সানফ্লাওয়ার লাইফ থেকে বীমা দাবি আদায় করেই ছাড়লেন মুলিদা

নিজস্ব প্রতিবেদক: সানফ্লাওয়ার লাইফ ইন্স্যুরেন্সের অনেক তালবাহানা আর ছলচাতুরির পরও শেষ পর্যন্ত বীমা দাবির টাকা আদায় করেই ছাড়লেন কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার বীমা গ্রাহক মৃত কাশেম আলী শেখ এর স্ত্রী ও নমিনি মুলিদা খাতুন।

আজ মঙ্গলবার শুনানি শেষে মুলিদা খাতুনকে টাকা পরিশোধের নির্দেশ দেন বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)’র বিরোধ নিষ্পত্তি কমিটি। মুলিদা খাতুন বিরোধ নিষ্পত্তি কমিটিতে অভিযোগ করেন ২০১৭ সালের আগস্টে। মুলিদা খাতুনকে বীমা দাবি আদায়ে আইনি সহায়তা দেন ইন্স্যুরেন্স কনসালটেন্ট বিডি। সংশ্লিষ্ট গ্রাহক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

মুলিদার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বীমা গ্রাহক কাশেম আলীর মৃত্যুর পর বীমা দাবি উত্থাপন করা হলে প্রস্তাবপত্রে অনিয়মের অভিযোগ এনে দাবিটি নাকচ করে দেয় বেসরকারি বীমা কোম্পানি সানফ্লাওয়ার লাইফ।

পরে স্বামীর মৃত্যুদাবি পরিশোধ করার আদেশ চেয়ে আইডিআরএ’র বিরোধ নিষ্পত্তি কমিটিতে মামলা করেন মুলিদা খাতুন। একইসঙ্গে অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ এনে সানফ্লাওয়ার লাইফ ইন্স্যুরেন্সের লাইসেন্স বাতিল এবং এর সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের আইনের আওতায় আনার প্রার্থনা করা হয় ওই অভিযোগে।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কাশেম আলী শেখ সানফ্লাওয়ার লাইফ ইন্স্যুরেন্সে একটি পলিসি করেন। পলিসি নম্বর ৪৯০০১৭২৮-২, যার মোট বীমা অংক ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। স্বামীর করা এ বীমা পলিসিতে নমিনি করা হয় মুলিদা খাতুনকে।

এরপর বীমা কোম্পানি থেকে ২০১৩ সালের ৩০ মে স্বাক্ষরিত পাকা ফার্স্ট প্রিমিয়াম রিসিপ্ট (এফপিআর) দেয়া হয়। ওই রশিদে লিখিত তথ্য অনুসারে পলিসি শুরুর (কমেন্সমেন্ট) তারিখ ১২ মে ২০১৩ এবং ঝুঁকি গ্রহণের তারিখ ১২ মে ২০১৩।

এদিকে ২০১৩ সালের ১ জুন আকষ্মিকভাবে মৃত্যু বরণ করেন বীমা গ্রাহক কাশেম আলী শেখ। এরপর সানফ্লাওয়ার লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির কাছে বীমা দাবি উত্থাপন করেন মুলিদা। কিন্তু অনেক দিন হয়ে গেলেও দাবিটি পরিশোধে কোন পদক্ষেপ নেয়নি বীমা কোম্পানিটি।

এরপর স্বামীর মৃত্যু দাবির পাওনা টাকা চেয়ে বীমা কোম্পানিটির প্রধান কার্যালয়ে আবারও দরখাস্ত করেন মুলিদা। তবে বীমা কোম্পানিটির দেয়া পাকা কাগজপত্রে সবগুলো তারিখ ঠিকমতো থাকার পরও “কে কারা অসাধু উপায়ে আগের তারিখ দেখিয়ে পলিসিটি করা হয়েছে” বলে অভিযোগ তুলে দাবিটি প্রত্যাখ্যান করে সানফ্লাওয়ার লাইফ।

এ অবস্থায় ন্যায্য বীমা দাবি পেতে নিয়ন্ত্রক সংস্থার বিরোধ নিষ্পত্তি কমিটিতে অভিযোগ করেন মুলিদা খাতুন। একই সঙ্গে পলিসির তারিখ পরিবর্তন করে গ্রাহকের টাকা মেরে দেয়ার মতো ঘৃণ্য কাজে জড়িত কোম্পানিটি ও কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা চাওয়া হয় ওই অভিযোগ পত্রে।

এ বিষয়ে মুলিদা খাতুনের সঙ্গে আলাপ হলে তিনি ইন্স্যুরেন্সনিউজবিডি’কে বলেন, আমি আজ অত্যন্ত খুশি। দীর্ঘদিন ভোগান্তির পর অবশেষে ইন্স্যুরেন্স কনসালটেন্ট বিডি’র সহায়তায় বীমা দাবিটি পাচ্ছি। এ জন্য ইন্স্যুরেন্স কনসালটেন্ট বিডি’র কাছে আমি কৃতজ্ঞ। ন্যায় বিচার করার জন্য আমি বীমা কর্তৃপক্ষকেও ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

তবে আমি চাই, আর কোন বীমা গ্রাহককে যেন আমার মতো ভোগান্তির শিকার হতে না হয়। এ জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে আমার জোর দাবি থাকবে, তারা যেন বীমা গ্রাহকের স্বার্থ রক্ষায় যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করেন, যুক্ত করেন মুলিদা খাতুন।