বিমানবন্দরে অগ্নিকাণ্ড: বীমা কোম্পানিগুলোকে দ্রুত দাবি নিষ্পত্তির আহবান বিআইএ’র
নিজস্ব প্রতিবেদক: হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ব্যাপক হওয়ায় সংশ্লিষ্ট বীমা কোম্পানিগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকদের সঙ্গে দ্রুত যোগাযোগ করে বীমা দাবি পরিশোধে উদ্যোগী হতে আহবান জানিয়েছেন বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স এসোসিয়েশন (বিআইএ) ।
সোমবার (২০ অক্টোবর) ইন্স্যুরেন্স নিউজ বিডি’র সাথে আলাপকালে সংস্থাটির প্রেসিডেন্ট সাঈদ আহমেদ নন-লাইফ বীমা কোম্পানিগুলোর প্রতি এই আহবান জানান।
বিআইএ প্রেসিডেন্ট বলেন, এই দুর্ঘটনায় আমদানি–রপ্তানি বাণিজ্য মারত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এক্ষেত্রে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকদের আস্থা বজায় রাখা এবং অর্থনৈতিক ক্ষতি দ্রুত কাটিয়ে ওঠার জন্য বীমা দাবি নিষ্পত্তি প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করা এখন সময়ের দাবি।
তিনি বলেন, বীমা কোম্পানিগুলোকে এখনই ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের বীমা দাবি যাচাই এবং পরিশোধ প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে। এতে ব্যবসা-বাণিজ্য পুনরুদ্ধারে সহায়তা মিলবে এবং বীমা খাতে গ্রাহকদের আস্থাও আরও দৃঢ় হবে।
বিআইএ’র প্রেসিডেন্ট আরো বলেন, বীমা কোম্পানিগুলোর উচিত, ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকদের তালিকা দ্রুত প্রস্তুত করা, ক্ষতির প্রমাণপত্র সংগ্রহে সহায়তা করা, ক্ষতি মূল্যায়ন ও দাবি নিষ্পত্তি টিম সক্রিয় করা এবং বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ ও বাণিজ্য সংগঠনগুলোর সঙ্গে সমন্বয় জোরদার করা।
এদিকে বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্টের এই আহবান বীমা খাতকে আরও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনে অনুপ্রাণিত করবে বলে মনে করছেন খাত সংশ্লিষ্টরা।
তারা বলছেন, এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা শুধু একটি অবকাঠামোগত বিপর্যয় নয়, বরং জাতীয় অর্থনীতিতে এক বড় ধাক্কা। বীমা কোম্পানিগুলোর দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপই ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পুনরুদ্ধার এবং বাজারে আস্থা ফিরিয়ে আনার মূল চাবিকাঠি।
উল্লেখ্য, গত ১৮ অক্টোবর (শুক্রবার) বেলা আড়াইটার দিকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের গেট নম্বর ৮ সংলগ্ন কার্গো ভিলেজের আমদানি সেকশনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। অগ্নিকাণ্ড নিয়ন্ত্রণে আনতে ফায়ার সার্ভিসের ৩৭টি ইউনিট টানা কয়েক ঘণ্টা কাজ করে। এ সময় বিমানবন্দরের অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলাচল সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়।
ঘটনায় অন্তত ২৫ জন আনসার সদস্য আহত হন এবং বিপুল পরিমাণ আমদানি পণ্য, ইলেকট্রনিক সামগ্রি ও পোশাক রপ্তানির নমুনা সামগ্রি আগুনে পুড়ে যায়।
স্থানীয় গণমাধ্যমগুলোতে বলা হচ্ছে, বিমানবন্দরের কার্গো এলাকায় রাখা আমদানি ও রপ্তানিযোগ্য পণ্যের ক্ষতি প্রায় ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (প্রায় ১২,০০০ কোটি টাকা) ছাড়াতে পারে। বাংলাদেশ রপ্তানিকারক সমিতি জানিয়েছে, এই দুর্ঘটনার ফলে পোশাক খাতে চলমান রপ্তানি কার্যক্রম বিঘ্নিত হওয়ায় আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের অর্ডার ডেলিভারিতে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
অগ্নিকাণ্ডের কারণে বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ বাণিজ্য হাব- হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ায় রপ্তানি খাতে তাৎক্ষণিক নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ক্ষতি দ্রুত পুনরুদ্ধার না হলে আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের সরবরাহ বিঘ্নিত হতে পারে।