সীমিত পরিসরে খুলছে বীমা কোম্পানির অফিস, রোববার সিদ্ধান্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক: সীমিত পরিসরে বীমা কোম্পানির অফিস খোলার সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে বীমা খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) । আগামীকাল রোববার এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র (যুগ্মসচিব) এস এম শাকিল আখতার আজ শনিবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ইন্স্যুরেন্সনিউজবিডি’কে তিনি বলেন, লকডাউনে বীমা অফিস বন্ধ থাকায় গ্রাহকরা ভোগান্তিতে পড়তে পারে এবং আইনি জটিলতা তৈরি হতে পারে। এ জন্য কোম্পানিগুলোর প্রধান কার্যালয়সহ বিভাগীয় গুরুত্বপূর্ণ অফিস সীমিত পরিসরে খোলার প্রয়োজন বলে মনে করছে কর্তৃপক্ষ। আগামীকাল রোববার বৈঠকে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

শাকিল আখতার বলেন, ২১ এপ্রিল পর্যন্ত সরকার যে লকডাউন ঘোষণা করেছে আমরা সেটা পুরোপুরি মেনে চলার চেষ্টা করবো অর্থাৎ এই সময়ে অফিস খোলা হবে না। তবে এরপর যদি লকডাউনের সময় বৃদ্ধি করা হয় তাহলে বীমা কোম্পানিগুলোর কিছু কিছু অফিস সকাল ১০টা থেকে ২টা পর্যন্ত সরকারের অনুমোদন নিয়ে খোলা রাখা হবে।

তিনি আরো বলেন, এই ৮ দিনের লকডাউনে বীমা কোম্পানির অফিস খোলা না হলেও গ্রাহকদের যাতে কোন ভোগান্তি বা আইনি জটিলতায় পড়তে না হয় সে জন্য প্রিমিয়াম জমা দেয়ার সময়সহ অন্যান্য সুবিধা বাড়ানো হবে। এমনকি গত বছরের লকডাউনে যেসব সুবিধা দেয়া হয়েছিল এবার তার চেয়ে বেশি সুবিধা রাখা হবে।

উল্লেখ্য, কোভিড-১৯ সংক্রমণ উদ্বেগজনক হারে বাড়তে থাকায় আগের নির্দেশনার ধারাবাহিকতায় ১৪ এপ্রিল ভোর ৬টা থেকে ২১ এপ্রিল মধ্যরাত পর্যন্ত এবার ১৩টি নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। সেগুলো হলো-

সকল সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিস/আর্থিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে ও সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী নিজ নিজ কর্মস্থলে অবস্থান করবেন। তবে বিমান, সমুদ্র, নৌ ও স্থলবন্দর এবং এ সংশ্লিষ্ট অফিসগুলো এ নিষেধাজ্ঞার আওতাবহির্ভূত থাকবে।

বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আদালতগুলোর জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারি করবে।

সকল প্রকার পরিবহন (সড়ক, নৌ, রেল, অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক ফ্লাইট) বন্ধ থাকবে। তবে পণ্য পরিবহন, উৎপাদন ব্যবস্থা ও জরুরি সেবাদানের ক্ষেত্রে এই আদেশ প্রযোজ্য হবে না।

শিল্প-কারখানাগুলো স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় চালু থাকবে। তবে শ্রমিকদের নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থাপনায় আনা-নেয়া নিশ্চিত করতে হবে।

আইনশৃঙ্খলা এবং জরুরি পরিষেবা, যেমন- কৃষি উপকরণ (সার, বীজ, কীটনাশক, কৃষি যন্ত্রপাতি ইত্যাদি), খাদ্যশস্য ও খাদ্যদ্রব্য পরিবহন, ত্রাণ বিতরণ, স্বাস্থ্যসেবা, কোভিড-১৯ টিকা প্রদান, বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস/জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, বন্দরগুলোর (স্থলবন্দর, নদীবন্দর ও সমুদ্রবন্দর) কার্যক্রম, টেলিফোন ও ইন্টারনেট (সরকারি-বেসরকারি), গণমাধ্যম (প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া), বেসরকারি নিরাপত্তা ব্যবস্থা, ডাক সেবাসহ অন্যান্য জরুরি ও অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অফিস, তাদের কর্মচারী ও যানবাহন এ নিষেধাজ্ঞার আওতার বাইরে থাকবে।

অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া (ঔষধ ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি ক্রয়, চিকিৎসা সেবা, মৃতদেহ দাফন/সৎকার ইত্যাদি) কোনভাবেই বাড়ির বাইরে বের হওয়া যাবে না। তবে টিকা কার্ড প্রদর্শন সাপেক্ষে টিকা গ্রহণের জন্য যাতায়াত করা যাবে।

খাবারের দোকান ও হোটেল-রেস্তোরাঁয় দুপুর ১২টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা এবং রাত ১২টা থেকে ভোরর ৬টা পর্যন্ত কেবল খাদ্য বিক্রয়/সরবরাহ (সরাসরি/অনলাইন) করা যাবে। শপিংমলসহ অন্যান্য দোকান বন্ধ থাকবে।

কাঁচাবাজার এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত উন্মুক্ত স্থানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্রয়-বিক্রয় করা যাবে। বাজার কর্তৃপক্ষ/স্থানীয় প্রশাসন বিষয়টি নিশ্চিত করবে।

বোরো ধান কাটার জরুরি প্রয়োজনে কৃষি শ্রমিক পরিবহনের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসন সমন্বয় করবে।

সারা দেশে জেলা ও মাঠ প্রশাসন উল্লিখিত নির্দেশনা বাস্তবায়নের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়মিত টহল জোরদার করবে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক তার পক্ষে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজনীয় ক্ষমতা দেবেন।

স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে জুমা ও তারাবি নামাজের জমায়েত বিষয়ে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় নির্দেশনা জারি করবে।

এসব নির্দেশনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগ প্রয়োজনে সম্পূরক নির্দেশনা জারি করতে পারবে।