বীমা খাতে দক্ষ জনবল গড়ে তুলতে প্রয়োজনীয় করণীয়সমূহ

এ কে এম এহসানুল হক, এফসিআইআই: বীমা খাতের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলেরই এ কথা অজানা থাকার কথা নয় যে, এই খাত দক্ষ জনবলের চরম সংকটে ভুগছে।  বীমা খাতের উন্নতি এবং অগ্রযাত্রায় এটি একটি প্রধান প্রতিবন্ধকতা হিসেবে কাজ করছে।

এই সংকট নিরসনে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া সত্ত্বেও অধিকাংশ বীমা কোম্পানির অনাগ্রহ এবং অনীহার কারণে এ ব্যাপারে তেমন কোন উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন পরিলক্ষিত হচ্ছে না। এ ব্যাপারে বীমা কোম্পানির ভূমিকায় তাদের সদিচ্ছার অভাব প্রতিফলিত হয়।

দৃষ্টান্তসরূপ: জীবন বীমা কোম্পানির বেলায় একচ্যুয়ারিয়াল ডিপার্টমেন্ট প্রতিষ্ঠা এবং সকল বীমা কোম্পানির বেলায় বীমা শিক্ষায় শিক্ষিত, বীমা ডিপ্লোমা বা ডিগ্রিধারীদের উৎসাহিত ও অনুপ্রাণিত করার জন্য চাকরিতে পদোন্নতি প্রদান, বেতন-ভাতা বৃদ্ধি এবং সুযোগ-সুবিধাসহ বিভিন্ন প্রনোদনা প্রদান ইত্যাদি।

বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন সময় দক্ষ জনবল গড়ে তোলার ব্যাপারে বীমা কোম্পানিকে সার্কুলার ইস্যু করা সত্ত্বেও অধিকাংশ বীমা কোম্পানি এ ব্যাপারে কর্ণপাত করছে না। যা কর্তৃপক্ষের সাথে একপ্রকার অসহযোগিতা এবং নির্দেশ অমান্য করার শামিল।

বীমা কোম্পানি বিভিন্নভাবে বিভিন্ন খাতে প্রচুর টাকা ব্যয় করে থাকে। দক্ষ জনবল তৈরির ব্যাপারে তাদের উদাসীনতা এবং নিরুৎসাহ কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।  এই ধরণের দরিদ্র এবং হীনমন্যতা এক ধরণের দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয় বহন করে।

এই পরিস্থিতিতে বীমা খাতের উন্নতি এবং ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের উচিত উপরে বর্ণিত বিষয়সমূহ বীমা কোম্পানির খেয়াল-খুশী বা মর্জির ওপর ছেড়ে না দিয়ে তাদের জন্য এগুলো বাস্তবায়ন বাধ্যতামূলক করা।

এ ছাড়াও বীমা কোম্পানিগুলোর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়মিত প্রশিক্ষণ প্রদান এবং বীমা শিক্ষায় আগ্রহীদের বীমা ডিপ্লোমা অর্জনের জন্য খরচ বহন ইত্যাদিও বীমা কোম্পানির জন্য বাধ্যতামূলক করতে হবে। একইসাথে বীমা খাতে দক্ষ জনবল তৈরির ব্যাপারে বীমা কোম্পানিগুলোকে অগ্রণী এবং দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। অন্যথায় বর্তমান নৈরাজ্যজনক অবস্থা পরিবর্তন সম্ভব নয়।