বশির আহমেদকে জনতা ইন্স্যুরেন্স থেকে অপসারণ, অন্য কোম্পানির চাকরিতেও নিষেধাজ্ঞা

নিজস্ব প্রতিবেদক: জনতা ইন্স্যুরেন্সের মুখ্য নির্বাহী প্রার্থী বশির আহমেদের নিয়োগ আবেদন নাকচ এবং কোম্পানিটির চাকরি থেকে অপসারণ করেছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) । কর্তৃপক্ষের নির্দেশ লঙ্ঘন এবং নিয়োগ আবেদনে মিথ্যা তথ্য প্রদান করায় আজ বুধবার (২৯ সেপ্টেম্বর) এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে আইডিআরএ।

একইসঙ্গে বীমা খাতে শৃঙ্খলা নিশ্চিতকরণের বৃহত্তর স্বার্থে অন্য বীমা কোম্পানিতেও বশির আহমেদকে নিয়োগ না দিতে সকল নন-লাইফ বীমা প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যানকে অনুরোধ জানিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। এ সংক্রান্ত একটি চিঠি জনতা ইন্স্যুরেন্স ও বশির আহমেদসহ সকল নন-লাইফ বীমা কোম্পানি, বিআইএ এবং বিআইএফ’কে পাঠিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

চিঠিতে বলা হয়েছে, আবেদনপত্রের সাথে যেসকল দলিলাদি/তথ্যাদি প্রেরণ করা হয়েছে তা পর্যালোচনা করে প্রস্তাবিত মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মো. বশির আহমেদের প্রয়োজনীয় কর্ম অভিজ্ঞতা না থাকায় মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়োগ ও অপসারণ প্রবিধানমালা, ২০১২ অনুযায়ী প্রস্তাবিত মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তার নিয়োগ অনুমোদনের প্রস্তাব নাকচ করা হলো।

ইতোমধ্যে  মো. বশির আহমেদের বিরুদ্ধে উথাপিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে (নন-লাইফ বীমা খাতে কমিশন সংক্রান্ত শৃঙ্খলা আনয়নের বিষয়ে কর্তৃপক্ষের জারিকৃত সার্কুলার নং নন-লাইফ ৬৪/২০১৯ এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন এবং কর্তৃপক্ষে মিথ্যা তথ্য দাখিল ইত্যাদি) কর্তৃপক্ষ কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে অভিযোগসমূহের সত্যতা পাওয়ায় বীমা আইন ২০১০ এর ৫০ ধারা মোতাবেক ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২১ তারিখ হতে মো. বশির আহমেদকে কোম্পানির চাকরি থেকেও অপসারণ করা হলো।

বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের ওই চিঠিতে আরো বলা হয়েছে, বীমা আইন ২০১০ এবং বীমা কোম্পানি (মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়োগ ও অপসারণ) প্রবিধানমালা, ২০১২ অনুসরণপূর্বক যাবতীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে একজন দক্ষ ও যোগ্য মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা জরুরি ভিত্তিতে নিয়োগ করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।

বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তের আগে কর্তৃপক্ষের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের বিষয়ে জনতা ইন্স্যুরেন্সের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (চলতি দায়িত্ব) মো. বশির আহমেদ ইন্স্যুরেন্স নিউজ বিডি’কে জানিয়েছিলেন, ওগুলোর সবই তারা সঠিক পাইছে এটাই আমাদেরকে জানাইছে এবং পরবর্তী যা করার তারা করবে।

উল্লেখ্য, গত ১২ আগস্ট ‘আমার ভাই পুলিশ কমিশনার’ বলে হুমকি দিলেন জনতা ইন্স্যুরেন্সের মুখ্য নির্বাহী প্রার্থী- শীর্ষক সংবাদ প্রকাশ করে ইন্স্যুরেন্স নিউজ বিডি। ওই সংবাদে বশির আহমেদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত মূখ্য নির্বাহী পদে নিয়োগ অনুমোদনের আবেদনে ভুয়া ও মিথ্যা তথ্য দেয়ার অভিযোগ এবং আইডিআরএ’র তদন্তের বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে এই প্রতিবেদককে হুমকীর সুরে যেসব কথা বলেন তা তুলে ধরা হয়।

এরপর গত ২৭ সেপ্টেম্বর ‘সিইও পদে নিয়োগ পেতে মিথ্যা তথ্য দিয়েছে বশির আহমেদ: সতর্ক করার সুপারিশ তদন্ত কমিটির, আইনে শাস্তি ৩ বছর কারাদণ্ড শীর্ষক আরেকটি সংবাদ প্রকাশ করে ইন্স্যুরেন্স নিউজ বিডি। এতে জনতা ইন্স্যুরেন্সের মুখ্য নির্বাহীর অনুমোদন পেতে বশির আহমেদের দেয়া মিথ্যা তথ্যের শাস্তি হিসেবে তাকে সতর্ক করতে আইডিআরএ’র তদন্ত কমিটির সুপারিশ এবং বীমা আইনে নির্ধারিত মিথ্যা তথ্য প্রদানের শাস্তির বিষয়টি উল্লেখ করা হয়।