বিদেশে পড়াশোনার জন্য শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য বীমা থাকা কেন প্রয়োজন

রাজ কিরণ দাস: বিদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের স্বপ্ন পূরণ করতে যাওয়া শিক্ষার্থীদের জন্য স্বাস্থ্য বীমা এখন কেবল একটি বিকল্প নয়, বরং এক অপরিহার্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা। উন্নত দেশগুলোতে চিকিৎসার খরচ অত্যন্ত বেশি হওয়ায় সামান্য অসুস্থতা কিংবা দুর্ঘটনার চিকিৎসা খরচও শিক্ষার্থী ও তাদের পরিবারের জন্য বড় আর্থিক চাপ তৈরি করতে পারে। এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য বীমা শিক্ষার্থীদের যেমন অর্থনৈতিক সুরক্ষা নিশ্চিত করে, তেমনি অপ্রত্যাশিত চিকিৎসা ব্যয় থেকেও মুক্ত রাখে।

স্বাস্থ্য বীমার আওতায় শিক্ষার্থীরা ডাক্তারি পরামর্শ, ওষুধপত্র, হাসপাতালে ভর্তি এবং সার্জারির খরচের জন্য নিশ্চয়তা পান। যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশে একটি হাড় ভাঙার চিকিৎসা বা একদিনের হাসপাতাল ভর্তি খরচও অনেক সময় শিক্ষার্থীর সামর্থ্যের বাইরে চলে যায়। বীমা থাকলে এসব খরচের একটি বড় অংশ সংরক্ষণ করা সম্ভব হয়। স্বাস্থ্য বীমা শিক্ষার্থীদের মানসিক শান্তি দেয়, কারণ তারা জানেন যে জরুরি পরিস্থিতিতেও তারা আর্থিকভাবে নিরাপদ।

আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য বীমা কেবল চিকিৎসা খরচ বহনের জন্য সীমাবদ্ধ নয়। অনেক পরিকল্পনা শিক্ষার্থীদের নন-মেডিকেল পরিস্থিতির জন্যও সহায়তা দেয়, যেমন পাসপোর্ট হারানো, ব্যাগেজ বিলম্ব কিংবা পড়াশোনা বাধাগ্রস্ত হওয়া। এটি শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করে এবং অপ্রত্যাশিত সমস্যার ক্ষেত্রে আর্থিক চাপ কমিয়ে আনে। এছাড়া ব্যক্তিগত দায়বদ্ধতা সংক্রান্ত ক্ষতি কিংবা দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা দেয়, যা বিদেশে থাকা অবস্থায় এক গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা।

বিভিন্ন বীমা কোম্পানি শিক্ষার্থীদের প্রয়োজন অনুযায়ী পরিকল্পনা প্রদান করে। কিছু প্রতিষ্ঠান যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে শিক্ষার্থীদের জন্য বিস্তৃত সেবা দেয়, যেখানে অসুখ-বিসুখ, মানসিক স্বাস্থ্য সেবা এবং মাতৃত্বকালীন চিকিৎসা কভারেজ অন্তর্ভুক্ত থাকে। এছাড়া শিক্ষার্থীরা তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী কাস্টমাইজড পরিকল্পনাও নিতে পারেন, যা বিদেশে নিরাপদ ও নির্বিঘ্নভাবে জীবনযাপন নিশ্চিত করে।

অনেক দেশে বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য স্বাস্থ্য বীমা বাধ্যতামূলক। বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি বা ভিসা প্রক্রিয়া সফলভাবে সম্পন্ন করতে এটি প্রয়োজন। বীমার খরচ নির্ভর করে শিক্ষার মেয়াদ, কভারেজের ধরন, গন্তব্য দেশ এবং পরিবারের সদস্য অন্তর্ভুক্তির ওপর।

স্বাস্থ্য বীমা কেবল চিকিৎসা খরচ কমায় না, এটি শিক্ষার্থীদের মানসিক ও আর্থিক নিরাপত্তাও নিশ্চিত করে। বিদেশে পড়াশোনা চলাকালীন শিক্ষার্থীরা যাতে শুধু তাদের শিক্ষা ও ভবিষ্যতের দিকে মনোনিবেশ করতে পারেন, তার জন্য আগে থেকে সঠিক আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য বীমা নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।