বিআইএ'র জাতীয় শোক দিবস পালন

বঙ্গবন্ধু হত্যার নেপথ্যদের বিচার দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যার নেপথ্য নায়কদের বিচারের দাবি জানিয়েছে বীমা মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স এসোসিয়েশন (বিআইএ) । জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে এক আলোচনা ও দোয়া অনুষ্ঠান আয়োজন করে সংগঠনটি।

এ অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু হত্যার নেপথ্যদের চিহ্নিত করে তাদের বিচার দাবি করেন বক্তারা। আজ মঙ্গলবার রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরে এ আলোচনা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন বিআইএ'র প্রেসিডেন্ট শেখ কবির হোসেন।

জাতীয় শোক দিবসের এ আলোচনা অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

বিআইএ প্রেসিডেন্ট শেখ কবির হোসেন বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করা হয়েছে। কিন্তু এই হত্যার পেছনে যারা ছিলেন তাদের বিচার হয়নি। এখন তাদেরকে বের করে বিচার করতে হবে। মৃত্য ব্যক্তির বিচার হয় না, তবে আইন সংশোধন করে হলেও তাদের বিচার করতে হবে। প্রয়োজনে রায় কার্যকর হবে না, তবে বিচার হবে। সে দেশি হোক বা বিদেশি হোক আমাদের জানতে হবে এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে কারা ছিল।

শেখ কবির হোসেন বলেন, আমরা এমনিতেই জানি মুশতাক, জিয়া, তাহের এরা সব খুনি। কিন্তু আসলে অফিসিয়ালি এটা জানা দরকার। সাধারণ নাগরিকরা এটা জানতে চায় বঙ্গবন্ধু হত্যার পেছনে কারা ছিল, এই ষড়যন্ত্রের পেছনে কারা ছিল। পুরো ষড়যন্ত্রটা প্রকাশ করা দরকার। এতে করে ভবিষ্যতে আর কেউ এ ধরণের কাজ করবে না। এর বংশধরেরা জানবে যে, আমরা খুনী। অতএব বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বের করা খুবই দরকার ।  

বাঙালিদের প্রতি বঙ্গবন্ধুর ভালোবাসার কথা তুলে ধরে শেখ কবির হোসেন বলেন, বাঙালিকে তিনি কত ভালোবাসতেন। কিন্তু সেই বাঙালিই তাকে মেরে ফেলল। কিভাবে মেরে ফেলল! কিন্তু আমি বলি যে, বাঙালিরা তাকে মারেনি। তাকে মেরেছে পাকিস্তানি প্রেতাত্মারা বা সিআইএ'র প্রেতাত্মারা। বাংলাদেশ তো ছোট্ট একটা দেশ, সেদিন স্বাধীন হয়েছে। তাহলে সেই দেশের নেতাকে সিআইএ মারতে গেল কেন।

তিনি বলেন, সিআইএ অর্থাৎ সাম্রাজ্যবাদী আমেরিকা ভয় পেয়েছিল বঙ্গবন্ধুর কণ্ঠকে। কারণ বঙ্গবন্ধু তখন কিন্তু শুধু বাংলার নেতা ছিলেন না। তিনি অলরেডি বিশ্বের শোষিত মানুষের অর্থাৎ যারা নিপীড়িত, অবহেলিত, লাঞ্ছ্বিত, দরিদ্র জনগোষ্ঠির নেতা বজ্রকণ্ঠ হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। যার জন্য সিআইএ তাকে ভয় পেয়েছিল। ভয় পেয়ে এই বিশ্ব সাম্রাজ্যবাদ তাকে মারার এই প্রক্রিয়া গ্রহণ করেছিল।

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে দূরদর্শী নেতা হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু মাত্র তিন বছরে একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে যে অবস্থায় নিয়ে গিয়েছিলেন, পৃথিবীর কোনো রাষ্ট্রনায়ক তা পারেননি। একটি দেশের কাঠামো তৈরিতে যা প্রয়োজন তার সবই তিনি তৈরি করে গেছেন।

খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করার জন্য শেখ হাসিনা আত্মনিয়োগ করেছেন। তিনি একমাত্র রাষ্ট্রনায়ক যিনি দিনক্ষণ নির্ধারণ করে উন্নয়নের দিকে নিয়ে যাচ্ছেন। ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত দেশ গঠনে যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছি ২০২১ সালের আগে আমরা কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারব।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, রেলমন্ত্রী মো. মুজিবুল হক, বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)'র চেয়ারম্যান মো. শফিকুর রহমান পাটোয়ারী, সাবেক চীফ হুইপ উপাধ্যক্ষ মো. আব্দুস শহীদ এমপি, ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্সের সাবেক চেয়ারম্যান ও পরিচালক মোজাফফর হোসেন পল্টু।

এছাড়া বঙ্গবন্ধুর ওপর বিশেষ নিবন্ধ উপস্থাপন করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন বিআইএ'র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও নিটল ইন্স্যুরেন্সের চেয়ারম্যান এ কে এম মনিরুল হক।