শ্রীলঙ্কার বীমা খাতের স্থিতিশীল প্রবৃদ্ধি, দ্বিতীয় প্রান্তিকে প্রিমিয়াম আয় বেড়েছে ১৬ শতাংশ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: শ্রীলঙ্কার বীমা শিল্প ২০২৫ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধি ধরে রেখেছে। এ সময়ে সামগ্রিক প্রিমিয়াম আয় ১৬ শতাংশ বেড়ে খাতটিকে দেশের আর্থিক ব্যবস্থায় আরও গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে নিয়ে গেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, জীবন ও সাধারণ বীমা খাতে প্রবৃদ্ধি ইতিবাচক হলেও পুনঃবীমা খাতের মূলধন সংকট ভবিষ্যতে চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে।

প্রান্তিক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, জীবন বীমা খাতের প্রিমিয়াম আয় বেড়েছে ২২ শতাংশ, যা খাতটির দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতা ও গ্রাহক আস্থার প্রতিফলন। খাতটির মোট সম্পদও বেড়েছে ১৬ শতাংশ। এর মধ্যে ইকুইটিতে বিনিয়োগ ৫০ শতাংশ, ব্যাংক আমানতে ৩৩ শতাংশ এবং করপোরেট ঋণে ২৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। একই সঙ্গে মূলধনভিত্তি বিগত বছরের তুলনায় ১০ শতাংশ উন্নত হয়েছে, যা জীবন বীমা শিল্পকে আরও শক্তিশালী আর্থিক সক্ষমতা দিয়েছে।

সাধারণ বীমা খাতও প্রবৃদ্ধি ধরে রেখেছে। এ প্রান্তিকে প্রিমিয়াম আয় বেড়েছে ৮.৬ শতাংশ এবং সম্পদ বেড়েছে ১০ শতাংশ। বিনিয়োগের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে— ইউনিট ট্রাস্টে ৯৪ শতাংশ, সহযোগী প্রতিষ্ঠানে ৭৮ শতাংশ এবং ইকুইটিতে ৫৯ শতাংশ বৃদ্ধি। খাতটির মূলধন ১২ শতাংশ বেড়ে যাওয়ায় বাজার স্থিতিশীলতা আরও জোরদার হয়েছে।

যদিও পুনঃবীমা খাতের সম্পদ ৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, মূলধন বিগত বছরের তুলনায় ৫০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, এটি খাতটির আর্থিক টেকসইতার জন্য একটি বড় হুমকি। মূলধন ঘাটতি দ্রুত সমাধান করা না গেলে ভবিষ্যতে পুনঃবীমা খাত সামগ্রিক শিল্পে অস্থিতিশীলতা তৈরি করতে পারে।

রিটেনশন রেশিও জীবন বীমা খাতে দাঁড়িয়েছে ৯৫.৯৪ শতাংশ, যা গ্রাহক আস্থা ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার সক্ষমতা তুলে ধরে। সাধারণ বীমা খাতে এ হার ৮০.৪২ শতাংশ। দাবি নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে জীবন বীমা খাত ২২ শতাংশ বেশি দাবি পরিশোধ করেছে, অন্যদিকে সাধারণ বীমা খাত দাবি ১ শতাংশ কমাতে সক্ষম হয়েছে।

অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, জীবন ও সাধারণ বীমা খাতের ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি শ্রীলঙ্কার বীমা শিল্পকে আঞ্চলিক বাজারে প্রতিযোগিতামূলক অবস্থানে নিয়ে যাচ্ছে। বিনিয়োগ বৈচিত্র্য এবং মূলধন বেড়ে যাওয়ায় খাতটির দীর্ঘমেয়াদি ভিত্তি আরও দৃঢ় হয়েছে। তবে পুনঃবীমা খাতের মূলধন সংকটের ঝুঁকি মোকাবিলায় দ্রুত নীতি সহায়তা ও কাঠামোগত সংস্কার জরুরি। (সংবাদ সূত্র: এশিয়া ইনস্যুরেন্স রিভিউ)