বিনিয়োগকারীদের আগ্রহে নন-লাইফ বীমা কোম্পানি
নিজস্ব প্রতিবেদক: শেষ সপ্তাহজুড়ে পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের কাছে আগ্রহের শীর্ষে ছিল বীমাখাতের কোম্পানিগুলো। এ খাতের কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগের আগ্রহ বেড়ে যাওয়ায় সপ্তাহে দাম বাড়ার শীর্ষ দশ কোম্পানির তালিকায় স্থান করে নিয়েছে ৫টি নন-লাইফ বীমা কোম্পানি।
বিনিয়োগকারীদের আগ্রহের শীর্ষে থাকা নন-লাইফ বীমা কোম্পানিগুলো হলো- সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্স, প্রাইম ইন্স্যুরেন্স, তাকাফুল ইসলামী ইন্স্যুরেন্স, বাংলাদেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স এবং ফেডারেল ইন্স্যুরেন্স।
এরমধ্যে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহের দিক থেকে প্রথম স্থানে ছিল সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্স। প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার ক্রেতাদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসায় অনেক বিনিয়োগকারী সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার বিক্রি করতে চাননি। ফলে এই বীমা কোম্পানির শেয়ার লেনদেন খুব বড় অঙ্কের হয়নি।
সপ্তাহের চার কার্যদিবসে (২ অক্টোর থেকে ৫ অক্টোবর) প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৮ কোটি ১৪ লাখ টাকা। আর প্রতি কার্যদিবসে গড়ে লেনদেন হয়েছে ২ কোটি ৩ লাখ টাকা।
তবে বিয়োগকারীরা প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার বিক্রি করতে না চাওয়ায় শেয়ার মূল্যে বড় ধরণের উত্থান ঘটেছে। সপ্তাহজুড়ে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার মূল্য বেড়েছে ২১ দশমিক ২০ শতাংশ, যা গত সপ্তাহে দাম বাড়ার দিক থেকে যে কোন খাতের মধ্যে সর্বোচ্চ।
টাকার অঙ্কে গত সপ্তাহে সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্সের দাম বেড়েছে ৩ টাকা ৯০ পয়সা। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শেষে প্রতিষ্ঠানটির প্রতিটি শেয়ারের দাম দাঁড়িয়েছে ২২ টাকা ৩০ পয়সায়। যা তার আগের সপ্তাহ শেষে ছিল ১৮ টাকা ৪০ পয়সা।
ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে (জানুয়ারি-জুন) সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্সের মুনাফা হয়েছে ২ কোটি ৯১ লাখ টাকা। এর মধ্যে এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে মুনাফা হয়েছে ১ কোটি ৪১ লাখ টাকা। আর জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে মুনাফা হয় ১ কোটি ৫৩ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজারের ভালো কোম্পানি বা ‘এ’ গ্রুপের অন্তরর্ভুক্ত এ প্রতিষ্ঠান ২০০৯ সাল থেকেই ধারাবাহিকভাবে বিনিয়োগকারীদের ১০ শতাংশ বা তার বেশি লভ্যাংশ দিয়ে আসছে। তবে শেষ আট বছরের মধ্যে মাত্র দু’বার এই কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে।
এরমধ্যে ২০১৫ সালে ৫ শতাংশ এবং ২০১৪ সালে ৬ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয়া হয়। সে হিসেবে দেখা যাচ্ছে সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্স বছরের পর বছর ধরে বিনিয়োগকারীদের নগদ সুবিধা না দিয়ে কাগজ (বোনাস শেয়ার) ধরিয়ে দিয়ে নিজেদের মূলধন বাড়িয়েছে। অর্থাৎ কোম্পানিটি নিয়োগকারীদের নগদ লভ্যাংশ না দিয়ে বোনাস শেয়ার দিতেই বেশি অভ্যস্ত।
এই সাধারণ বীমা কোম্পানিটির মোট শেয়ারের ৩১ দশমিক ৭৮ শতাংশ শেয়ার রয়েছে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের হাতে। বাকি শেয়ারের ৪৪ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে। আর প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে আছে ২৪ দশমিক ১৪ শতাংশ শেয়ার। বিদেশি নিয়োগকারীদের সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্সের প্রতি তেমন আগ্রহ নেই। ফলে বিদেশিদের কাছে এ নন-লাইফ বীমা কোম্পানিটির কোন শেয়ার নেই।
এদিকে শেষ সপ্তাহে সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্সের পরেই নন-লাইফ বীমা কোম্পানিগুলোর মধ্যে বিনিয়োগকারীদের পছন্দের তালিকায় ছিল প্রাইম ইন্স্যুরেন্স। ফলে সপ্তাহজুড়ে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার দাম বাড়ে ১৪ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ।
এর পরেই রয়েছে তাকাফুল ইসলামী ইন্স্যুরেন্স। এ কোম্পানিটির শেয়ার দাম বেড়েছে ১৩ দশমিক ১৪ শতাংশ। এছাড়া বাংলাদেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের ১০ দশমকি ৯৫ শতাংশ এবং ফেডারেল ইন্স্যুরেন্সের ১০ দশমিক ৬৯ শতাংশ দাম বেড়েছে।