করোনাকালে সম্পদ কমেছে ২৩ বীমা কোম্পানির
নিজস্ব প্রতিবেদক: করোনা মহামারীর মধ্যে চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে দেশের সরকারি বেসরকারি ৭৮ লাইফ ও নন-লাইফ বীমা কোম্পানির মধ্যে ২৩টি সম্পদ কমে গেছে। আর বাকী ৫৫টি বীমা কোম্পানির সম্পদে প্রবৃদ্ধি দেখা দিয়েছে। সম্পদ কমে যাওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ১৬টি লাইফ বীমার এবং ৭টি নন-লাইফ খাতের। বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ এ তথ্য প্রকাশ করেছে।
বর্তমানে দেশের লাইফ ও নন-লাইফ বীমাখাতে মোট সম্পদের পরিমাণ ৫৩ হাজার ৮২৪ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে লাইফ বীমা খাতের সম্পদ রয়েছে ৪১ হাজার ৪৮৭ কোটি ১৯ লাখ টাকা এবং নন-লাইফ খাতে সম্পদ ১২ হাজার ৩৩৭ কোটি ১৯ লাখ টাকা। কোম্পানিগুলোর নগদ টাকা-পয়সাসহ স্থাবর ও অস্থাবর সব কিছুই এই সম্পদের তালিকায় রয়েছে বলে জানিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।
আইডিআরএ প্রকাশিত তথ্য অনুসারে, চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকের তুলনায় দ্বিতীয় প্রান্তিকে দেশের বীমাখাতে ২৩টি কোম্পানির সম্পদে কোন প্রবদ্ধি হয়নি, উল্টো সম্পদের পরিমাণ আরো কমে গেছে। নন-লাইফ খাতের এসব কোম্পানি হলো- অগ্রণী ইন্স্যুরেন্স, দেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, গ্রীন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্স, সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্স, ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স, রূপালী ইন্স্যুরেন্স এবং স্ট্যান্ডার্ড ইন্স্যুরেন্স।
সম্পদ কমে যাওয়া লাইফ বীমা কোম্পানিগুলো হলো- পদ্মা ইসলামী লাইফ, গার্ডিয়ান লাইফ, ট্রাস্ট ইসলামী লাইফ, যমুনা লাইফ, প্রটেক্টিভ ইসলামী লাইফ, পপুলার লাইফ, বেস্ট লাইফ, ফারইস্ট ইসলামী লাইফ, ডেল্টা লাইফ, এনআরবি গ্লোবাল লাইফ, স্বদেশ লাইফ, আলফা ইসলামী লাইফ, প্রোগ্রেসিভ লাইফ, সানফ্লাওয়ার লাইফ, ডায়মন্ট লাইফ ও প্রাইম ইসলামী লাইফ।
তথ্য অনুসারে, ২০২০ সালের প্রথম প্রান্তিক শেষে পদ্মা ইসলামী লাইফের সম্পদ ছিল ২১০ কোটি ২২ লাখ টাকা। তবে দ্বিতীয় প্রান্তিক শেষে এই সম্পদ দাঁড়িয়েছে ১৯৯ কোটি ২ লাখ টাকা। অর্থাৎ ১১ কোটি ২০ লাখ টাকা বা ৫.৩৩ শতাংশ কমেছে। ৩৩৩ কোটি টাকা থেকে ১৫ কোটি ৫৪ লাখ টাক বা ৪.৬৬ শতাংশ কমে গার্ডিয়ান লাইফের বর্তমান সম্পদ দাঁড়িয়েছে ৩১৭ কোটি ৮৬ লাখ টাকা।
ট্রাস্ট ইসলামী লাইফের সম্পদ ২৬ কোটি ২৮ লাখ টাকা থেকে ৪.২৯ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ২৫ কোটি ১৫ লাখ টাকা। যমুনা লাইফের সম্পদ ২০ কোটি ৩৪ লাখ টাকা থেকে ৩.৫৮ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১৯ কোটি ৬১ লাখ টাকা। প্রটেক্টিভ ইসলামী লাইফের সম্পদ ২৫ কোটি ৩৪ লাখ টাকা থেকে ১.৭৫ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ২৪ কোটি ৯০ লাখ টাকা।
এ ছাড়াও পপুলার লাইফের সম্পদ ১.৩৬ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ১৯৮ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। বেস্ট লাইফের সম্পদ ০.৮৪ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ২৫ কোটি ৩ লাখ টাকা। ফারইস্ট ইসলামী লাইফের সম্পদ ০.৬৪ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার২৪৫ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। ডেল্টা লাইফের সম্পদ ০.৪৫ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৩১৭ কোটি ৩৬ লাখ টাকা।
একইভাবে এনআরবি গ্লোবাল লাইফের সম্পদ ০.২৩ শতাংশ কমে ১৮ কোটি ১০ লাখ টাকা, স্বদেশ লাইফের ০.২১ শতাংশ কমে ১৫ কোটি ৫ লাখ টাকা, আলফা ইসলামী লাইফের ০.১৭ শতাংশ কমে ২১ কোটি ২১ লাখ টাকা, প্রোগ্রেসিভ লাইফের ০.১২ শতাংশ কমে ৩২৭ কোটি ৮৩ লাখ টাকা, সানফ্লাওয়ার লাইফের ০.০৭ শতাংশ কমে ১০৭ কোটি টাকা, ডায়মন্ট লাইফের ০.০৬ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১৩ কোটি ৪ লাখ টাকাএবং প্রাইম ইসলামী লাইফের সম্পদ ০.০৩ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৯৯৭ কোটি ৯৪ লাখ টাকা।
অন্যদিকে ২০২০ সালের প্রথম প্রান্তিক জানুয়ারি-মার্চের তুলনায় এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে দেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের সম্পদ কমেছে ২.২৩ শতাংশ। বর্তমানে কোম্পানিটির সম্পদের পরিমাণ ৬৬ কোটি ৬১ লাখ টাকা। সর্বশেষ প্রান্তিকে গ্রীন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্সের সম্পদ কমেছে ১.৫৩ শতাংশ। বর্তমানে কোম্পানিটির সম্পদের পরিমাণ ১ হাজার ১১৮ কোটি ৮৩ লাখ টাকা।
এ ছাড়াও দ্বিতীয় প্রান্তিকে সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্সের সম্পদ ০.৪০ শতাংশ কমে ১১৬ কোটি ৩ লাখ টাকা, ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্সের সম্পদ ০.২৭ শতাংশ কমে ১০৫ কোটি ৩১ লাখ টাকা, রূপালী ইন্স্যুরেন্সের সম্পদ ০.২৫ শতাংশ কমে ২৪৫ কোটি ৩০ লাখ টাকা, স্ট্যান্ডার্ড ইন্স্যুরেন্সের সম্পদ ০.১২ শতাংশ কমে ১২৮ কোটি ৪৭ লাখ টাকা এবং অগ্রণী ইন্স্যুরেন্সের সম্পদ ৯৬.৮৬ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ২ কোটি ৬৯ লাখ টাকা।