কুমিল্লায় হোমল্যান্ড লাইফের বীমা দাবি পরিশোধ

ডেস্ক রিপোর্ট: কুমিল্লা এলাকার গ্রাহকদের মধ্যে বীমা দাবির চেক বিতরণ করেছে হোমল্যান্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড। গত ১ আগস্ট বুধবার সকালে কুমিল্লাস্থ মিয়ামী লেজার স্পটের অডিটোরিয়ামে চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বীমা কোম্পানিটির এ তথ্য জানিয়েছে।

কোম্পানির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা আজিজুল ইসলাম তালুকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)'র সদস্য (আইন) বোরহান উদ্দিন আহমেদ। বিশেষ আতিথি ছিলেন কোম্পানির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জুলহাস, আইডিআরএ'র পরিচালক (যুগ্মসচিব) ড. মহাঃ বশিরুল আলম। এ ছাড়াও কোম্পানির উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান অতিথির বক্তেব্যে বোরহান উদ্দিন আহমেদ ১৫ আগস্ট-এ বঙ্গবন্ধুসহ তার পরিবারের শহীদ সকল সদস্যের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন। তিনি বলেন, বীমার এজেন্টদেরকে মানুষ বিশ্বাস করতে চায় না। মানুষের বিশ্বাস অর্জনসহ বীমা গ্রাহকদের আস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য আইডিআরএ কাজ করছে।

তিনি বক্তব্যের এক পর্যায়ে বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা:) বলেছেন, তোমরা তোমাদের উত্তরাধিকারীদেরকে অসহায় অবস্থায় রেখে যেওনা। বীমা, বীমাগ্রহীতার উত্তরাধিকারীদেরকে অসহায়ত্ব থেকে মুক্তি দেয়। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রিমিয়াম দিয়ে বড় অংকের বীমা করা সম্ভব। এমনকি প্রিমিয়ামের দু’একটি কিস্তি দিয়ে গ্রাহক মৃত্যুবরণ করলেও সম্পূর্ণ বীমার টাকা পাওয়া যায় বলে তিনি জানান, যার প্রমাণ আজকের এই অনুষ্ঠান।

তিনি বলেন, আইডিআরএ আপনাদের সাথে ছায়ার মত সব সময় সাথে আছে। তিনি বীমার এজেন্টদের সততার উপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, এজেন্টদেরকে যথাযথ প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে হবে এবং নিজ বিবেক দ্বারা পরিচালিত হতে হবে। বীমা গ্রাহকদেরকে মিথ্যা আশ্বাস প্রদান করা যাবে না, মিথ্যা বীমা শিল্পকে ফ্লপ করে দেবে। তিনি বীমার সুফল সম্পর্কে বীমাগ্রহিতাদেরকে সচেতন করা এবং নিয়মিত প্রিমিয়াম প্রদানে গ্রাহকদের উদ্বুদ্ধ করার জন্য এজেন্টদেরকে অনুরোধ করেন।

বোরহান উদ্দিন আহমেদ সংশ্লিষ্ট সকলকে নিয়ম-নীতি মেনে কাজ করার আহবান জানান। তিনি আরো বলেন, গ্রাহকদের স্বার্থ রক্ষাই হল মূল উদ্দেশ্য। বীমা দাবীর টাকা যাতে যথাসময়ে গ্রাহক পায় তা নিশ্চিত করতে কাজ করছে আইডিআরএ। তাছাড়া মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিজেই বীমার প্রতি মানুষের আস্থার সংকট দূর করার জন্য তাগিদ দিচ্ছেন বলে জানান।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ড. মহাঃ বশিরুল আলম ১৫ আগস্টে শহীদ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সকল সদস্যের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে বক্তব্য শুরু করেন। তিনি বলেন, জীবন বীমা পেশা মহৎ পেশা, বীমাবৃত হওয়ার পর দূর্ঘটনা কিংবা মৃত্যুতে তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের যাতে পথে বসতে না হয় বীমা সে ব্যবস্থা করে দেয়।

তিনি আরো বলেন, বীমা করলে টাকা পাওয়া যায় আজকের অনুষ্ঠানই তা প্রমাণ করে। তিনি বীমার সকল শর্ত পূরণ করে মেয়াদপূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত বীমাটি চালিয়ে যাবার জন্য গ্রাহকদের আহবান জানান। বীমা দাবির টাকা পাওয়া আইডিআরএ নিশ্চিত করতে চায়। তিনি বলেন, বীমা সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা দূর করে গ্রাহকের আস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য কাজ করে যাচ্ছে আইডিআরএ।

তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, হোমল্যান্ড লাইফ যেন এ ধরণের চেক বিতরণ অনুষ্ঠান ধারাবাহিকভাবে আয়োজন করে, তাহলে কোম্পানির প্রতি মানুষের আস্থা বাড়বে, বীমার সেবা প্রদানের জন্য কোম্পানিগুলোকে এগিয়ে আসতে তিনি আহবান জানান। পলিসি চলাকালীন সময়ে মাঝপথে প্রিমিয়াম প্রদান বন্ধ করে দেয়া হলে বীমার পূর্ণাঙ্গ সুবিধা পাওয়া যায়না বিধায় বীমা গ্রাহক তখন ক্ষতিগ্রস্থ হন। এসকল বিষয়ে জেনে বুঝে বীমা গ্রহণ করা এবং শর্তাবলী পালন করার জন্য বীমা গ্রাহকদের সচেতন করেন।

তিনি আরও বলেন বীমা কোম্পানির অনিয়ম এবং গ্রাহকদের সমস্যা দূর করাই আইডিআরএ-এর কাজ। পলিসির সকল শর্ত ভাল করে বুঝিয়ে গ্রাহকদের মাঝে বীমা করার জন্য তিনি বীমা এজেন্টদেরকে অনুরোধ জানান।

কোম্পানির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জুলহাস বলেন, হোমল্যান্ড লাইফের পলিসি যাতে ঘরে ঘরে পৌঁছে যায় সেজন্য সবাইকে আন্তরিকভাবে কাজ করতে হবে। তিনি অনুষ্ঠানে উপস্থিতির জন্য আইডিআরএ-এর সদস্য এবং পরিচালককে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

সভাপতির বক্তব্যে মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা আজিজুল ইসলাম তালুকদার বীমা শিল্পে জাতির জনকের অবদানের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বঙ্গবন্ধুসহ ১৫ আগস্টে শহীদ তার পরিবারের সকল সদস্যের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।

তিনি বলেন, বীমা শিল্পে গ্রাহকের আস্থার সংকট দূর করা এবং গ্রাহকদের স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নে আইডিআরএ সচেষ্ট এবং আজকের অনুষ্ঠান এরই অংশ। তিনি বলেন, আমাদের মনে রাখতে হবে আমরা সেবা বিক্রি করি, সাধারণ মানুষের নিকট পলিসি বিক্রি করি। যতক্ষণ পর্যন্ত বীমার দাবী পরিশোধ না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত প্রয়োজনীয় সেবা দিতে হবে।

মোহাম্মদ জুলহাস উপস্থিত সকলের সামনে ব্যাংক ও বীমার পার্থ্যক্য তুলে ধরে বলেন, বীমা কোম্পানি সুদ দেয় না, লাভ দেয় এবং বীমা কোম্পানি গ্রাহকের মৃত্যুতে সম্পূর্ণ বীমা অংক তার নমিনীকে পরিশোধ করে থাকে। সেখানে গ্রাহকের মৃত্যুতে ব্যাংকে শুধুমাত্র জমাকৃত টাকা নমিনীকে প্রদান করতে পারে। যে কোন মূল্যে নিজের জীবনের উপর নেয়া বীমা পলিসিটি চালু রাখতে উপস্থিত গ্রাহকদেরকে অনুরোধ জানান।

তিনি বলেন পলিসি চালু থাকলে শর্তানুযায়ী সকল সুবিধা বহাল থাকে আর পলিসিটি যখনি তামাদি হয়ে যায় তখন থেকে সকল সুবিধা বন্ধ হয়ে যায় এবং নিয়মানুযায়ী কোম্পানির আর কিছুই করার থাকে না।

তিনি বলেন, বীমা পেশা একই সাথে চাকরি এবং ব্যবসা। সততার সাথে দায়িত্ব পালন করলে এই পেশায় সফলতা সম্ভব। আর এজন্য প্রয়োজন কমিটমেন্ট। সম্মানিত বীমা গ্রাহকদের সাথে সঠিক কমিটমেন্ট করলে একদিকে যেমন তারা ক্ষতিগ্রস্থ হবেন না অন্যদিকে বীমা কোম্পানির প্রতি মানুষের আস্থা ফিরে আসবে বলে তিনি জানান।