লকডাউনের অজুহাতে দাবি পরিশোধ করছে না বীমা কোম্পানি
এ কে এম এহসানুল হক, এফসিআইআই: বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)’র কঠোর নির্দেশনা সত্ত্বেও করোনা ভাইরাসের কারণে লকডাউনের অজুহাতে বীমা গ্রাহকদের মেয়াদ উত্তীর্ণ পলিসির দাবি বীমা কোম্পানিগুলো পরিশোধ করছে না বলে জানা গেছে।
অথচ গত ১৯ এপ্রিল জারিকৃত ৭৬/২০২০ নং সার্কুলারে লাইফ বীমায় মেয়াদ উত্তীর্ণ পলিসিসমূহের বিপরীতে প্রাপ্য দাবি ৯০ দিনের পরিবর্তে ৩০ দিনের মধ্যে পরিশোধের নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। করোনা ভাইরাসের প্রভাবে সৃষ্ট অর্থসংকটে বীমা গ্রাহকদের সহযোগিতা করার স্বার্থে এই নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এক্ষেত্রে গ্রাহকের আবেদনের অপেক্ষা না করে করপোরেশন বা কোম্পানিসমূহের ডাটাবেইজ থেকে মেয়াদ উত্তীর্ণ পলিসির তালিকা নিয়ে বীমা গ্রাহকের সাথে যোগাযোগ করে অনলাইনে গ্রাহকের ব্যাংকে বীমা দাবির টাকা পরিশোধের ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে।
এখন স্বাভাবিকভাবেই যে প্রশ্নটি উঠে এসেছে সেটি হচ্ছে- লকডাউন আদেশ কতটা সময় বলবৎ থাকবে? আসলে বিষয়টি অনিশ্চয়তার মুখে রয়েছে। কারণ এটা বহুলাংশে নির্ভর করছে আগামী দিনগুলোতে দেশের করোনা ভাইরাসের সামগ্রিক পরিস্থিতির ওপর।
জীবনের ঝুঁকি গ্রহণের পাশাপাশি জীবন বীমা বাধ্যতামূলকভাবে সঞ্চয়ের অভ্যাস গড়ে তুলতে সাহায্য করে। করোনা ভাইরাসের কারণে সৃষ্ট বর্তমান দুর্যোগময় সময়ে এবং চরম আর্থিক সঙ্কটের মুখে বীমা গ্রাহকদের টাকার প্রয়োজন কতটা প্রকট তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
বীমাগ্রহীতার প্রয়োজনে সময়মতো তার দীর্ঘ দিনের সঞ্চিত বীমার টাকা হাতে না পেলে বীমার প্রকৃত অর্থ ব্যর্থ হতে বাধ্য এবং বীমা করার কোন সার্থকতা খুঁজে পাওয়া যাবে না। সময়মতো বীমা দাবি পরিশোধ না করা গ্রাহক স্বার্থের সম্পূর্ণ পরিপন্থী, যা জনমনে বীমা কোম্পানি সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা জন্মাতে সাহায্য করবে।
সময়মতো মেয়াদ উত্তীর্ণ বীমা পলিসির দাবি এবং মৃত্যুদাবি পরিশোধ না করা কেবলমাত্র বীমা চুক্তির বরখেলাপই নয় বরং বীমা আইনের লঙ্ঘনও বটে।
লেখক: জেনারেল সেক্রেটারি, বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স প্রফেশনাল সোসাইটি (বিআইপিএস) ।