হোমল্যান্ড লাইফে গ্রাহকদের ১০৪ কোটি টাকা লুটের ঘটনা তদন্তে হাইকোর্টের নির্দেশ
নিজস্ব প্রতিবেদক: হোমল্যান্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির গ্রাহকদের ১০৪ কোটি টাকা লুটের ঘটনা তদন্ত করতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)’কে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
বুধবার (২৯ মার্চ) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াত সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
কোম্পানিটির ১৪ বীমা গ্রাহকের পক্ষে রাহিমা আক্তার নামে একজন গ্রাহকের দায়ের করা রিটের শুনানি শেষে এ আদেশ দেন হাইকোর্ট।
গত ৫ মার্চ হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিট দায়ের করেন রাহিমা আক্তার।
রিটে অর্থ সচিব, বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান, হোমল্যান্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্সের চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানসহ কোম্পানিটির ১৪ পরিচালককে বিবাদী করা হয়।
রিটকারিদের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মো. রুহুল কুদ্দুস কাজল, সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট আক্তার রসুল মুরাদ, আব্দুল্লাহিল মারুফ ফাহিম ও মো. দিদারুল আলম দিদার।
ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, আদালত শুনানি শেষে আজ হোমল্যান্ড লাইফের ১০৪ কোটি ৬ লাখ ৩৮ হাজার ৬৭৮ টাকা লুটের অভিযোগ তদন্ত করে দুই মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ও দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যানের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন।
পাশাপাশি বিষয়টি নিয়ে তদন্তের কেন নির্দেশ দেয়া হবে না- দুই সপ্তাহের মধ্যে কারণ দর্শাতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি রুল জারি করেছে আদালত। একই সাথে দুদক বরাবর হোমল্যান্ড লাইফের ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকদের একটি আবেদন আগামী দুই মাসের মধ্যে পজিটিভলি নিষ্পত্তি করতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
আগামী ৪ জুন মামলাটির তারিখ ধার্য রাখা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ৬ ফেব্রুয়ারি ‘গ্রাহকের ১০৪ কোটি টাকা যেভাবে লুট হয়েছে হোমল্যান্ড লাইফে’ শীর্ষক সংবাদ প্রকাশ করে ইন্স্যুরেন্স নিউজ বিডি। পরবর্তীতে দেশের শীর্ষস্থানীয় দৈনিকগুলোতেও এ সংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশিত হয়। গণমাধ্যমে প্রকাশিত এসব প্রতিবেদন সংযুক্ত করে এই রিট দায়ের করা হয়।
সংবাদে বলা হয়, লন্ডন প্রবাসী সিলেটের পরিচালকদের একটি গ্রুপে প্রতারণার খপ্পরে পড়ে হোমল্যান্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স। কোম্পানির বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে সিলেটেই অনুষ্ঠিত হতো পরিচালনা পর্ষদের বৈঠক। ওই গ্রুপটির বিরুদ্ধে কোম্পানিটির তহবিল থেকে জালিয়াতির মাধ্যমে ১০৪ কোটি টাকা আত্মসাতের প্রমাণ পাওয়া গেছে। অনুসন্ধানে চাঞ্চল্যকর এ তথ্য।
বোর্ড সভার কার্যবিবরণী জালিয়াতি, জমি কিনতে ভুয়া নথি তৈরি, কমিশন ও অন্যান্য খাতে খরচের ভাউচার তৈরি করে এসব টাকা আত্মসাৎ করা হয়। নথিপত্রে দেখা গেছে, এই প্রতিষ্ঠানের নামে অস্তিত্ববিহীন জমি কেনা হয়েছে। আবার সেই জমিতে মাটি ভরাট ও কাঁটাতারের বেড়া তৈরির নামে আরও অর্থ লোপাট করা হয়েছে।