লকডাউনে বীমা কোম্পানির অফিসও বন্ধ থাকবে: আইডিআরএ

নিজস্ব প্রতিবেদক: এবারের লকডাউনে বীমা কোম্পানির অফিসও খোলা থাকবে না। সরকারের নির্দেশনা মেনে আগামীকাল ১৪ থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ থাকবে বীমা খাতের সকল অফিস। আজ মঙ্গলবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের সদস্য (আইন) মো. দলিল উদ্দিন।

ইন্স্যুরেন্সনিউজবিডি’কে তিনি বলেন, চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করে সোমবার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার। ওই নির্দেশনা অনুসারে আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে বীমা খাতও বন্ধ রাখার কথা। তবে ব্যাংকের সাথে বীমা কোম্পানির সম্পর্ক থাকায় গতকাল চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি।

দলিল উদ্দিন বলেন, ব্যাংকগুলো বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়ার পর বীমা কোম্পানির অফিস আর খোলা রাখার প্রয়োজন নেই। তাই সরকারের নির্দেশনা অনুসারে বন্ধ থাকবে দেশের সকল লাইফ ও নন-লাইফ বীমা কোম্পানির অফিস। এ জন্য আলাদাভাবে কোন নির্দেশনাও জারি করা হবে না।

উল্লেখ্য, আগামী ১৪ থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত কিছু ব্যাংকের কয়েকটি বিশেষ শাখা ছাড়া সব ব্যাংকিং কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশের কেন্দ্রিয় ব্যাংক। তবে সার্বক্ষণিক খোলা থাকবে এটিএম, ইন্টারনেট ব্যাংকিংসহ অনলাইন সব সেবা। অন্যদিকে ব্যাংক বন্ধ থাকায় পুঁজিবাজারেও লেনদেন বন্ধ থাকবে।

এর আগে ৫ এপ্রিল ভোর ৬টা থেকে ১১ এপ্রিল রাত ১২টা পর্যন্ত সারাদেশে লকডাউন ঘোষণা করে গত ৪ এপ্রিল, ২০২১ প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। এসময় সরকারি নির্দেশনা মেনে সীমিত পরিসরে চালু রাখা হয় দেশের সকল লাইফ ও নন-লাইফ বীমা কোম্পানির অফিস। সীমিত পরিসরে লেনদেন চলে ব্যাংক ও পুঁজিবাজারেও।

কোভিড-১৯ সংক্রমণ উদ্বেগজনক হারে বাড়তে থাকায় আগের নির্দেশনার ধারাবাহিকতায় আগামী ১৪ এপ্রিল ভোর ৬টা থেকে ২১ এপ্রিল মধ্যরাত পর্যন্ত এবার ১৩টি নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। সেগুলো হলো-

সকল সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিস/আর্থিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে ও সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী নিজ নিজ কর্মস্থলে অবস্থান করবেন। তবে বিমান, সমুদ্র, নৌ ও স্থলবন্দর এবং এ সংশ্লিষ্ট অফিসগুলো এ নিষেধাজ্ঞার আওতাবহির্ভূত থাকবে।

বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আদালতগুলোর জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারি করবে।

সকল প্রকার পরিবহন (সড়ক, নৌ, রেল, অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক ফ্লাইট) বন্ধ থাকবে। তবে পণ্য পরিবহন, উৎপাদন ব্যবস্থা ও জরুরি সেবাদানের ক্ষেত্রে এই আদেশ প্রযোজ্য হবে না।

শিল্প-কারখানাগুলো স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় চালু থাকবে। তবে শ্রমিকদের নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থাপনায় আনা-নেয়া নিশ্চিত করতে হবে।

আইনশৃঙ্খলা এবং জরুরি পরিষেবা, যেমন- কৃষি উপকরণ (সার, বীজ, কীটনাশক, কৃষি যন্ত্রপাতি ইত্যাদি), খাদ্যশস্য ও খাদ্যদ্রব্য পরিবহন, ত্রাণ বিতরণ, স্বাস্থ্যসেবা, কোভিড-১৯ টিকা প্রদান, বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস/জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, বন্দরগুলোর (স্থলবন্দর, নদীবন্দর ও সমুদ্রবন্দর) কার্যক্রম, টেলিফোন ও ইন্টারনেট (সরকারি-বেসরকারি), গণমাধ্যম (প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া), বেসরকারি নিরাপত্তা ব্যবস্থা, ডাক সেবাসহ অন্যান্য জরুরি ও অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অফিস, তাদের কর্মচারী ও যানবাহন এ নিষেধাজ্ঞার আওতার বাইরে থাকবে।

অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া (ঔষধ ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি ক্রয়, চিকিৎসা সেবা, মৃতদেহ দাফন/সৎকার ইত্যাদি) কোনভাবেই বাড়ির বাইরে বের হওয়া যাবে না। তবে টিকা কার্ড প্রদর্শন সাপেক্ষে টিকা গ্রহণের জন্য যাতায়াত করা যাবে।

খাবারের দোকান ও হোটেল-রেস্তোরাঁয় দুপুর ১২টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা এবং রাত ১২টা থেকে ভোরর ৬টা পর্যন্ত কেবল খাদ্য বিক্রয়/সরবরাহ (সরাসরি/অনলাইন) করা যাবে। শপিংমলসহ অন্যান্য দোকান বন্ধ থাকবে।

কাঁচাবাজার এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত উন্মুক্ত স্থানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্রয়-বিক্রয় করা যাবে। বাজার কর্তৃপক্ষ/স্থানীয় প্রশাসন বিষয়টি নিশ্চিত করবে।

বোরো ধান কাটার জরুরি প্রয়োজনে কৃষি শ্রমিক পরিবহনের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসন সমন্বয় করবে।

সারা দেশে জেলা ও মাঠ প্রশাসন উল্লিখিত নির্দেশনা বাস্তবায়নের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়মিত টহল জোরদার করবে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক তার পক্ষে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজনীয় ক্ষমতা দেবেন।

স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে জুমা ও তারাবি নামাজের জমায়েত বিষয়ে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় নির্দেশনা জারি করবে।

এসব নির্দেশনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগ প্রয়োজনে সম্পূরক নির্দেশনা জারি করতে পারবে। ।