করোনা চিকিৎসায় কম প্রিমিয়ামে স্বাস্থ্য বীমা চালু করেছে ভারত

ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক: করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা খরচে সহায়তা করতে বিশেষায়িত স্বাস্থ্য বীমা পরিকল্প চালু করেছে ভারত। কম প্রিমিয়ামের এসব বীমা পলিসি চালু করা কোম্পানিগুলোর জন্য বাধ্যতামূলক করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইআরডিএআই। এরইমধ্যে দেশটির ২৯টি নন-লাইফ ও হেলথ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি করোনা কবচ নামে স্বাস্থ্য বীমা বাজারে এনেছে। করোনা রক্ষক নামে আরেকটি বীমা পলিসিও শিগগিরই বাজারে আসবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম এ খবর দিয়েছে।

স্বল্প মেয়াদী এই পলিসির বীমা অংক ৫০ হাজার রুপি থেকে ৫ লাখ রুপি পর্যন্ত। ৬৫ বছর বয়স পর্যন্ত যেকেউ এই স্বাস্থ্য বীমা পলিসি কিনতে পারবেন। প্রচলিত স্বাস্থ্য বীমা পলিসি কেনার ৩০ দিন পর থেকে চিকিৎসার খরচ পাওয়া গেলেও করোনা কবচ বীমা পলিসিতে এই সময়সীমা বেধে দেয়া হয়েছে ১৫ দিন। যদিও বাজারে প্রচলিত প্রায় সবক’টি স্বাস্থ্য বীমা পলিসিতেই করোনা চিকিৎসার খরচ পাওয়া যায়। তবে বিশেষায়িত এই বীমায় রয়েছে কিছু বাড়তি সুবিধা। মেয়াদ শেষে এই বীমা পলিসি নবায়নও করা যাবে।

কোম্পানিভেদে নতুন এই স্বাস্থ্য বীমার শর্ত ও প্রিমিয়ামে তারতম্য রয়েছে। বয়সের তারতম্যের কারণেও পার্থক্য থাকবে প্রিমিয়ামে। বীমা মেয়াদ থাকবে সাড়ে ৩ মাস থেকে সাড়ে ৯ মাস পর্যন্ত। সাড়ে ৩ মাস মেয়াদী একটি বীমা পলিসির জন্য শূন্য থেকে ২০ বছর বয়সী ব্যক্তির ক্ষেত্রে ৫০ হাজার রুপি বীমা অংকের পলিসি কিনতে প্রিমিয়াম দিতে হবে ১৫৫ রুপি। আর ৫ লাখ রুপি বীমা অংকের জন্য প্রিমিয়াম দিতে হবে ৬৭৫ রুপি। আবার ৬৫ বছর বয়সে সাড়ে ৯ মাস মেয়াদী ৫ লাখ রুপি বীমা অংকের পলিসিতে প্রিমিয়াম আসবে ৬ হাজার ৫১০ রুপি।

বীমা কোম্পানিগুলো জানিয়েছে, করোনা কবচ পরিকল্পে হাসপাতালে ভর্তি হলে যেমন চিকিৎসার খরচ মিলবে। তেমনি বাড়িতে থেকে চিকিৎসা করালেও এই খরচ পাওয়া যাবে। তবে এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি যে করোনা পজিটিভ হয়েছেন, তা পরীক্ষা করাতে হবে সরকারি হাসপাতাল বা পরীক্ষাগার থেকে। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার আগে ১৫ দিন এবং ফিরে ৩০ দিন পর্যন্ত চিকিৎসার খরচ মিলবে। এ ছাড়া হাসপাতালে থাকাকালীন প্রতি দিন বীমা অংকের শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ টাকা ১৫ দিন পর্যন্ত পাবেন গ্রাহক। তবে এ জন্য বাড়তি প্রিমিয়াম দিতে হবে।

বাজাজ অ্যালাইয়েন্স জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের রিটেইল আন্ডাররাইটিং হেড গুরদীপ সিং বাত্রা বলেছেন, ব্যাংক এবং অনলাইন মাধ্যমসহ সব ধরণের চ্যানেলে নতুন এই স্বাস্থ্য বীমা পলিসি বিক্রি করা হবে। আর গ্রাহকদের ৯৯ শতাংশই এই বীমা পলিসি কেনার উপযুক্ত বিবেচিত হবে। তবে অন্যান্য রোগে আক্রান্ত এবং বেশি বয়সের ব্যক্তির ক্ষেত্রে টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে সম্ভাব্য চেকআপ প্রয়োজন হতে পারে।

স্টার হেলথ অ্যান্ড অ্যালায়েড ইন্স্যুরেন্সের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এন গুহ এবং ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্সের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, নতুন এই বীমা পলিসির মেয়াদ কম হওয়ায় প্রিমিয়ামও কম। আমরা প্রত্যাশা করছি, কম আয়ের মানুষের কাছে বিশেষভাবে এটি জনপ্রিয় হবে। অন্ততপক্ষে করোনা বীমার আওতায় বেশি মানুষ আসতে পারবেন বলে আমরা মনে করছি।