মোটরযান অধ্যাদেশ, ১৯৮৩’র ধারা ১০৯ পুনর্বহাল প্রসঙ্গে
এ কে এম এহসানুল হক, এফসিআইআই: অতীতে মোটরযান অধ্যাদেশ, ১৯৮৩’র ধারা ১০৯ এর মাধ্যমে থার্ড পার্টি মোটর বীমা বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল, যা আন্তর্জাতিক রোড ট্রাফিক অ্যাক্টের সমকক্ষ বা সামঞ্জস্যপূর্ণ।
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে রোড ট্রাফিক অ্যাক্টের মাধ্যমে থার্ড পার্টি মোটর বীমা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এই অ্যাক্ট অনুযায়ী বাধ্যতামূলক থার্ড পার্টি বীমা ক্রয় করা ছাড়া সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে গাড়ি নিবন্ধন করা যেমন সম্ভব নয় তেমনি ব্যবহারের জন্য গাড়ি রাস্তায় বের করা বেআইনী বা অবৈধ।
সাধারণ পাঠকের অবগতির জন্য থার্ড পার্টি মোটর বীমা যে সমস্ত ঝুঁকি বহন করে নিম্নে তা বর্ণনা করা হলো:
১। থার্ড পার্টির মৃত্যু।
২। থার্ড পার্টির শারীরিক অনিষ্ঠতা (Injury) এবং
৩। থার্ড পার্টির সম্পত্তির ক্ষয়-ক্ষতি।
দৃষ্টান্তসরূপ ধরা যাক, মোটর গাড়ির মালিক বা তার বেতনভুক্ত ড্রাইভারের অবহেলা বা অসাবধানতার কারণে যদি থার্ড পার্টি উপরে বর্ণিত ক্ষতির সম্মুখীন হয় তবে আইনগতভাবে তার উপর সকল দায়িত্ব বর্তায়।
এখানে বলে রাখা প্রয়োজন যে, গাড়ির মালিক থার্ড পার্টি বীমা ক্রয়ের মাধ্যমে উপরে বর্ণিত ঝুঁকিসমূহ হস্তান্তর করতে পারে।
পৃথিবীর অনেক দেশে সময়ে সময়ে বিভিন্ন দিক যেমন মুদ্রাস্ফিতি, সামাজিক এবং অর্থনৈতিক অবস্থা বিবেচনা করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ থার্ড পার্টি মোটর বীমার ক্ষতিপূরণ পুনর্বিবেচনা করে থাকে।
এ ব্যাপারে সকল প্রকার আন্তর্জাতিক নিয়ম কানুন উপেক্ষা করে বীমা কর্তৃপক্ষের সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ এর মাধ্যমে থার্ড পার্টি বীমা বাতিলের কোন যৌক্তিকতা থাকতে পারে না।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে কার স্বার্থে এই আইনটি পাশ করা হয়েছে। এখানে বির্তকের কোন অবকাশ নেই যে, আইনটি সম্পূর্ণভাবে জনস্বার্থের পরিপন্থী।
এমতাবস্থায় জনস্বার্থের খাতিরে কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব হচ্ছে অবিলম্বে সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ বাতিল করে মোটরযান অধ্যাদেশ, ১৯৮৩ এর ধারা ১০৯ পুনর্বহালের মাধ্যমে সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত থার্ড পার্টির আইনগত অধিকার প্রতিষ্ঠা করা।