কোভিড-১৯: সমাজের বিত্তবান নাগরিকদের দায়িত্ব ও কর্তব্য

এ কে এম এহসানুল হক, এফসিআইআই: করোনা ভাইরাসের মতো মহাদুর্যোগ আমাদের জীবনে প্রতিনিয়ত আসে না। অতীতে পৃথিবীর মানুষ কখনো নিজেদের সৃষ্ট (প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ) এবং মহামারী যেমন প্লেগ, কলেরা, স্প্যানিস ফ্লু ইত্যাদি দুর্যোগের সম্মুখীন হয়েছে। কিন্তু করোনা ভাইরাস সম্পূর্ণ ব্যতিক্রমধর্মী। এর ভয়াবহতা স্মরণাতীতকালের সকল দুর্যোগকে হার মানিয়েছে। করোনা যেন সমগ্র বিশ্বকে গ্রাস করার মতলব নিয়ে মাঠে অবতীর্ণ হয়েছে।

তবে আশার কথা এই যে, মানুষের অদম্য মনোবল এবং অসীম সাহসের কাছে শেষ পর্যন্ত সকল শত্রু পরাজয় বরণ করেছে এবং পিছু হাঁটতে বাধ্য হয়েছে। বর্তমানে মানবজাতি এক সাময়িক দুর্যোগের মধ্য দিয়ে সময় অতিবাহিত করছে। অবশ্যই একদিন এ দুর্যোগপূর্ণ অবস্থার অবসান ঘটবে। মানুষ আবার স্বস্তির নিশ্বাস ফেলতে পারবে এবং স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসবে।

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বিশেষ করে গরীব শ্রেণীর জন্য এটি একটি মহাদুর্যোগ হিসেবে দেখা দিয়েছে। একদিকে করোনা ভাইরাসের কারণে মৃত্যুর ভয়, অন্যদিকে ক্ষুধার জ্বালা নিবারণের তাগিদ। এই উভয় সঙ্কটের যাতাকলে এদের জীবন দুর্বিষহ এবং বিভীষিকাময় হয়ে উঠেছে।

এখনই সময় এই সমস্ত দুঃস্থ বিপর্যন্ত অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর, তাদের নগদ টাকা এবং ত্রাণ সামগ্রী দিয়ে সাহায্য করা। ছিন্নমূল গরীব মানুষ আকুল দৃষ্টিতে সমাজের বিত্তবান নাগরিকদের দিকে সাহায্যের আশায় বুক বেঁধে তাকিয়ে আছে।

বাঁচা-মরার এই সন্ধিক্ষণে তাদের নিরাশ করা কোনভাবেই সমুচিত হবে না। এ ব্যাপারে আমাদের ব্যর্থতা নিতান্তই স্বার্থপরতার পরিচয় বহন করবে। আর আমরা এর জন্য আমাদের বিবেকের কাছে দায়ি থাকব।

জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে সরকারি এবং বেসরকারি উদ্যোগ এবং অনুদানের পাশাপাশি সমাজের বিত্তবান নাগরিকরা নিজেদের সুখ স্বাচ্ছন্দ সাময়িকভাবে বিসর্জন দিয়ে অকপটে মানবতার সেবায় এগিয়ে আসবেন এটাই তাদের কাছে জাতির প্রত্যাশা।

লেখক: জেনারেল সেক্রেটারি, বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স প্রফেশনালস সোসাইটি (বিআইপিএস) ।