বীমা কোম্পানিগুলো এফআরসি’র নির্দেশনা মানছে না: ড. হামিদ উল্লাহ

নিজস্ব প্রতিবেদক: বীমা কোম্পানিগুলো ফাইনান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিল (এফআরসি)’র কোন নির্দেশনা মানছে না বলে অভিযোগ তুলেছেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান ড. হামিদ উল্লাহ ভূঁইয়া। তিনি বলেন, কোম্পানিগুলোকে এখন পর্যন্ত যতগুলো চিঠি দেয়া হয়েছে তার কোনটির-ই উত্তর দেয়নি।

সোমবার (২০ মার্চ) রাজধানীর পল্টনে ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরাম (সিএমজেএফ) আয়োজিত ‘সিএমজেএফ টক’ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। সিএমজেএফের সাধারণ সম্পাদক আবু আলীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির সভাপতি জিয়াউর রহমান।

ড. হামিদ উল্লাহ ভূঁইয়া বলেন, জীবন বিমা কোম্পানিগুলো কখনো প্রফিট অ্যান্ড লস অ্যাকাউন্ট করে না। তারা একটা অ্যাকাউন্ট করে, সেটি হলো রেভিনিউ অ্যাকাউন্ট। কিন্তু আইএএস-১ স্পষ্ট বলা আছে, প্রফিট অ্যান্ড লস অ্যাকাউন্ট করতে হবে। আপনার কোম্পানির নেচার যাই হোক না কেন। কিন্তু এরা এটা করে না।

এফআরসি চেয়ারম্যান বলেন, দেশে কোনো ব্যাংকের আর্থিক বিবরণী নিরীক্ষায় আন্তর্জাতিক হিসাব মান বা ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং স্ট্যান্ডার্ড (আইএফআরএস) মানা হয় না। এ কারণে ব্যাংকগুলোর আর্থিক স্বাস্থ্যের প্রকৃত চিত্র এসব আর্থিক প্রতিবেদনে উঠে আসে না।

তিনি বলেন, ব্যাংকের হিসাববিবরণী নিরীক্ষায় আইএফআরএস তথা আন্তর্জাতিক মান অনুসরণ করা হলে তাদের সম্পদ ৪০ শতাংশ অবলোপন করতে হবে সহজ কথায় সম্পদ ৪০ শতাংশ কমে যাবে। আমরা চাই এটি (আইএফআরএস) বাস্তবায়ন করা হোক, তাহলে ব্যাংকের প্রকৃত চিত্র উঠে আসবে। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংক মেনে নিচ্ছে না।

ড. হামিদ উল্লাহ ভূঁইয়া বলেন, এফআরসিতে জনবলের ঘাটতি আছে। নতুন জনবল নিয়োগ প্রক্রিয়াধীন আছে। এটি হয়ে গেলে তিনি প্রথমেই পুঁজিবাজারের প্রতি মনোযোগ দেবেন।

তিনি বলেন, হিসাববিবরণীকে ব্যবহার করে পুঁজিবাজারে অনেক কারসাজি করা হয়ে থাকে। আইপিওতে অনেক দূর্বল কোম্পানি চলে আসে। দেখা যায়, আইপিওতে আসার আগে ৩ বছর টানা মুনাফা বাড়ছে, আইপিওর বছরে সবচেয়ে বেশি মুনাফা হচ্ছে। কিন্তু আইপিওতে আসার পর ওই মুনাফা ক্রমাগত কমতে থাকে।

 

তিনি আরও বলেন, পুঁজিবাজারে কারসাজি হলে প্রান্তিক বিনিয়োগকারীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হন। এখানে অনেক কোম্পানির শেয়ারের দাম অস্বাভাবিক হারে বাড়তে থাকে, অথচ তাদের কোনো মূল্য সংবেদনশীল তথ্য নেই। ‌কোম্পানিগুলোর মূল্য সংবেদনশীল তথ্যের ভেলিডিটেশন যাচাই করা খুব জরুরি।

এফআরসি চেয়ারম্যান বলেন, হিসাববিবরণী নিরীক্ষায় স্বচ্ছতা বাড়াতে তারা নিরীক্ষকদের নিবন্ধনের উদ্যোগ নিয়েছেন। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে এটি সম্পন্ন হবে। এর পর থেকে এফআরসিতে অনিবন্ধিত কোনো নিরীক্ষক পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি, ব্যাংক, এনবিএফআই, ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিসহ জনস্বার্থসংশ্লিষ্ট কোনো কোম্পানির নিরীক্ষা করতে পারবে না।

তালিকাভুক্ত নিরীক্ষকদের মধ্য থেকে ব্যাংক ও পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি নিরীক্ষার জন্য আলাদা প্যানেল তৈরি করে দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।