কোভিড-১৯ পরবর্তী সময় এবং আমাদের পৃথিবী

এ কে এম এহসানুল হক, এফসিআইআই: করোনা ভাইরাস মহামারী বিশ্বের জন্য এক চরম দুর্যোগ বয়ে এনেছে যার ফলশ্রুতিতে মানব জীবন এক প্রকার দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। করোনা ভাইরাসের কারণে দেশে দেশে মৃত্যুর মিছিলসহ স্বাভাবিক জীবন যাত্রা সম্পূর্ণভাবে মুখ থুবড়ে পড়েছে। স্মরণাতীতকালের ভয়াবহ কোভিড-১৯ জীবনের সকল ক্ষেত্রে মরণ ছোবল হানতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা বা কার্পন্য করছে না।

এ কথা সত্য যে, কোভিড-১৯ পরবর্তীকালে আমাদের চিরচেনা পৃথিবী তার পূর্বাবস্থা ফিরে পাবে না। করোনা ভাইরাস আমাদের সুন্দর পৃথিবীকে লণ্ডভণ্ড করে একদিন পালিয়ে যাবে, রেখে যাবে এক বিশাল গভীর ক্ষত যেখানে থেকে সেরে ওঠা অত্যন্ত কষ্টকর হবে।

কোভিড-১৯ এর নিষ্ঠুর এবং নির্মম থাবায় লাখ লাখ নিরীহ মানুষের প্রাণ কেড়ে নেয়ার পাশাপাশি বিশ্ব অর্থনীতিকে এক চরম বিপর্যয় বা বিপাকের মুখে ঠেলে দিয়েছে। বিশ্বের ধনী এবং সমৃদ্ধশালী দেশসমূহ যেখানে নিজেদের ঘর সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে তখন দরিদ্র অনুন্নত দেশের অবস্থা সহজেই অনুমেয়।

যে প্রশ্নটি স্বভাবতই মানুষের মনে উঁকি-ঝুঁকি মারছে সেটি হচ্ছে কোভিড-১৯ পরবর্তীকালে আমাদের সামাজিক এবং অর্থনৈতিক জীবনে এর নেতিবাচক প্রভাব এবং ক্ষতিকর দিকসমূহ।

নিম্নে সংক্ষেপে এর কতিপয় ক্ষতিকারক দিক আলোচনা করা হলো-

মনস্তাত্ত্বিকদের মতে করোনা ভাইরাস উত্তর পরিস্থিতিতে দেশে-বিদেশে অজস্র মানুষ রোগ, শোক এবং অভাবের কারণে মানসিক ভারসাম্য হারাবে বা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সমাজবিজ্ঞানীরা মনে করছেন এই উপসর্গ সমাজের জন্য দুশ্চিন্তা এবং মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়াবে।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিশেষ করে আফ্রিকা এবং লাতিন আমেরিকার দরিদ্র দেশগুলোতে দুর্ভিক্ষের অসনি সঙ্কেত এবং পদধ্বনি এখন থেকেই পাওয়া যাচ্ছে।

নিঃসন্দেহে করোনা ভাইরাস পরবর্তী সময় বিশ্ব অর্থনীতির জন্য এক কঠিন সমস্যা বয়ে আনবে যেখান থেকে ঘুরে দাঁড়ানো সহজসাধ্য হবে না।

দেশ-বিদেশের বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদরা এখন থেকে এ ব্যাপারে চিন্তা করে নিজেদের ঘুম নষ্ট করছে।

একদিন সর্বনাশা এবং সর্বগ্রাসী করোনা ভাইরাস মানুষের অদম্য মনোবল এবং দুর্জয় মনোভাবের কাছে পরাজয় বরণ করতে বাধ্য হবে।

করোনা ভাইরাস নিরাময়ের ওষুধ আবিষ্কারের আশায় বুক বেঁধে অধীর ধৈর্য্য এবং আগ্রহ নিয়ে সেই দিনটির জন্য অপেক্ষা করছে মানবকুল।

একদিন জয় আমাদের অবসম্ভাবী। সেই দিন খুব বেশি দূরে নয়। আর সেই আনন্দময় মুহুর্তের কথা ভেবে এখন থেকেই শরীরে শিহরণ এবং উত্তেজনা অনুভূত হচ্ছে।   

লেখক: জেনারেল সেক্রেটারি, বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স প্রফেশনালস সোসাইটি (বিআইপিএস) ।