জাপানের নন-লাইফ বীমা খাতে রেকর্ড আয়
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: জাপানের নন-লাইফ বীমা শিল্প ২০২৪ অর্থবছরে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। প্রিমিয়াম আয় বৃদ্ধি ও বিনিয়োগ আয়ের উন্নতির ফলে খাতটির নিট আয় দাঁড়িয়েছে ১২.৪ বিলিয়ন ডলার। জেনারেল ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশন অব জাপান’র (জিআইএজে) প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, এই সাফল্য শিল্পটিকে আরও শক্তিশালী অবস্থানে নিয়ে গেছে।
জিআইএজে- এর সদস্যভুক্ত ৩১টি কোম্পানির মোট নিট প্রিমিয়াম আয় আগের বছরের তুলনায় ৩.০৪ বিলিয়ন ডলার বাড়িয়ে দাঁড়িয়েছে ৬৫.১ বিলিয়ন ডলার। অগ্নি ও মোটর বীমা পণ্যে নতুন কাঠামো এবং প্রিমিয়াম হারের সমন্বয় এই প্রবৃদ্ধিকে এগিয়ে নিয়েছে।
২০২৪ সালের জানুয়ারির নোটো উপদ্বীপে ভূমিকম্প এবং মুদ্রাস্ফীতিজনিত কারণে গাড়ি দুর্ঘটনার দাবি বাড়ায় মোট দাবি পরিশোধ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৭.৯ বিলিয়ন ডলার। তবে টাইফুন-সংক্রান্ত দাবির চাপ কমে যাওয়ায় ক্ষতি কিছুটা সামাল দেওয়া সম্ভব হয়েছে। একই সময়ে খরচ ২০.৮ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছালেও প্রিমিয়াম আয়ের বৃদ্ধির ফলে খরচের অনুপাত উন্নতি লাভ করেছে।
আন্ডাররাইটিং মুনাফা সামান্য কমলেও বিনিয়োগ আয় ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে সাধারণ মুনাফা দাঁড়িয়েছে ১৫.৩ বিলিয়ন ডলার। সবশেষে কর বাদ দিয়ে নিট আয় গত বছরের তুলনায় ৬.২৭ বিলিয়ন ডলার বেড়ে ১২.৪ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে।
জাপানের নন-লাইফ বীমা বাজার দীর্ঘদিন ধরে তিনটি বৃহৎ গ্রুপ- এমএসঅ্যান্ডএডি ইন্স্যুরেন্স গ্রুপ হোল্ডিংস, সোমপো হোল্ডিংস এবং টোকিও মেরিন হোল্ডিংস- দ্বারা প্রভাবিত। ১৯৯৬ সালের আর্থিক উদারীকরণের পর একীভূতকরণের ধারাবাহিকতায় এই কাঠামো তৈরি হয়েছে। বর্তমানে দেশটিতে ৫৭টি সাধারণ বীমা কোম্পানি কার্যক্রম পরিচালনা করছে, এর মধ্যে ৩৫টি দেশীয়ভাবে নিবন্ধিত এবং ২২টি বিদেশি বীমা প্রতিষ্ঠানের শাখা।
২০২৭ সালের মধ্যে এমএসঅ্যান্ডএডি তাদের দুটি প্রধান ইউনিট- মিতসুই সুমিতোমো ইন্স্যুরেন্স এবং আইওই নিসাই দোয়া ইন্স্যুরেন্স- একীভূত করার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে।
প্রচলিত কোম্পানির পাশাপাশি কোঅপারেটিভ বা কিওসাই সংগঠনগুলোও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে। ২০২৩ অর্থবছরে তারা প্রায় ১৪.৩ বিলিয়ন ডলারের প্রিমিয়াম আয় করেছে। এছাড়া ক্ষুদ্র ও স্বল্পমেয়াদি বীমা খাত (এসএএসটিআই) দ্রুত বিস্তার লাভ করছে, যা তুলনামূলক কম মূলধনে ভাড়াটিয়া বীমা, পোষা প্রাণীর বীমা এবং দায়বদ্ধতা সংক্রান্ত পণ্য সরবরাহ করছে। অনেক এসএএসটিআই কোম্পানি এখন পূর্ণাঙ্গ বীমা প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরের পরিকল্পনাও করছে।
প্রিমিয়াম আয় এবং বিনিয়োগ আয়ের যুগপৎ প্রবৃদ্ধি জাপানের নন-লাইফ বীমা খাতকে একটি শক্তিশালী অবস্থানে দাঁড় করিয়েছে। শিল্প বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই প্রবৃদ্ধি শুধু বড় কোম্পানিগুলোকেই নয়, বরং বিকল্প ও ক্ষুদ্র বীমা খাতকেও নতুন সম্ভাবনার দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। (সংবাদ সূত্র: ইন্স্যুরেন্স এশিয়া)