পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্সের বীমা দাবির চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠান

বীমার চেহারা পাল্টাতে হবে: আইডিআরএ চেয়ারম্যান

নিজস্ব প্রতিবেদক: বীমা খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)'র চেয়ারম্যান মো. শফিকুর রহমান পাটোয়ারী বলেছেন, আমাদের কথা হলো বীমার চেহারা পাল্টাতে হবে। বীমার প্রতি পজিটিভ ধারণা নিয়ে আসতে হবে।

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর মহানগর নাট্যমঞ্চে পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্সের বীমা দাবির চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে ঢাকা অঞ্চলের ৭ হাজার ৩৪ বীমা গ্রাহকের মাঝে ২৫ কোটি ৬৬ লাখ ৯৭ টাকার চেক হস্তান্তর করা হয়।

আইডিআরএ চেয়ারম্যান বলেন, সারা বিশ্বে বীমা খুব গুরুত্বপূর্ণ। সেখানে কিন্তু ব্যাংক গ্যারান্টির কেউ গ্রহণ করে না, ইন্স্যুরেন্স গ্যারান্টি গ্রহণ করে। আমাদেরও একদিন আসবে যে, আমাদের ইন্স্যুরেন্স গ্যারান্টি দিলে চলবে, ব্যাংক গ্যারান্টির প্রয়োজন নেই।

তিনি বলেন, ব্যাংকের চেয়ে বীমা এখন অনেক এগিয়ে যাচ্ছে। দেশে ৫৭টি ব্যাংক আছে, আর বীমা কোম্পানি আছে ৭৮টি; বিরাট বাহিনী। আমাদেরকে দেশের জন্য কাজ করতে হবে। বাংলাদেশ সরকারের হাতকে শক্তিশালী করতে হবে।

শফিকুর রহমান পাটোয়ারী বলেন, আমি মনে করি, আমাদের মিশন এবং ভিশন একটাই যে, এই বীমাকে একটা পজিটিভ পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া। আপনারা সবাই কাজ করলেই সম্ভব এই বীমা চেহারা পাল্টানো এবং বীমাকে একটি ভালো পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া।

তিনি বলেন, আমাদের জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান একেবারেই নাই। কিন্ত আমাদের বেশি অবদান থাকার কথা। ভারতে জিডিপিতে বীমা খাতের অবদান ৪%, আমাদের ০.৭৫%। আমরা চাই, আপনাদের কাজের মাধ্যমে আমরা জিডিপির প্রবৃদ্ধিতে অংশগ্রহণ করবো। আমরা এগিয়ে যাবো, আমাদের দেশও এগিয়ে যাবে।

আইডিআরএ চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের একটা সেল করা আছে। সেখানে প্রায়ই আমরা অভিযোগের শুনানি করি। সব কোম্পানির অভিযোগ আসলেও আমরা পপুলার লাইফের কোন অভিযোগ পাইনি। এটা অনেক বিরাট ব্যাপার।

এই ধারা তিনি অব্যাহত রাখার আহবান জানিয়ে বলেন, আপনারা ইমার্জিং এশিয়া ইন্স্যুরেন্স অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন, আরো পাবেন। আমরা আপনাদের অ্যাওয়ার্ড দেবো, আইডিআরএ থেকে আপনাদের পদক দেয়া হবে।

গ্রাহকদের আবারো পপুলার লাইফে বিনিয়োগ করার আহবান জানিয়ে আইডিআরএ সদস্য গকুল চাঁদ দাস বলেন, যারা বলেন সব টাকা ফেরত দিলে প্রতিষ্ঠান চলবে কেমনে; আমি তাদের বলি তারা বীমার 'ব'ও বোঝেন না। বীমার কাজই হলো বিপদের সময় গ্রাহকের টাকা ফেরত দেয়া।

বিশেষ অতিথির বক্তবে তিনি আরো বলেন, আমরা অনুরোধ করবো গ্রাহকদের টাকা ফেরত দিতে। আপনাদের নিয়ে যেন আইডিআরএ'তে দেন-দরবার করতে না হয়। মানুষের টাকা ফেরত দেয়ার জন্য আমাদের আইনে যথেষ্ট নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। কিন্তু আমরা সেগুলো প্রয়োগ করতে চাই না। আমরা চাই আপনারা গ্রাহকদের টাকা সময়মতো ফেরত দিবেন।

বীমা দাবি পরিশোধের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে আইডিআরএ'র সদস্য বোরহান উদ্দিন আহমেদ জানান, কর্তৃপক্ষের কাছে যত অভিযোগ আসছে তার মধ্যে পপুলার লাইফের কোন অভিযোগ আসছে না। তিনি বলেন, পপুলার লাইফ গ্রাহকদের দাবি পরিশোধ করে তাদের কথা রাখছে।

বিশেষ অতিথির বক্তবে আইডিআরএ'র সদস্য ড. এম মোশাররফ হোসেন বলেন, যে ব্যবসায় মূলধন লাগে না এবং যে ব্যবসা সম্মানের সেটি হলো বীমা ব্যবসা। এটা আমাদের প্রাউড ফিল করায়। তিনি বলেন, আমরা এতিম ও বিধবা স্ত্রীদের জন্য কাজ করছি। তাই এটার মূল্যটাও অনেক বেশি। সম্মিলিত প্রচেষ্টা নিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

বিশেষ অতিথির বক্তবে আইডিআরএ'র নির্বাহী পরিচালক খলিল আহমদ বলেন, কয়েকদিন আগে আমরা ত্রৈমাসিক মিটিং করেছি। সেখানে ৭৮টি বীমা কোম্পানির ত্রৈমাসিক রিপোর্ট আলোচনা হয়েছে। তাতে দেখা গেছে, পপুলার লাইফ ভালো করেছে। তিনি জানান, ২০১৮ সালের প্রথম ৩ মাসে পপুলার লাইফ ২৭৫ কোটি টাকা প্রিমিয়াম আয় করেছে। পপুলার লাইফ সর্বোচ্চ পর্যায়ে এগিয়ে যাবে বলেও তিনি প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।

পপুলার লাইফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও বিএম ইউসুফ আলী বলেন, বীমা দাবি দেয়ার প্রচলন আমাদের এখানে আগে থেকেই আছে। আজকে আইডিআরএ'র ফুল বডি'র উপস্থিতিতে আজ প্রায় ২৬ কোটি টাকা দাবি দেয়া হচ্ছে।

মুনাফিকের ৩টি আলামতের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, পপুলার লাইফে চাকরি করায় মুনাফিকের একটি আলামতও আমাদের মাঝে নেই। আমরা কথা দিয়ে কথা রেখেছি, গ্রাহকের আমানতের খেয়ানত করিনি।

পপুলার লাইফ ইমার্জিং এশিয়া ইন্স্যুরেন্স অ্যাওয়ার্ডের ৩টি ক্যাটেগরিতে শ্রেষ্ঠ হয়েছে বলেও জানান বিএম ইউসুফ আলী।