ভারতে প্রধানমন্ত্রী ফসল বীমা যোজনায় কোম্পানিগুলোর মুনাফা ৪০ হাজার কোটি রুপি
ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক: ভারতে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে চালু হওয়া প্রধানমন্ত্রী ফসল বীমা যোজনা (পিএমএফবিওয়াই) থেকে বিগত ৫ বছরে ৪০ হাজার কোটি রুপি মুনাফা অর্জন করেছে সংশ্লিষ্ট বীমা কোম্পানিগুলো। প্রধানমন্ত্রী ফসল বীমা যোজনার বরাত দিয়ে টাইমস অফ ইন্ডিয়া এ খবর দিয়েছে।
ভারতের কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমার রাজ্যসভায় দেয়া তথ্যে দেখা যায়, বীমা কোম্পানিগুলো এই সময়ের মধ্যে প্রকল্পের অধীনে মোট ১ লাখ ৫৯ হাজার ১৩২ কোটি রুপি প্রিমিয়াম সংগ্রহ করে। আর বীমা কভারেজের বিপরীতে ১ লাখ ১৯ হাজার ৩১৪ কোটি রুপি দাবি পরিশোধ করেছে।
এই হিসাবে গেলো ৫ বছরে প্রধানমন্ত্রী ফসল বীমা যোজনা থেকে সংশ্লিষ্ট বীমা কোম্পানিগুলোর মুনাফা হয়েছে ৩৯ হাজার ৮১৮ কোটি রুপি। অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী ফসল বীমা যোজনা চালু হওয়ায় বীমা কোম্পানিগুলোর পাশাপাশি লাভবান হয়েছেন দেশটির লাখ লাখ কৃষক।
এই বীমা প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ১৮টি নন-লাইফ বীমা কোম্পানিকে তালিকাভুক্ত করেছে ভারত সরকার। তবে এই সব কোম্পানির মধ্যে নির্দিষ্ট বীমা কোম্পানিগুলোকে স্বচ্ছ বিডিং প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকার ব্যবসা করার অনুমতি দিয়ে থাকে।
রাজ্যসভায় বিভিন্ন সংসদ সদস্যের বক্তব্যের উত্তরে কৃষি মন্ত্রী নরেন্দ্র সিং বলেন, এই প্রকল্পের সূচনা থেকে ২০২১-২২ অর্থবছরে খারিফ মৌসুম পর্যন্ত কৃষকদের প্রতি হেক্টরে ৪ হাজার ১৯০ টাকার বীমা দাবির পরিশোধ করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী ফসল বীমা যোজনার তথ্য মতে, এই প্রকল্পে ৫ বছরে মোট ২৮ কোটি ১৯ লাখ কৃষককে বীমার আওতায় নিয়ে এসেছে ভারত। শুরুতে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৫ কোটি ৮৩ লাখ কৃষক বীমার আওতায় আসে। এতে কোম্পানিগুলো ২১ হাজার ৬৯৭ কোটি রুপি প্রিমিয়াম সংগ্রহ করে এবং ১৬ হাজার ৮০৭ কোটি রুপি দাবি পরিশোধ করে কোম্পানিগুলো।
২০১৭-১৮ অর্থবছরে বীমা কোম্পানিগুলো ৫ কোটি ৩২ লাখ কৃষকের কাছ থেকে ২৪ হাজার ৫৯৭ কোটি রুপি প্রিমিয়াম সংগ্রহ করে এবং এর বিপরীতে দাবি পরিশোধ করে ২২ হাজার ১৪২ কোটি রুপি। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৫ কোটি ৮২ লাখ কৃষকের কাছে ২৯ হাজার ৬৯৩ কোটি রুপি প্রিমিয়াম সংগ্রহের বিপরীতে দাবি পরিশোধ করে ২৮ হাজার ৪৬৪ কোটি রুপি।
২০১৯-২০ অর্থবছরে ৬ কোটি ২৪ লাখ কৃষকের কাছে ৩২ হাজার ৩৪০ কোটি রুপি প্রিমিয়াম সংগ্রহের বিপরীতে দাবি পরিশোধ করে ২৬ হাজার ৪১৩ কোটি রুপি। ২০২০-২১ ও ২০২১-২২ অর্থবছরের ৩০ জুন পর্যন্ত বীমা কোম্পানিগুলো ১১ কোটি ২১ লাখ কৃষকের কাছ থেকে প্রিমিয়াম সংগ্রহ করে ৫০ হাজার ৮০৫ কোটি রুপি এবং এই সময়ে বীমা দাবি পরিশোধ করেছে ২৫ হাজার ৪৮৮ কোটি রুপি।
এই বীমা প্রকল্পের অধীনে সমস্ত খারিফ ফসলের জন্য কৃষকদের প্রিমিয়াম দিতে হয় ২ শতাংশ, সমস্ত রবি (শীতকালীন বপন) ফসলের জন্য ১.৫ শতাংশ এবং বার্ষিক বাণিজ্যিক ও উদ্যানজাত ফসলের ক্ষেত্রে কৃষকদের সর্বোচ্চ প্রিমিয়াম দিতে হয় ৫ শতাংশ হারে। কৃষকদের অংশ পরিশোধের পর প্রিমিয়ামের বাকী অংশ সমহারে দেশের কেন্দ্রিয় ও রাজ্য সরকার বহন করে।
প্রধানমন্ত্রী ফসল বীমা যোজনায় এখন পর্যন্ত দেশটির পাঞ্জাব প্রদেশ সংযুক্ত হয়নি। অন্যদিকে বিহার, পশ্চিমবঙ্গ, গুজরাট, ঝারখণ্ড, অন্ধ্রপদেশ এবং তেলেঙ্গানাসহ কয়েকটি প্রদেশ বিভিন্ন সময় এই বীমা প্রকল্পে অংশ গ্রহণ করেনি। তবে অন্ধ্রপদেশ চলতি মাসে পুনরায় এই প্রকল্পে যুক্ত হচ্ছে।