ফারইষ্ট ইসলামী লাইফ কার্যালয় ঘেরাও
নিজস্ব প্রতিবেদক: ফারইষ্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কার্যালয় ঘেরাও করেছে চাকরিচ্যুত গাড়ি চালকরা। দাবি মানতে তারা কোম্পানিটিকে ১৫ দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীতে বিক্ষোভ মিছিল শেষে কোম্পানিটির প্রধান কার্যালয় ঘেরাও করে এ আল্টিমেটাম দেয় আন্দোলনকারীরা।
জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের নেতৃত্বে বেলা পৌনে ১২টায় বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে ফারইষ্ট ইসলামী লাইফের চাকরিচ্যুত গাড়ি চালকরা। মিছিলটি ফারইষ্ট টাওয়ারের পাশ থেকে শুরু হয়ে পল্টন মোড় ঘুরে প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশে পরিণত হয়। সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে বীমা কোম্পানিটির প্রধান কার্যালয় ঘেরাও করে আন্দোলনকারীরা।
এদিকে চাকরিচ্যুত গাড়ি চালকদের বিক্ষোভ মিছিল শুরু হতেই ফারইষ্ট টাওয়ারের প্রধান ফটক বন্ধ করে সতর্ক অবস্থান নেয় বীমা কোম্পানি কর্তৃপক্ষ। প্রধান ফটকের নিরাপত্তা আরো জোরদার করা হয়। একইসঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও সতর্ক অবস্থান নেয় ফারইষ্ট ইসলামী লাইফ কার্যালয়ের সামনে।
বেলা সাড়ে ১২টার দিকে ফারইষ্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির প্রধান কার্যালয় ঘেরাও করে আন্দোলনরত শ্রমিকরা। এসময় শ্রমিকদের দাবি-দাওয়া মেনে নিতে ১৫ দিনের আল্টিমেটাম ঘোষণা করেন জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আমিরুল হক আমিন। পরে শ্রমিকদের দাবি সম্বলিত স্মারকলিপিটি কোম্পানি কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়।
এরআগে প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশে বক্তারা জানান, বেআইনিভাবে চাকরিচ্যুতির বিষয়ে গত ৮ জুলাই বিক্ষোভ মিছিলসহ কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও শ্রম মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোম্পানি কর্তৃপক্ষ কোন সমাধান করেনি, এমনকি তারা শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনাও করেনি। যা বাংলাদেশ শ্রম আইন ও সংবিধানের পরিপন্থি।
চাকরিচ্যুত শ্রমিকরা বলেন, আমরা দীর্ঘ দিন ধরে কোম্পানির গাড়ি চালিয়ে আসছিলাম। অনেকে ১৬ বছরের বেশি সময় ধরে চাকরি করেছেন। কিন্তু তাদের কাউকেই স্থায়ী করা হয়নি। বরং দু'দফায় ২৯৬ জন চালককে চাকরিচ্যুত করেছে ফারইষ্ট কর্তৃপক্ষ। গত ১০ জুলাই ফারইষ্ট লাইফ কর্তৃপক্ষ এক সার্কুলারে ১২ হাজার টাকা বেতনের ঘোষণা দিয়েছে। যা আমাদের পক্ষে মানা কোনভাবেই সম্ভব না।
শ্রমিক নেতারা বলেন, যেকোন কোম্পানির নিজস্ব আইন থাকতে পারে। তবে তা দেশের প্রচলিত শ্রম আইন, আইএলও কনভেনশন ও সংবিধান পরিপন্থি হতে পারে না। তাই শ্রম আইন মেনে চাকরিচ্যুত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ প্রদান করতে হবে অথবা পুনর্বহাল করতে হবে।
উল্লেখ্য, ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় প্রায় ৩৫০ জন গাড়ি চালক ফারইষ্ট ইসলামী লাইফে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছে। তবে গত ১ জুলাই বেতন-ভাতা ও ক্ষতিপূরণ ছাড়াই ১১৮ জন গাড়ি চালককে চাকরিচ্যুত করে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ। এর আগেও ২০১৭ সালের নভেম্বরে একইভাবে প্রায় ১৭৮ জন গাড়ি চালককে চাকরিচ্যুত করে ফারইষ্ট ইসলামী লাইফ।