নতুন আঙ্গিকে চালু হলো মটর বীমা, পলিসি গ্রহণে নেই বাধ্যবাধকতা
আবদুর রহমান আবির: দুর্ঘটনায় মৃত্যুতে জনপ্রতি সর্বোচ্চ ২ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণের বিধান রেখে পুনরায় মটর বীমা পলিসি চালু করেছে বীমা খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইডিআরএ। সার্কুলার নং- নন-লাইফ ১০৫/২০২৫ জারি করে ‘মোটর লায়াবিলিটি ইন্স্যুরেন্স’ নামে নতুন এই বীমা পরিকল্প চালু করা হয়েছে।
প্রাথমিকভাবে নন-লাইফ বীমা কোম্পানিগুলো পাইলট ভিত্তিতে ১ বছরের জন্য এই বীমা পলিসির বিক্রি করতে পারবে। এক্ষেত্রে এক বছর শেষে বীমা পলিসিটির পরিসংখ্যান কর্তৃপক্ষের নিকট পাঠাতে হবে।
তবে এই মোটর বীমা গ্রহণের ক্ষেত্রে কোন বাধ্যবাধকতা নেই বলে জানিয়েছেন বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)’র মিডিয়া এন্ড কমিউনিকেশন পরামর্শক ও মুখপাত্র সাইফুন্নাহার সুমি।
তিনি বলেন, কেউ ইচ্ছা করলে তার যানবাহনের বীমা করতে পারেন, আবার না করলেও কোন সমস্যা নেই। এটি অন্য অনেক বীমা পরিকল্পের মতো অপশনাল করে দেয়া হয়েছে।
এর আগে ২০২০ সালের ২০ ডিসেম্বর সার্কুলার নং- নন-লাইফ ৮২/২০২০ জারি করে যানবাহনের ক্ষেত্রে থার্ড পার্টি বীমা পরিকল্প বাতিল করে বীমা খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইডিআরএ।
ওই বছরের অক্টোবরে মোটরযান অধ্যাদেশ, ১৯৮৩ রহিত করে সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮ জারির মাধ্যমে সরকার যানবাহনের থার্ড পার্টি বীমা তুলে দিলে এই সিদ্ধান্ত নেয় আইডিআরএ।
খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নতুন এই মোটর বীমা ব্যাপকভাবে চালু হলে দেশের নন-লাইফ বীমা খাতে যে নেতিবাচক অবস্থা তৈরি হয়েছিল সেটি দূর হবে এবং ব্যবসার ভলিউম বাড়বে। একইসঙ্গে বীমা পেনিট্রেশন বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে নতুন এই পলিসি।
মোটর বীমার নতুন পলিসিতে প্রিমিয়াম হার:
নতুন এই বীমা পলিসিতে ১৫০ সিসির মোটর সাইকেলের জন্য সর্বমোট প্রিমিয়াম দিতে হবে ১ হাজার ৬ টাকা। এক্ষেত্রে সিট সংখ্যা ধরা হয়েছে দু’টি। আর ৩৫০ সিসির চার সিটের ত্রিচক্রযানের জন্য সর্বমোট প্রিমিয়াম দিতে হবে ১ হাজার ৬৯৬ টাকা।
অপরদিকে ড্রাইভারসহ ৫ সিটের (১৩শ’ সিসির) একটি প্রাইভেট কারের জন্য সর্বমোট প্রিমিয়াম গুণতে হবে ২ হাজার ৭০ টাকা। এ ছাড়াও দুই সিট বিশিষ্ট ৩ টনের একটি ট্রাকের জন্য প্রিমিয়াম নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ হাজার ৬৫১ টাকা।
দুর্ঘটনায় ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ হবে হবে যেভাবে:
আইডিআরএ’র সার্কুলার অনুসারে এই পলিসির আওতায় বীমাকৃত যানবাহন দুর্ঘটনায় পড়লে এবং এ কারণে কোন যাত্রীর মৃত্যু হলে এককালীন সর্বোচ্চ ২ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে।
আর দুর্ঘটনায় আঘাতপ্রাপ্ত হলে স্থায়ী সম্পূর্ণ অক্ষম হলে জনপ্রতি এককালীন সর্বোচ্চ ২ লাখ টাকা বীমা কাভারেজ দেয়া হবে। আর আংশীক স্থায়ী অক্ষমতা তৈরি হলে তফসিলে নির্ধারিত হারে ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে।
এ ছাড়াও গুরুতর আহত কিন্তু চিকিৎসার মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার সম্ভাবনা তাকলে জনপ্রতি এককালীন সর্বোচ্চ ২০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ প্রদান করা হবে।
অপরদিকে দুর্ঘটনায় যানবাহনের ক্ষতি হলে সর্বোচ্চ ৬০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে। এ ছাড়াও আদালতের ফি, সালিশ ফি, আইনী প্রতিনিধিত্ব এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ফি বাবদ সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা প্রদান করা হবে।