বীমা খাতে সীমাহীন দুর্নীতি প্রসঙ্গে

এ কে এম এহসানুল হক, এফসিআইআই: গতকাল ২৪ জুলাই এই পত্রিকায় ‘অবৈধভাবে ৬০ কোটি টাকার কমিশন লেনদেন, ৩ লাখ টাকাতেই মাফ’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে।

কমিশনের নামে প্রগ্রেসিভ লাইফের ৬০ কোটি টাকা আত্মসাৎ এক মারাত্মক অপরাধের শামিল। যা সহজভাবে দেখার কোন সুযোগ নাই।

বীমা গ্রাহকের জমা করা প্রিমিয়ামের টাকা এক প্রকার আমানত। আর সেই আমানতের খেয়ানত এক মস্তবড় অপরাধ।

হিসাব অনুযায়ী জরিমানার মোট টাকার পরিমাণ দাঁড়ায় ৪ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। কিন্তু যে কোন অজ্ঞাত কারণে বীমা কতৃর্পক্ষ প্রগ্রেসিভ লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিকে নামে মাত্র ৩ লাখ টাকা জরিমানা করে দায়মুক্তি দেয়।

যার অর্থ দাঁড়ায় সরকারী কোষাগারে মোট ৪ কোটি ৪৪ লাখ টাকা জমা হওয়ার পরিবর্তে মাত্র ৩ লাখ টাকা জমা হয়েছে।

স্বভাবতই প্রশ্ন জাগে সরকারের এবং বীমা গ্রাহকের স্বার্থক্ষুন্ন করে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ কার স্বার্থ রক্ষা করে চলছে!

এই ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীন সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা কি বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষকে দেয়া হয়েছে? -নিশ্চই না।

এই ধরনের দুর্নীতি কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।

বীমা আইন অনুযায়ী এই ধরনের দুর্নীতির জন্য জরিমানার পাশাপাশি বীমা কোম্পানির নিবন্ধন বা লাইসেন্স বাতিল করা প্রয়োজন। এতে করে অন্যান্য বীমা কোম্পানি এই ধরণের দুর্নীতি করার সাহস বা স্পর্ধা দেখাতে পারবে না।

বীমা বিশেষজ্ঞদের মতে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের এই ধরণের সহজ ও দয়ালু মনোভাব কেবল দুর্নীতিকে উৎসাহিত করতে সহায়তা করবে। যা মোটেই কাম্য নয়।

বীমা খাতে দুর্নীতি এক মারাত্মক ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে। যার নিরাময় হওয়া প্রয়োজন।

এই সীমাহীন দুর্নীতির এখনই লাগাম টানতে হবে। তা না হলে বীমা খাতের উন্নয়ন তো দূরের কথা, উল্টো খাতটির ভবিষ্যত গভীর অন্ধকারে নিমজ্জিত হতে বাধ্য।

আশা করি বিষয়টির গুরুত্ব বিবেচনা করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় (অর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ) এবং দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বিষদভাবে এর তদন্ত করবে এবং এই দুর্নীতির সাথে জড়িত সকলকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করবে।