতে তাদের সঞ্চয় চীনের সরকারি মুদ্রার বাইরে অন্যান্য সম্পদের মধ্যে রাখার চেষ্টা করে।

তিনি আরো বলেন, বিশ্বব্যাপী বিস্তৃত বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি করে দেয়ায় মূল ভূখণ্ডবাসী বীমা পলিসি ক্রয় বেশি পছন্দ করে এবং মূল ভূখণ্ডের বীমা পণ্যের চেয়ে হংকং এর বীমা পণ্য বেশি মুনাফা প্রদান করে। তাছাড় মূল ভূখণ্ডের বীমা পণ্য ক্রয়ে সীমাবদ্ধতাও অনেক বেশি বলে জানান চ্যান কিন-পোর। (সূত্র: এসসিএমপি)