বেস্ট লাইফে কেন প্রশাসক নিয়োগ দেয়া হবে না জানতে চেয়েছে আইডিআরএ

নিজস্ব প্রতিবেদক: আইন অনুসারে ৬ মাসের বেশি মূখ্য নির্বাহীর পদ শূন্য রাখায় বেস্ট লাইফ ইন্স্যুরেন্সে কেন প্রশাসক নিয়োগ দেয়া হবে না তা জানতে চেয়েছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)। একই সাথে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে না তাও জানাতে ৭ দিনের সময় দেয়া হয়েছে। গত ১৯ ডিসেম্বর এ চিঠি দেয়া হয় বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, গত ১৮ মার্চ থেকে বেসরকারি বীমা কোম্পানি বেস্ট লাইফ ইন্স্যুরেন্সে মূখ্য নির্বাহী পদ শূণ্য রয়েছে। এ হিসেবে কোম্পানিটিতে মূখ্য নির্বাহীর পদ শূণ্য রয়েছে ৯ মাস ধরে।

তবে ইন্স্যুরেন্স নিউজ বিডি'র অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ২ অক্টোবর থেকে বেস্ট লাইফ ইন্স্যুরেন্সে মূখ্য নির্বাহীর পদ শূন্য রয়েছে। এ সময়ে কোম্পানিটির মূখ্য নির্বাহী একরামুল আমিন পদত্যাগ করা পর থেকেই পদটি শূণ্য হয়। এ হিসেবে মূখ্য নির্বাহী পদ শূণ্য রয়েছে ২৬ মাস ধরে।

চিঠিতে বলা হয়েছে, বীমা আইন ২০১০ এর ৮০ (৪) উপধারা অনুযায়ী বীমা কোম্পানির মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তার পদ একাধারে ৩(তিন) মাসের অধিক সময়ের জন্য শূণ্য রাখার বিধান নেই। তবে কর্তৃপক্ষ অপরিহার্য পরিস্থিতি বিবেচনায় উক্ত সময়সীমা আরো ৩ (তিন) মাস বর্ধিত করার বিধান রয়েছে।

এতে আরো বলা হয়, ৯ মাসের অধিক সময় অতিবাহিত হলেও বীমা কোম্পানি (মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়োগ ও অপসারণ) প্রবিধানমালা-২০১২ অনুযায়ী বেস্ট লাইফ যোগ্যতাসম্পন্ন কোন ব্যক্তিকে মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা পদে নিয়োগে ব্যথ হয়েছে। কোম্পানির মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা পদটি ৯ মাসের অধিক সময় ধরে শূন্য থাকায় বীমা আইন, ২০১০ এর ৮০ (৪) উপ-ধারা সুস্পষ্ট লঙ্ঘিত হয়েছে।

বীমা আইন ২০১০ এর ৮০ (৪) উপ-ধারা সুস্পষ্ট লঙ্ঘিত হওয়ায় উক্ত আইনের ৮০ (৫) উপ-ধারার বিধান মোতাবেক বেস্ট লাইফের কর্তৃপক্ষ কর্তৃক কেন প্রশাসক নিয়োগ দেয়া হবে না এবং বীমা আইন ২০১০ এর ১৩০ ধারা অনুযায়ী কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তা পত্র প্রাপ্তির ৭ কার্যদিবসের মধ্যে ব্যাখা প্রদান করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে চিঠিতে।

জানা গেছে, ২০১৯ সালের ২ অক্টোবর পদত্যাগ করেন বেস্ট লাইফ ইন্স্যুরেন্সের মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা একরামুল আমিন। এরপর একই বছরের অক্টোবরে কোম্পানিটির মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা(সিসি) হিসেবে যোগদান করেন এম সোলাইমান হোসেন। তিনিও ২০২১ সালের ১৬ মার্চ প্রতিষ্ঠানটি থেকে পদত্যাগ করেন। মূখ্য নির্বাহী পদে সোলাইমান হোসেন নিয়োগ অনুমোদনের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছিল কোম্পানিটি। সোলাইমান হোসেন পদত্যাগ করার পর শহিদুল ইসলামকে মূখ্য নিবার্হী কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেয় বেস্ট লাইফ।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, শহিদুল ইসলাম গত প্রায় ৫ বছরে ৩টি কোম্পানিতে মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তার চলতি দায়িত্বে চাকরি নেন। পূর্ণাঙ্গ মূখ্য নির্বাহী হিসেবে নিয়োগের জন্য তার নাম প্রস্তাব করার আগ মুহুর্তে তিনি চাকরি ছেড়ে দেন।

শহিদুল ইসলাম ২০১৫ সালের ৫ মে চাকরি নেন চার্টার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্সে। এ কোম্পানিটিতে তিনি পৌঁনে ৪ বছর মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তার চলতি দায়িত্বে মোটা বেতনে চাকরি করেন। পরে ২০১৯ সালের ২৩ মে তিনি অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে চাকরি নেন সানলাইফ ইন্স্যুরেন্সে। পরের বছর ২ নভেম্বর ওই কোম্পানি থেকে চাকরি ছেড়ে দেন। এর মধ্যে ২০২০ সালের ৪ জুন থেকে তিনি কোম্পানিটির মূখ্য নির্বাহীর চলতি দায়িত্বে ছিলেন।

এর আগে সানলাইফ ইন্স্যুরেন্সে শহিদুল ইসলামের দাখিল করা দারুল ইহসানের বিএ ও এমএ পাসের সনদের নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করে ইন্স্যুরেন্স নিউজ বিডি। এখানে ক্লিক করুন

বেস্ট লাইফের মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা শহিদুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।